ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চবি ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু রহস্য কাটছে না

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২৩ নভেম্বর ২০১৬

চবি ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু রহস্য কাটছে না

চবি সংবাদদাতা ॥ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য কাটছে না। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকা- তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। পরিবার, স্বজন ও রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের দাবি, এটি হত্যাকা-। আবার পুলিশও এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না। এরই মধ্যে মঙ্গলবার দিয়াজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। দিয়াজের মৃত্যুতে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন চবি ক্যাম্পাসে আসেন। এ সময় তিনি দিয়াজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গেও মুঠোফোনে কথা হয় তার পরিবারের। এদিকে, ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজের রহস্যময় মৃত্যুর নেপথ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডার সংশ্লিষ্ট বিরোধ বা ভাগবাটোয়ারার বিষয় ছিল কিনা তাও বেশ আলোচিত হচ্ছে। চবিতে প্রায় ৯৫ কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। একপক্ষে ছিলেন চবি ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ আলমগীর টিপু ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজন। অপরদিকে, নেপথ্যে ছিলেন দিয়াজ ইরফান চৌধুরী। এর জেরে দিয়াজের অনুসারী ও চবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোঃ মামুনকে মারধর করে সভাপতি টিপুর অনুসারী ও চবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তায়েফুল হক তপু। পরবর্তীতে গত ৩০ অক্টোবর তপুর ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা। হামলার জন্য দিয়াজ ইরফান ও তার অনুসারীদের দায়ী করে আলমগীর টিপুর অনুসারীরা। সেদিন রাতেই দিয়াজ ও ক্যাম্পাসের আরও কয়েক ছাত্রলীগ নেতার বাসায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এর জন্য দিয়াজ ও তার অনুসারীরা সভাপতি আলমগীর টিপুকে দায়ী করেন। তাদের অভিযোগ টিপুর অনুসারীরাই এই হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। সেই দ্বন্দ্ব থেকেই দিয়াজকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছে বিভিন্ন পক্ষ। দিয়াজের পরিবারও একই দাবি করেছে। পরিবারের দাবি তাদের বাসায় যারা পূর্বে হামলা ও ভাংচুর করেছে তারাই এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে। একই দাবি জানিয়েছেন তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা। এছাড়া মৃত্যুর পরই কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিগুলোতে দেখা যায় দিয়াজের পা এবং হাতে বেশ কিছু দাগ রয়েছে। তার পায়ে কিছু আঁচড়ের দাগ এবং হাতে লালচে দাগ রয়েছে। পাশাপাশি তার ঘাড়ের বাঁ দিকে কিছু আঁচড়ের চিহ্নও দেখা যায়। এসব বিষয় লাশের সুরতহাল প্রস্তুতকারী হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফসানা বিলকিসও স্বীকার করেছেন। এরই মাঝে লাশের ছবি প্রকাশ হওয়ায় দিয়াজের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। কেননা, তার পা ছিল বিছানার ওপর এবং গলার ফাঁসও ছিল ঢিলেঢালা। মঙ্গলবার দিয়াজের পরিবারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এরশাদুর রহমান, মাহফুজুর রহমান রাসেল, আদিত্য নন্দী, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসাইন ইমু, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, সহ-সভাপতি ইয়াসিন আরাফত কচি, উত্তর জেলা ছাত্রলীগে সভাপতি বখতিয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব প্রমুখ।
×