ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে ডিজিটাল তথ্য সেবায় পাল্টে গেছে কৃষি চিত্র

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৪ নভেম্বর ২০১৬

শেরপুরে ডিজিটাল তথ্য সেবায় পাল্টে গেছে কৃষি চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ২৩ নবেম্বর ॥ কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের (এআইসিসি) সুবিধা ভোগ করছে আধুনিক কৃষিসমৃদ্ধ অঞ্চল নকলার কৃষকরা। এলাকার কয়েক গ্রামীণ কৃষি চিন্তকের উদ্যোগে গড়ে উঠা ওই কেন্দ্রের আওতায় ডিজিটাল তথ্য সেবায় পাল্টে যাচ্ছে স্থানীয় ৯ গ্রামের কৃষিচিত্র। ভাগ্য বদল হচ্ছে অনেক কৃষক-কিষানীর। ফলে এলাকার কৃষি উন্নয়নে মডেল হয়ে উঠেছে এআইসিসি। অনেকেই এখন কৃষিক্ষেত্রে সহায়তা পেতে এআইসিসির প্রতি উৎসাহী হয়ে উঠছেন। জানা যায়, কৃষকদের ডিজিটাল তথ্য সেবা দেয়ার লক্ষ্যে ২০০১ সালের দিকে নকলা উপজেলার বানেশ্বর্দী ইউনিয়নের মোজারবাজার ও পোলাদেশী গ্রামের ২০ কৃষক ও ৫ কিষানী মিলে গঠন করেন ‘অগ্নিবীণা ক্ষুদ্র কৃষক আইপিএম ক্লাব’। পর্যায়ক্রমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে ডিজিটাল কৃষি তথ্যের প্রচলন ও গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের সহযোগিতায় ওই আইপিএম ক্লাবের মাধ্যমে স্থানীয় মোজারবাজারে আত্মপ্রকাশ করে কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি), যা সর্বক্ষণিক কৃষি তথ্য সার্ভিস নামে পরিচিত। ওই এআইসিসির দেয়া ডিজিটাল সেবা নিয়ে পোলাদেশী, মোজারবাজার বানেশ্বর্দী, ভূরদী, নয়াপাড়া, বাউশা, কবুতরমাড়ি, ছাল্লাকুড়া, খন্দকারপাড়া গ্রামের পিছিয়ে থাকা হাজারও কৃষক আজ স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। যে কারণে এআইসিসি নজর কেড়েছে সবার। স্থানীয় কৃষি বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সপ্তাহে সম্ভব না হলেও মাসে একবার করে পরিদর্শন করেন ওই কেন্দ্র। সম্প্রতি এআইসিসির কার্যক্রম পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান এবং ময়মনসিংহ বিভাগীয় কৃষি তথ্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ গোলাম মাওলা। এআইসিসির সেবার মান ও সফলতা দেখে কৃষি ও সমাজসেবার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে পার্শ্ববর্তী ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষি পণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থা নামে আরও একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। কৃষিবিদ ও সুধীজনদের মতে, সারাদেশে প্রতি ওয়ার্ডে বা ইউনিয়নে এআইসিসি এবং ভূরদী খন্দকারপাড়া কৃষি পণ্য উৎপাদক কল্যাণ সংস্থার মতো সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠত, তাহলে দেশ আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেত। এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কৃষি বিষয়ক কবি আব্দুল হালিম বলেন, তাদের ওই তথ্য সেবা কেন্দ্রে সর্বক্ষণিক সেবা দিতে জাকির হোসেন সজিব নামে এক তরুণকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সে মাসে যা আয় করে তার ২০% থেকে ৪০% নিজে নেয়। বাকি অংশ সমিতির এ্যাকাউন্টে জমা থাকে। এতে সজিবের মাসিক আয় হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। তা দিয়েই সজিব তার শিক্ষা খরচ বহন করে। এ ব্যাপারে শেরপুর খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আশরাফ উদ্দিন বলেন, কৃষি বিভাগের সহায়তায় নকলায় প্রতিষ্ঠিত ‘এআইসিসি’ এলাকার কৃষকের ভাগ্য খুলে দিয়েছে। এর সেবা ভোগ করে এখন অনেকেই আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠছেন।
×