ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ডেঞ্জারাস ডিলেইস অন ওয়ার্কার সেফটি শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্য

শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা ভাবে না আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ২৫ নভেম্বর ২০১৬

শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা ভাবে না আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে কাজ করছেন যে শ্রমিকরা তাদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভাবছে না আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। কেবল ওয়ালমার্ট আর গ্যাপের জন্য পোশাক তৈরিকারী কারাখানাগুলোতে ১,৭৫,০০০ শ্রমিক কাজ করছেন প্রয়োজনীয় ফায়ার এক্সিট ব্যবস্থা ছাড়াই। শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ৪টি আন্তর্জাতিক সংগঠনের স্বতন্ত্র ধারার এক সমন্বিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারখানা সংস্কারে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক প্রয়োজনীয় অর্থ দিচ্ছে না ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এ কারণে কারখানা মালিকদের প্রয়োজনীয় সংস্কারের তাগিদও দিতে পারছেন না তারা। সবমিলে ওই প্রতিবেদনের ফলাফলে বলা হয়েছে, যথাযথ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করে শ্রমিকদের সুরক্ষার প্রশ্নটি উপেক্ষা করে কাজের ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে কারখানাগুলোকে। রানা প্লাজা ভবন ধসের পর পোশাক কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা ও যথাযথ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে এইচএন্ডএমের নেতৃত্বে এবং আদিদাস, বেনেটন, মার্কস এ্যান্ড স্পেনসার, টেসকোসহ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় একটি জোট গঠিত হয়। এ্যাকর্ড অন ফায়ার এ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ নামের ওই জোটে অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকৃতি জানায় গ্যাপ, টার্গেট এবং ওয়ালমার্টের মতো আন্তর্জাতিক খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের পক্ষ থেকে বিকল্প হিসেবে এ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি নামের সংগঠনটি গড়ে তোলা হয়। সোমবার (২১ নবেম্বর) ওই দুই জোটভুক্ত সংগঠনে থাকা ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধীনে কাজ করে, এমন ১৭৫টি কোম্পানির ওপর জরিপ চালিয়ে ‘ডেঞ্জারাস ডিলেইস অন ওয়ার্কার সেফটি’ নামের স্বতন্ত্র প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনেই এ্যালায়েন্স জোটকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে অপর জোট এ্যাকর্ডের কারখানাগুলো সম্পর্কে কোন নেতিবাচক ফলাফল ওই গবেষণায় উঠে আসেনি। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার বাংলাদেশের কারখানার পরিবেশ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল লেবার রাইটস ফোরাম, দ্য ওয়ার্কার রাইটস কনসোর্টিয়াম, দ্য ক্লিন ক্লোথস ক্যাম্পেন এবং ম্যাকিলা সলিডারিটি নেটওয়ার্ক সমন্বিতভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, এ্যালায়েন্স যে কারখানাগুলো পরিদর্শন করছিল সেগুলো নিজস্ব ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে কর্মপরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আনতে ব্যর্থ হয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওয়ালমার্টের ৬২টি কারখানায় ১,২০,০০০ শ্রমিক প্রয়োজনীয় ফায়ার এক্সিট ছাড়াই কাজ করছে। একইভাবে গ্যাপের জন্য পোশাক তৈরিকারী ৫৫,০০০ শ্রমিক কাজ করেন প্রয়োজনীয় ফায়ার এক্সিট ছাড়াই। প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ্যালায়েন্স ভোটভুক্ত ৫২ শতাংশ কারখানায় টেকসই ফায়ার এক্সিট ব্যবস্থার ঘাটতি রয়েছে। ৬২ শতাংশ কারখানা ফায়ার এ্যালার্ম ব্যবস্থা যথাযথভাবে কাজ করে না এবং ৪৭ শতাংশের বড় ধরনের এবং অসংশোধিত কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। ওই জরিপ প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান আরও জানায়, সংস্কার আনার ক্ষেত্রে কারখানাগুলোর সময়সীমা পরিবর্তন করে দেয়া হচ্ছে।
×