ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দাম পেয়ে কৃষকও খুশি

লালমনিরহাটে আমন ধানের বাম্পার ফলন

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২৫ নভেম্বর ২০১৬

লালমনিরহাটে আমন ধানের বাম্পার ফলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট, ২৪ নবেম্বর ॥ লালমনিরহাটে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কাঁচা ধান আটশ’ টাকা মণে বাজারে বিক্রয় হচ্ছে। নতুন ধানের দাম পেয়ে কৃষক দারুণ খুশি। গ্রামে গ্রামে তাই নবান্নের আনন্দ বইছে। নতুন ধান ঘরে তুলতে দিন রাতকৃষক কৃষাণীর দম ফেলার সময় নেই। ব্যস্ত সময় পার করছে। কৃষিভিত্তিক শ্রমের বাজারেও চাঙ্গাভাব সৃষ্টি হয়েছে। তাই উত্তরাঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব সৃষ্টি হয়েছে। আমন ধান মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টি হয়ে ছিল। ফলে তিস্তা ও ধরলা নদীতে আকস্মিক কয়েক দফা বন্যা হয়। রোপা আমন ধানের চারা কৃষককে কোথাও কোথাও দুই তিন বার রোপণ করতে হয়ে ছিল। লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাব মতে এই জেলায় এ বছর ৮২ হাজার ১১২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরও কৃষক ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ করে। ধান চাষ হয় মূলত ৮৪ হাজার ৯৪৮ হেক্টর জমিতে। কৃষি অফিস সম্ভাব্য ফলন ধরে ছিল দুই লাখ ২৪ হাজার ২১৭ মে. টন চাল। কিন্তু বাস্তবে উৎপাদন হয়েছে দুই লাখ ২৯ হাজর একশ’ মে. টন চাল। লালমনিরহাটের কৃষক গত কয়েকবার ধান উৎপাদন করে ধানের প্রকৃত মূল্য হতে বঞ্চিত হয়ে আসছিল। এবার তার উল্টো হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই কাঁচা ধান প্রতিমণ আটশ’ টাকা দরে বাজারে বিক্রয় হয়েছে। ধান বিক্রয়ের অর্থ দিয়ে কৃষকের উৎপাদন খরচ তুলে হাতে মুনাফাও থাকছে। মৌসুমের শুরুতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় থাকলেও পরে আমন ধান চাষে অনুকূল পরিবেশ ছিল। তাই লালমনিরহাটে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। রাস্তাঘাট, কৃষকের উঠানে শুধুই সোনা রঙা ধান আর ধান। ধানের বাম্পার ফলনের পর এখন কৃষক মনোযোগ দিয়েছে রবিশস্যের ওপর। ধান বিক্রির অর্থ দিয়ে নিজের ও পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা মিটিয়ে রবি ফসল ক্ষেত তৈরিতে মনোযোগ দিয়েছে। কৃষকরা আশা করছেন রবিশস্য শীতের সবজি, আলু, ভুট্টা, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, মূলা, সিম, বটবটি, গাজর, ফুলকফি, বাঁধাকফিসহ নানা রবিশস্যও বাম্পার ফলন হবে। এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে সার, কীটনাশক ও ভালমানের বীজ বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছিল বলে কৃষক খুব সহজেই চাহিদামতো কৃষি উপকরণ পেয়েছে। কৃষকের প্রতি সরকারের ছিল সজাগ দৃষ্টি। এবারে চরাঞ্চলেও ব্যাপক ধান চাষ হয়েছে। হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, চরাঞ্চলে লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষক ব্যাপক হাতে ধান চাষ করেছে।
×