ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ষণ মামলা

সেতাবগঞ্জ চিনিকল এমডির বিরুদ্ধে অবস্থান ধর্মঘট

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২৩ নভেম্বর ২০১৬

সেতাবগঞ্জ চিনিকল এমডির বিরুদ্ধে অবস্থান ধর্মঘট

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ সেতাবগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা মামলাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সংঘর্ষ, ভাংচুর ও অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অপসারণের দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীরা অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন। চিনিকল এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সেতাবগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এসএম আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে ১৭ নবেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন শিল্পী বেগম। মামলার বাদিনী চিনিকলের কর্মচারী মরহুম আকরাম হোসেনের কন্যা ও আখচাষী আজাহারুল ইসলামের স্ত্রী। শিল্পী বেগম অভিযোগ করেন, ৭ নবেম্বর সন্ধ্যায় বোচাগঞ্জ উপজেলার মুর্শিদহাট ইক্ষু ফার্মের ইক্ষু ক্ষেতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রশিদ তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তাকে চরমভাবে যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করে। তার চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে আব্দুর রশিদ পালিয়ে যায়। ওইদিন রাত ৯টায় নির্যাতিতা শিল্পী বেগম বোচাগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে, তার এজাহার গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয় বলে তিনি জানান। ঘটনার পর চিনিকলের কর্মচারীগণ ও স্থানীয় লোকজন নিষ্পত্তির চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হলে শিল্পী বেগম ১৭ নবেম্বর আদালতে মামলা দায়ের করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসেন শহীদ আহমেদ অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য বোচাগঞ্জ থানার ওসিকে আদেশ দেন। মঙ্গলবার বোচাগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার এএসআই মোবারক হোসেন জানান, ওই ঘটনার আদালতের আদেশনামা এখনও তারা পাননি। ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চিনিকলের কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারীর ব্যানারে মানববন্ধনের কর্মসূচী পালন করে। এ সময় চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে একদল শ্রমিক-কর্মচারী মানববন্ধনে হামলা চালিয়ে ব্যানার ছিঁড়ে ও হ্যান্ডমাইক ভাংচুর করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের রূপ নেয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রশিদকে তার চেম্বার থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে ধাক্কা দিতে দিতে বাস ভবনে নিয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা বলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তার বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আমজাদ হোসেন বলেন, তাদের সঙ্গে কোন ধরনের আলাপ আলোচনা না করে মানববন্ধনের ব্যানারে ইউনিয়নের নাম ব্যবহার করায় শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচী ভ-ুল করে। তিনি বলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ধর্ষণ চেষ্টা মামলার ব্যাপারে চিনিকল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দাবি করা হয়েছে তার অপসারণ ছাড়া শ্রমিকেরা অবস্থান ধর্মঘট থেকে সরে আসবে না। তবে মামলার ব্যাপারে ইউনিয়নের সভাপতি বলেন, যেহেতু এটি এখন আদালতের এখতিয়ারভুক্ত, তাই দোষী-নিদোষী প্রমানিত হবে আদালতে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, মামলার অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। যেহেতু মামলা হয়েছে বলে শুনেছি তাই আদালতে তা মোকাবেলা করব। অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা তার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। যৌন হয়রানির শিকার শিল্পী বেগম এবং তার স্বামী আজাহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনা সত্য বলেই আদালতে মামলা করেছি। একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার প্রশ্নই ওঠে না। বাদিনী বলেন, আদালতে প্রমাণ হবে আমার অভিযোগ মিথ্যা না সত্য।
×