ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়

চলতি অর্থবছরে আরও ৯ লাখ নতুন করদাতা চান অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৩ নভেম্বর ২০১৬

চলতি অর্থবছরে আরও ৯ লাখ নতুন করদাতা চান অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নতুন করদাতা খুঁজে বের করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) তাগিদ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের মধ্যে আরও নয় লাখ করদাতা প্রয়োজন উল্লেখ করে সম্প্রতি এনবিআরে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, ১৬ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ১৩ লাখ করদাতা রয়েছে। করদাতার এ সংখ্যা মোট জনগণের তুলনায় খুবই নগণ্য। সুতরাং আয়কর আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে করদাতার সংখ্যা বাড়ানো ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। চিঠিতে এনবিআরের প্রশংসা করে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ নতুন করদাতা খুঁজে বের করেছে এনবিআর। তবে এনবিআরকে এখানে থেমে গেলে চলবে না। করদাতা অনুসন্ধানের এ কাজ চলমান রাখতে হবে। অর্থবছর শেষে দেশে করদাতার সংখ্যা ২৫ লাখ করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এদিকে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে করদাতা সংগ্রহে কর্মকৌশল প্রণয়ন করে কর অঞ্চলগুলোতে চিঠি দিয়েছে এনবিআর। এনবিআর চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বেশকিছু দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দিকনির্দেশনায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলের যে অংশে করদাতার সংখ্যা কম সে অংশ থেকে নতুন করদাতা খুঁজে বের করতে হবে। এছাড়া করদাতার সন্ধানে শহর ছেড়ে উপজেলা বা তৃণমূল পর্যায়ে যেতে হবে। হঠাৎ পরির্দশনে যেতে হবে জনবহুল এলাকায়। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সদ্যসমাপ্ত জাতীয় আয়কর দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে করতাদার সংখ্যা খুবই কম। তবে আগামী দুই বছরের মধ্যে এ সংখ্যা একটি সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছাবে বলে আমি মনে করি। অর্থমন্ত্রী বলেন, জনগণ কেন কর দেয়? সমাজ রক্ষা ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য তারা কর দেয়। আগে রাজস্ব আদায় করা হতো প্রধানত রাষ্ট্রের ব্যয়ভার মেটানোর জন্য। কিন্তু এখন রাজস্ব আদায় করা হয় রাষ্ট্রে বসবাসরত মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করার জন্য। এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা অনুযায়ী দেশে করদাতাবান্ধব সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে এনবিআর। বর্তমানে কর আদায়ে হয়রানিসহ যে কোন ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য কর প্রদানে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে করদাতাদের অংশগ্রহণ বেশি। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই এনবিআর দেশজুড়ে কর জরিপ কার্যক্রম শুরু করে। জরিপে ব্যাপক সফলতাও আসে। ৪ মাসে আমরা প্রায় ৪ লাখ নতুন করদাতা পেয়েছি। এ জরিপ কার্যক্রম চলমান। আশা করছি, অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থবছরের বাকি সময়ের মধ্যে ৯ লাখ নতুন করদাতা খুঁজে পাব। নজিবুর রহমান আরও বলেন, কর প্রদানে জনগণকে উৎসাহ দিতে আমরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ সম্মাননা দেয়া শুরু করেছি। একই সঙ্গে যারা সরকারের প্রাপ্য কর ফাঁকি দেয় তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। সুতরাং করযোগ্য আয় থাকলে অবশ্যই কর পরিশোধ করতে হবে।
×