ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাইকোর্টের রুল

সাঁওতালদের উচ্ছেদের নামে লুট, গুলি, হত্যা কেন বেআইনী নয়?

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২৩ নভেম্বর ২০১৬

সাঁওতালদের উচ্ছেদের নামে লুট, গুলি, হত্যা কেন বেআইনী নয়?

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে চিনিকল এলাকায় সাঁওতালদের উচ্ছেদের নামে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, গুলি ও হত্যা কেন আইনগতভাবে কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। এদিকে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতি বিষয়ক ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটের ওপর আদেশ স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করা হয়েছে। পরে যেকোন সময়ে এ আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছেন। সাঁওতালদের ওপর হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, গুলি ও হত্যা কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত। দুই সাঁওতালের স্ত্রীর করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল করেন। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. রফিকুর রহমান, সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। হামলায় আহত দ্বিজেন টুডোর স্ত্রী অলিভিয়া হেমভ্রম ও গণেশ মুরমোর স্ত্রী রুমিলা কিসকুর পক্ষে সোমবার এ রিট দায়ের করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। মঙ্গলবার রিটের শুনানি নিয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক, গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, গোবিন্দগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের ম্যানেজারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, গত ৬ নবেম্বর রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ও সাঁওতালদের সংঘর্ষ থামাতে গুলি চালায় পুলিশ। এতে তিন সাঁওতাল নিহত হন, আহত হন অনেকেই। এরপর আহত দুই সাঁওতালের স্ত্রী গত ১৫ নবেম্ব^র সরকারকে নোটিস পাঠান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ নোটিসের জবাব না দিলে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথাও বলা হয়। আদেশ মুলতবি ॥ বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৫ এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতি বিষয়ক ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটের ওপর আদেশ স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করা হয়েছে। পরে যেকোন সময়ে এ আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশে আদালত বলেন, ‘এটি সাংবিধানিক বিষয়। আমরা আরও দেখব। বিষয়টি স্ট্যান্ডওভার রাখলাম’। পরে রিট আবেদনকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী বলেন, আদালত বিষয়টি স্ট্যান্ডওভার রেখেছেন। পরে যেকোন সময় এটার ওপর আদেশ দেয়া হবে। গত ৩ নবেম্বর হাইকোর্টে রিটটি করেন ইউনুছ আলী আকন্দ। সোমবার শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট। শুনানির পর ইউনুছ আলী আকন্দ জনকণ্ঠকে বলেন, ‘আদালতে বলেছি-১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে ১১৬ অনুচ্ছেদে অধস্তন আদালতের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব ছিল সুপ্রীমকোর্টের। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ৪র্থ সংশোধনীতে সুপ্রীমকোর্টের পরিবর্তে ওই ক্ষমতা দেয়া হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’। ‘এছাড়াও সংবিধানের ৯৫ (গ) অনুচ্ছেদে আইন তৈরি সাপেক্ষে বিচারপতি নিয়োগের বিধান থাকলেও সংসদে কোন আইন ছাড়াই দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এটিও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক’।
×