ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিময় করা হবে উত্তর কোরিয়া সম্পর্কিত গোপন সামরিক তথ্য

সিউল-টোকিও গোয়েন্দা চুক্তি স্বাক্ষর

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ২৫ নভেম্বর ২০১৬

সিউল-টোকিও গোয়েন্দা চুক্তি স্বাক্ষর

জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবিধি সম্পর্কিত তথ্যের মতো সামরিক তথ্য সরাসরি বিনিময় করতে বুধবার সিউলে এক বিতর্কিত চুক্তি সই করেছে। সিউলে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার কর্মীদের পতিবাদ সত্ত্বেও চুক্তিটি সই করা হলো। এতে পিয়ংইয়ংয়ের সক্রিয় অস্ত্র কর্মসূচী নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগই প্রতিফলিত হলো। খবর এএফপি ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, পিয়ংইয়ংয়ের ক্রমবর্ধমান সামরিক হুমকির মুখে চুক্তিটি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। পিয়ংইয়ং চলতি বছর দুটি পরমাণু পরীক্ষা এবং ২০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর কোরিয়া যে কোন সময় আরও পরমাণু পরীক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে প্রস্তুত রয়েছে। এতে বলা হয়, যেহেতু আমরা এখন উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি কার্যকরভাবে মোকাবেলা করতে জাপানের গোয়েন্দা সামর্থ্যকে কাজে লাগাতে পারি, সেহেতু চুক্তিটি আমাদের নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা করবে। সিউল-টোকিও বর্তমানে পিয়ংইয়ং সম্পর্কে সামরিক তথ্য বিনিময়ের জন্য ওয়াশিংটনকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজে লাগিয়ে থাকে। ২০১৪ সালে স্বাক্ষরিত এক চুক্তির আওতায় তা করা হয়ে থাকে। নতুন চুক্তির ফলে এখন থেকে তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন হবে না। কোরীয় উপদ্বীপ ১৯১০-১৯৪৫ সালে জাপানের উপনিবেশ থাকাকালে জাপানী নির্যাতনের স্মৃতি এখনও কোরীয়দের মনে জাগরুক থাকায় সিউল ও টোকিও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধার মুখে পড়ছে। একই কারণে নতুন চুক্তিটি দক্ষিণ কোরিয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সেখানে জাপান বিরোধী অনুভূতি প্রবল। টোকিও কখনও ঔপনিবেশিক আমলের নির্যাতনের জন্য ক্ষমা চায়নি বলে দক্ষিণ কোরীয়রা মনে করে। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের ২০১২ সালের জুন মাসে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় চুক্তিটি সই করার কথা ছিল। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের এক ঘণ্টারও কম সময় আগে সিউল-টোকিওর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের প্রতি অভ্যন্তরীণ বিরোধিতার কারণে অনুষ্ঠান থেকে সরে দাঁড়ায়। টোকিওর গোয়েন্দা সাজসরঞ্জাম ও ভৌগোলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় বলেছে, চুক্তিটি পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী আরও ভালভাবে বিশ্লেষণ করতে এবং এর সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সম্পর্কে আরও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে বড় রকমের সহায়কা হবে। উত্তর কোরিয়া এর আগেই সামরিক চুক্তিটির সমালোচনা করে। দেশটি চুক্তিটিকে এক ‘বিপজ্জনক কাজ’ বলে অভিহিত করে। এটি কোরীয় উপদ্বীপে আরও উত্তেজনা ডেকে আনবে এবং জাপানের ‘নতুন আক্রমণের’ পথ খুলে দেবে বলে পিয়ংইয়ংয়ের মন্তব্য করে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধী দলগুলো মানবাধিকার কর্মীরা চুক্তিটির তীব্র বিরোধিতা করেন। দেশের প্রধান বিরোধী দল চুক্তিটিকে ‘অদেশপ্রেমিক ও অমর্যাদাকর’ বলে অভিহিত করে। এটি আইনে পরিণত করতে হলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান মিন কুকে ইমপিচ করা হবে বলে দলটি হুমকি দিয়েছে।
×