ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এএইচএফ কাপ হকিতে গ্রুপসেরা বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৪ নভেম্বর ২০১৬

এএইচএফ কাপ হকিতে গ্রুপসেরা বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ চারে খেলা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। বাকি ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা। সেটা নিশ্চিত করতে বুধবার ‘এএইচএফ’ কাপ হকি প্রতিযোগিতায় নিজেদের শেষ গ্রুপ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট বাংলাদেশ। যেখানে ড্র হলেই গ্রুপসেরা হওয়া নিশ্চিত ছিল, সেখানে তারা গোলবন্যায় শোচনীয়ভাবে বিধ্বস্ত করে প্রতিপক্ষ ম্যাকাওকে। হংকংয়ের কিংস পার্ক হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটির স্কোরলাইন ছিল ১৩-০! খেলার প্রথমার্ধে বিজয়ী দল এগিয়ে ছিল ৬-০ গোলে। বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ছিলেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি একাই করেন হ্যাটট্রিকসহ পাঁচ গোল। এর আগে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ যথাক্রমে হারায় স্বাগতিক হংকং এবং চাইনিজ তাইপেকে। দুই খেলাতেই বাংলাদেশ জেতে ৪-২ গোলে। গ্রুপে ৩ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৯। এই জয়ে গ্রুপ চাম্পিয়ন হলো তারা। সমান ম্যাচে ম্যাকাওয়ের পয়েন্টের ভা-ার শূন্য। কোন খেলাতেই জয়ের দেখা পায়নি তারা। শেষ চারে বাংলাদেশ খেলবে স্থান নির্ধারণী (প্রথম-চতুর্থ) ম্যাচে ‘বি’ গ্রুপের শ্রীলঙ্কা এবং সিঙ্গাপুরের মধ্যে যে কোন একটি দলের সঙ্গে, আগামী ২৬ নবেম্বর। বুধবারের খেলায় দ্বিতীয় মিনিটেই গোলের সন্ধান পায় বাংলাদেশ। পেনাল্টি কর্নার (পিসি) থেকে আশরাফুল দলকে এগিয়ে নেন (১-০)। আট মিনিট পর আবারও পিসি থেকে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি (২-০)। ১১ মিনিটে আবারও গোল করেন আশরাফুল। সেই সঙ্গে পূরণ করে ফেলেন হ্যাটট্রিকও। তবে এবারের গোলটি করেন পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে (৩-০)। এরপর ১৯, ২৩ ও ৩৫ মিনিটে পরপর তিনটি ফিল্ড গোল করলে ৬-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। গোলদাতা ছিলেন যথাক্রমে রোমান সরকার, সারোয়ার হোসেন এবং হাসান যুবায়ের নিলয়। দ্বিতীয়ার্ধে আরও গোলের জন্য বেশি ক্ষুধার্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। ৪০ ও ৫৮ মিনিটে আবারও পিসি পায় বাংলাদেশ এবং দুটো থেকেই গোল করেন যথারীতি আবারও সেই আশরাফুলই। ৮-০তে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৬১ মিনিটে সারোয়ার পিসি থেকে গোল করে পদাঙ্ক অনুসরণ করেন আশরাফুলের (৯-০)। পরের মিনিটেই ফিল্ড গোল করে ব্যবধান ১০-০তে নিয়ে যান রোমান। পরের মিনিটেই আবারও পিসি থেকে গোল করেন সারোয়ার (১১-০)। পুরো ম্যাচে বাংলাদেশের ক্রমাগত আক্রমণে নাজেহাল হয় ম্যাকাও। ম্যাচ সমাপ্ত হবার শেষ ২ মিনিটেও আরও দুই গোল হজম করে তারা। এবার গোল করেন ৬৯ মিনিটে মাইনুল ইসলাম কৌশিক (ফিল্ড গোল) এবং ৭০+ মিনিটে খোরশেদুর রহমান (পিসি গোল)। শেষ পর্যন্ত ১৩-০ গোলে ম্যাচ জিতে তৃপ্তি নিয়ে টার্ফ ছাড়ে লাল-সবুজের বাংলাদেশ। ‘এ’ গ্রুপে চার দলের মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল বাংলাদেশই। কেননা টানা দুই ম্যাচ জিতে তারা আগেই নিশ্চিত করে শেষ চারে খেলা। তাদের লক্ষ্য ছিল গ্রুপসেরা হওয়া। সেক্ষেত্রে ম্যাকাওকে না হারালেও চলতো তাদের। অর্থাৎ ন্যূনতম ড্র করলেই হতো। কিন্তু ড্র নয়, বিশাল ব্যবধানে জিতেই যায় বাংলাদেশ। অথচ ম্যাকাওয়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কোচ অলিভার কার্টজ টার্ফেই নামাননি দলের অধিনায়ক-ফরোয়ার্ড রাসেল মাহমুদ জিমিকে। অথচ তাকে ছাড়াই হেসে-খেলে বড় ব্যবধানে জয় কুড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ দল। যদিও হংকং-চাইনিজ তাইপের তুলনায় তুলনামূলক দুর্বল দল ছিল ম্যাকাও। ফলে এই ম্যাচে বাংলাদেশ দল খেলতে নামে অনেকটা চাপমুক্ত ও নির্ভার হয়ে। এ পর্যন্ত গ্রুপের তিন খেলায় বাংলাদেশ মোট গোল করেছে ২১টি, হজম করেছে ৪টি। সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন আশরাফুল ইসলাম ৬টি। এশিয়া কাপ হকির মূলপর্বের টিকেট পাওয়ার লক্ষ্যেই এ টুর্নামেন্ট খেলতে গেছে বাংলাদেশ। সেরা হতে পারলে এশিয়ান হকির শ্রেষ্ঠত্বের আসরে খেলতে পারবেন জিমিরা। বাছাইপর্বের এ আসরে বাংলাদেশের রেকর্ড বেশ ভাল। ২০০৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সবশেষ ২০১২ সালেও শিরোপার স্বাদ পায় তারা। এবারও নিজেদের গ্রুপে ফেভারিট হিসেবে খেলছে অলিভার কার্টজের দল।
×