ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জনকণ্ঠের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান

ফাঁকফোকর দিয়ে অর্থ পাচার হয় বিদেশে-বসে নেই এনবিআর

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৩ নভেম্বর ২০১৬

ফাঁকফোকর দিয়ে অর্থ পাচার হয় বিদেশে-বসে নেই এনবিআর

ওয়াজেদ হীরা ॥ দেশের অর্থ নানা ফাঁকফোকর দিয়ে চলে যায় বিদেশে। তবে বিদেশে এই অর্থ পাচার রোধে সতর্ক জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বিষয়ে এনবিআর দেশের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। একই সঙ্গে মানি লন্ডারিং বিষয়ে অনেক সময় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জনকণ্ঠের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান আশার কথা শুনিয়ে বলেন, এ্যান্টি মানি লন্ডারিং কার্যক্রম আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে আইনী ও প্রশাসনিক সংস্কার এবং কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। তবে মুদ্রা পাচার পুরোপুরি প্রতিরোধ করতে হলে নাগরিক সচেতনতা বাড়াতে হবে ও মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। সম্প্রতি শেষ হয়েছে সপ্তমবারের মতো আয়কর মেলা। ‘সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর’ সেøাগান নিয়ে এবারই প্রথম রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিজস্ব ভবনে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি মাসে সপ্তাহব্যাপী এই আয়কর মেলার নানা বিষয় নিয়ে সাক্ষাতকারে কথা বলেন এনবিআরের চেয়ারম্যান। সম্প্রতি শেষ হওয়া আয়কর মেলায় আয়কর সংগ্রহ হয়েছে ২১২৯,৬৭,৭৫,৮১১ টাকা, যা ২০১৫ সালে ছিল ২০৩৫,৩৫,৮৪,৮১৮ টাকা। প্রতিবছর মেলায় আয়কর দেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এবার আয়কর মেলা সর্বক্ষেত্রেই রেকর্ড করেছে। গতবারের আয়কর মেলার সাফল্য বিশ্লেষণ করে আমরা কলেবর বাড়িয়েছি চারগুণ। মানুষ এসেছে প্রায় দশগুণ। তবু লোকবল, সুযোগসুবিধা বাড়িয়ে সকল করদাতা ও সেবাগ্রহিতাকে আমরা সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। দাফতরিক সময়ের বাইরেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সম্মিলিতভাবে কাজ করে সকলের সহযোগিতায় মেলা সাফল্যম-িত করেছেন। জনসমাগম নিয়ে বলেন, এ বছর আয়কর মেলায় প্রচুর জনসমাগমের নানাবিধ কারণ রয়েছে। আমাদের গৃহীত বহুমুখী পদক্ষেপের ফলে মানুষ আয়কর সম্পর্কে জানতে পারছে। আয়কর জমার পদ্ধতি/প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে, অনলাইনে ই-টিআইএন প্রদান ও রিটার্ন ফাইলিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে। মানুষের করভীতি দূর করার জন্য ফরম পূরণ নির্দেশিকা, লিফলেট, টিভি বিজ্ঞাপন, তথ্য কণিকা, টিভিসি, টিভি নাটিকা ইত্যাদি প্রচার করা হয়েছে। এনবিআর ও এনবিআরের অধীন দফতরসমূহের ফেসবুক পেজ, ফেসবুক গ্রুপে ক্ষণে ক্ষণে আপডেট দেয়া হয়েছে। এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফেসবুকে মেলার সাফল্য ও অর্জন তুলে ধরে পোস্ট দিয়েছেন। ফলে বহু মানুষ এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয়েছে বলে মনে করেন এনবিআরের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, করদাতাদের পক্ষ থেকেও অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে। এছাড়া এ বছর ট্যাক্স এডুকেশন ফোরাম (টিইএফ) বা ‘করশিক্ষণ ফোরাম’ ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। স্কুল ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে পরিচালিত এ ফোরাম সকল সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এসব কারণে এ বছর আয়কর মেলায় দুই হাজার এক শ’ ঊনত্রিশ কোটি সাতষট্টি লাখ পঁচাত্তর হাজার আট শ’ এগারো টাকা সংগৃহীত হয়েছে। আগামী বছরের মেলার পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, আমরা আগামী বছরের আয়কর মেলার কলেবর বৃদ্ধি করব এবং সকল রকমের গণমাধ্যমকে সম্পৃক্ত করে করদাতা ও অংশীজনদের (স্টেকহোল্ডার) আকৃষ্ট করার পদক্ষেপ নেব। আগামী আয়কর মেলায় আমরা, ‘করশিক্ষণ ফোরাম’কে আরও বর্ধিত কলেবরে সাজাব। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আরও বেশি মানুষকে সম্পৃক্ত করা হবে। আগামী আয়কর মেলায় বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও সেমিনার আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে জনসম্পৃক্ততা আরও বাড়বে। এ বছরের মেলার সাফল্য নিয়ে চেয়ারম্যান আরও বলেন, পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ও আধুনিক এনবিআর নির্মাণের অভিযাত্রায় দেশে একটি করদাতাবান্ধব পরিবেশ ও একটি পরিপালনমুখী কর সংস্কৃতি নির্মাণের জন্য আমরা সকলে যে নিরলস পরিশ্রম করছি তার ফল আসতে শুরু করেছে। এখন কর প্রদানে মানুষ ভয় পায় না। তারা স্বেচ্ছায় এসে কর দিচ্ছেন। এছাড়াও, কর প্রদানে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করসেবা, করশিক্ষণ ও প্রচার কার্যক্রম জোরদার করেছে। সবাই দেখছে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হচ্ছে। নিজের টাকায় পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশের মানুষ বুঝতে পারছে। উন্নয়নের সুফল সবাই পাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কর দেয়ার আগ্রহ বাড়ছে বলে জানান নজিবুর রহমান। প্রতিবছর এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এনবিআরের চেয়ারম্যানের দায়িত্বকালীন সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কৌশল বা নতুনত্ব বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনই এনবিআরের মূল কাজ। আমাদের গতবারের আদায়ের চেয়ে এবার প্রায় ৩০.৬২% প্রবৃদ্ধি ধরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমরা কিছু কৌশল হাতে নিয়েছি। উদ্ভাবনী কিছু পদক্ষেপও নিয়েছি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর ভেতরে ও বাইরে সকলকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করছি। রাজস্ব আহরণে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে আমাদের সেøাগান হচ্ছে, ‘জনকল্যাণে রাজস্ব এবং উন্নয়নের অক্সিজেন রাজস্ব’। সম্মানিত করদাতাদের আস্থা অর্জনের, আস্থা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়েছি। এর ফলে আমার দায়িত্বকালীন দুটি অর্থবছরেই এনবিআরের সংশোধিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। এ সাফল্যের ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের তিন শাখা আয়কর, ভ্যাট বা মূসক ও শুল্ক শাখাকে ঢেলে সাজানো আর এর সঙ্গে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির প্রসঙ্গে নজিবুর রহমান বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর আমি কর্মকর্তাদের মধ্যে ‘টিমওয়ার্ক’কে প্রাধান্য দিয়েছি। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এনবিআর ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ‘ই-মেইল গ্রুপ’ এ নিয়ে এসেছি। একটা ক্লিকে আমি সবাইকে পাচ্ছি। জরুরী বার্তা ও সিদ্ধান্ত দ্রুত আদান-প্রদান ও বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে। পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে একটি আধুনিক ব্যবস্থাপনা ধারণার প্রবর্তন করেছি; তা হলো, সুশাসন এবং আধুনিক ও উন্নততর ব্যবস্থাপনা কাঠামো। কর্মকর্তাদের দেশের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক প্রশিক্ষণের পদক্ষেপ নিয়েছি। ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন’ নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি, হয়রানি, অসদাচরণ ও বিশৃঙ্খলার সর্বক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছি। ব্যবস্থাপনার মূলনীতি অনুসরণ ও মানসম্মত ব্যবস্থাপনায় স্বশিক্ষিত করে তুলছি। যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাদের উপযুক্ত স্থানে পদায়ন করেছি এবং বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠিয়েছি। এর ফলে কাজের গতি ও মান বেড়েছে। ফল তো দেখতেই পাচ্ছেন। আমাদের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি নিয়ে মন্ত্রীগণ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলেও জানান তিনি। করদাতার সংখ্যা এবং নতুন করদাতা বাড়াতে এনবিআরের ভূমিকা নিয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, যোগদানের পরই লক্ষ্য করেছি, করদাতাদের সংখ্যা প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে না। এ বিষয়ে আমি নিবিড়ভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি। করদাতা কম হওয়ার দৃশ্যমান/অদৃশ্যমান কারণ অনুসন্ধান করেছি এবং করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর কার্যকর উপায় খুঁজেছি। এ বছর এসে সাফল্য পেতে শুরু করেছি। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কৌশল প্রণয়ন করে ২০১৬-১৭ সালের বাজেটে কর নিবন্ধন, রিটার্ন দাখিল ও করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। এ ছাড়া সম্মানিত করদাতাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সংলাপ বিজ্ঞপ্তি প্রচারসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছি। এর আরও সুফল আসছে। বিগত ছয় মাসে প্রায় চার লাখ নতুন করদাতা নিবন্ধিত হয়েছেন। এনবিআরের ইতিহাসে কোন বছরে এত বেশি সংখ্যক করদাতা নিবন্ধনের রেকর্ড আর নেই। চলতি বছরে আর ৫ লাখ নতুন করদাতা নিবন্ধনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রেও এবার আগের সকল রেকর্ড ভঙ্গ হবে বলে আমরা আশা করছি। চলতি করবর্ষে নতুন করদাতা নিয়ে বলেন, এ বছর মেলায় তরুণ-তরুণীদের দেখে আমি আনন্দিত হয়েছি। তারা ক্রমেই কর প্রদানে আগ্রহী হচ্ছেন। অনলাইনে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে নতুন করদাতাগণ কর প্রদানে আরও আগ্রহী হচ্ছেন এবং ভবিষ্যতে এ সংখ্যা দ্রুতই বৃদ্ধি পাবে বলে আমার বিশ্বাস। এক প্রশ্নের জবাবে নজিবুর রহমান বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী সংস্থা। এখানে মেধাবী লোকজন কাজ করেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কাস্টমস্, ভ্যাট এবং আয়কর এই তিন অনুবিভাগ রাজস্ব আহরণ করে। ঐতিহ্যগতভাবে এই তিন অনুবিভাগের কাজ পৃথক পৃথকভাবে সম্পাদিত হতো। আমি এসে তিন অনুবিভাগকে সমন্বিত করে এক টেবিলে বসিয়ে কাজ করা শুরু করি। মাঠ পর্যায়ে সিনিয়র কমিশনারের নেতৃত্বে অঞ্চলভিত্তিক ‘মাসিক সমন্বয় সভা’র প্রচলন করেছি। অনুবিভাগ নির্বিশেষে যে কোন সদস্য মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনে গেলে কমিশনারদের সমন্বয়ে কার্যক্রম মনিটরিং করেন। দায়িত্ব নেয়ার শুরু থেকেই সকলে আমাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। সবার সহযোগিতা না পেলে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হতো না। সকলে মিলেই আমরা একটি নতুন, আধুনিক ও ডিজিটাল এনবিআর গড়ার লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন শুরু থেকেই বাড়ছে। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে এমন আশাবাদ এনবিআর চেয়ারম্যানের। তিনি বলেন, গত বছরের রাজস্ব আহরণের ওপর ৩০.৬২% অতিরিক্ত অর্থ অর্থাৎ ২,০৩,১৫২ কোটি টাকা এ বছর এনবিআরকে সংগ্রহ করতে হবে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং এ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি বেশ ভাল। অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী এ পর্যন্ত আদায় নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আমি সব সময়ই একজন আশাবাদী ও কর্মপ্রবণ মানুষ। আমাদের বিশ্বাস লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়ে যাবে। চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আহরণে গণমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। দেশে কর সংস্কৃতির বিকাশে ও লালনে গণমাধ্যম যুগপৎ ভূমিকা রাখতে পারে। ভিয়েতনামে এক শ’ জনে সত্তর জন কর দেয়। আর আমাদের দেশে এ পর্যন্ত এক শ’ জনে ১ জন কর দেন। দেশের ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া দায়িত্ব নিয়ে সব পর্যায়ের মানুষের সচেতনতায় কাজ করতে পারে। দেশীয় সম্পদে জাতি হিসেবে স্বনির্ভর ও নিজস্ব সম্পদে পদ্মা সেতু নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরে মানুষকে করবান্ধব হতে ভূমিকা রাখতে পারে। এ বছর আয়কর মেলায় ‘করশিক্ষণ ফোরাম’ এ স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ইভেন্ট মিডিয়া ব্যাপক প্রচার করেছে। এছাড়া গণমাধ্যম এনবিআরের সংস্কার, উদ্ভাবন ও কৃতিত্ব তুলে ধরে, টিভিসি, নাটিকা ও বিভিন্ন প্রচারমূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে জনগণের মধ্যে কর প্রদানের গুরুত্ব তুলে ধরতে পারে বলেও মনে করেন তিনি। প্যাকেজ ভ্যাট নিয়ে যে আন্দোলন তা নিয়ে যৌক্তিক সমাধান হবে বলে আশার কথা শুনিয়ে চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, প্যাকেজ ভ্যাট নিয়ে ‘ভুল ধারণা’ বিরাজ করছে। ‘ভ্যাট’ কখনও ব্যবসায়ী দেন না। ভ্যাট পরিশোধ করেন ‘ভোক্তা’। ব্যবসায়ী ভোক্তার কাছ থেকে ভ্যাট নিয়ে সরকারের কোষাগারে জমা দেবেন। তিনি এখানে রাজস্ব বিভাগের পক্ষে সংগ্রহকারী হিসেবে কাজ করবেন, যেমনি আমরা করছি। তিনিও ভ্যাট সংগ্রাহক, আমরাও ভ্যাট সংগ্রাহক। ‘প্যাকেজ ভ্যাট’ নিয়ে ব্যবসায়িক ঐক্য ফোরামের চলমান আন্দোলনের বিষয়ে এনবিআর সজাগ আছে। এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। ইতোমধ্যে সকল বিভাগীয় ও জেলা শহরে নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে একাধিক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এখনও চলমান আছে, যেখানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দও অংশগ্রহণ করছেন। প্রায় সকলেই ২০১২ সালের নতুন ভ্যাট আইনকে ১৯৯১ সালের আইনের চেয়ে উত্তম বলে অভিহিত করেছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নির্দেশনার আলোকে ব্যবসায়ীক ঐক্য ফোরামের সঙ্গে শীঘ্রই একটি যৌক্তিক সমাধানে উপনীত হওয়া সম্ভব হবে।
×