ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, রেকর্ড টানা ছয় জয় ব্লুজদের

সেই চেলসিই সবাইকে ছাড়িয়ে শীর্ষে

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২২ নভেম্বর ২০১৬

সেই চেলসিই সবাইকে ছাড়িয়ে শীর্ষে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একসময় ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে আট নম্বরে নেমে গিয়েছিল চেলসি। সেই দলটিই দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে এখন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। রবিবার রাতে মিডলসব্রোকে ১-০ গোলে হারিয়ে রেকর্ড টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিয়েছে দ্য ব্লুজরা। পরপর ছয় ম্যাচে জয়ের রেকর্ড গড়ার পথে চেলসির হয়ে টানা তিন ম্যাচে প্রথমার্ধে গোল করেছেন দিয়াগো কোস্টা। এই মুহূর্তে ইপিএলে ১২তম রাউন্ড শেষে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে চেলসি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা লিভারপুল ও ম্যানসিটির ভা-ারে জমা সমান ২৭ পয়েন্ট করে। তবে গোল গড়ে পিছিয়ে থাকায় তিন নম্বরে পেপ গার্ডিওলার সিটি। ২৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে আর্সেনাল। ২৪ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে টটেনহাম হটস্পার এবং ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে ম্যানইউ। সেরা দশের বাকি চারটি দল এভারটন, ওয়াটফোর্ড, বোর্নমাউথ ও সাউদাম্পটন। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিচেস্টার সিটি টেবিলের ১৪ নম্বরে নেমে গেছে। তাদের পয়েন্ট মাত্র ১২। তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারত চেলসির। কিন্তু তা হয়নি সহজ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করায়। দুর্বল প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়েও চেলসি আগের মতো আক্রমণাত্মক ধারা ধরে রাখে। তবে গোল পেতে প্রথমার্ধের শেষভাগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় এ্যান্টোনিও কন্টের দলকে। ম্যাচের ৪১তম মিনিটে অতিথিদের এগিয়ে নেন কোস্টা। ইডেন হ্যাজার্ডের কর্নারে ডি বক্সে জটলার মধ্যে থেকে বল জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। বিরতির পর শুরুতেই ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পায় চেলসি। কিন্তু মার্কোস এ্যালোনসোর শট রুখে দেন স্বাগতিক গোলরক্ষক ভিক্টর ভালদেস। ৬১ মিনিটে চেলসির সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় পোস্ট। পেড্রো রড্রিগেজের নেয়া জোরালো শটটি দুর্ভাগ্যবশত গোলবারে লেগে ফিরে আসে। অথচ এই চেলসিই শুরুর দিকে ছিল জড়সড়। চতুর্থ রাউন্ডে সোয়ানসি সিটির মাঠে গিয়ে ধাক্কা খায় তারা। এরপর লিভারপুল ও আর্সেনালের কাছে উড়ে গিয়েছিল ব্লুজরা। পয়েন্ট তালিকায় দশের কাছাকাছি পৌঁছে যায় স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের দলটি। তখন সমালোচনা উঠেছিল কোচ এ্যান্টোনিও কন্টের কৌশল নিয়ে। তবে হতাশ হননি ইতালিয়ান কোচ, বরং নিজের কাজটা চালিয়ে গেছেন। এখন তারই পুরস্কার পাচ্ছে চেলসি। হাল সিটি, লিচেস্টার সিটি, ম্যানইউ, সাউদাম্পটন, এভারটন এবং মিডলসব্রোর বিরুদ্ধে টানা ছয়টি ম্যাচ জিতে ইপিএলের চূড়ায় উঠেছে জন টেরি বাহিনী। অনন্য ধারাবাহিকতার পথে রেকর্ড গড়েছে দলটি। ছয় বছর বাদে টানা ছয়টি ম্যাচে তাদের জালে একবারও বল জড়ায়নি। এর আগে ২০০৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি ও ২০০৭ সালের জানুয়ারি থেকে একই বছরের এপ্রিল পর্যন্ত টানা আটটি করে ম্যাচ নিজেদের জাল অক্ষত রেখেছিল নীল জার্সিধারীরা। যদিও সামগ্রিক হিসেবে ইপিএলে ধারাবাহিকভাবে সবচেয়ে বেশি নয় ম্যাচ গোল হজম না করার রেকর্ডটি ম্যানইউয়ের দখলে। ২০০৮-০৯ মৌসুমে এই কীর্তি গড়েছিল রেড ডেভিলরা। চেলসির এই সাফল্যের পেছনে ছক বদলে ফেলায়ও বড় ভূমিকা রেখেছে। শুরুর দিকের ম্যাচগুলোতে কোচ কন্টে দলকে ৪-১-৪-১ ছকে খেলিয়েছেন। খুব একটা কার্যকর প্রমাণিত হয়নি সেই কৌশল। হাল সিটির বিরুদ্ধে লীগের সপ্তম ম্যাচে এসে প্রথম ৩-৪-৩ ছকে খেলান দলকে। ওই ম্যাচটা দারুণ খেলে চেলসির জয় ২-০ গোলে। সেই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়েই পরের ম্যাচেও দলকে একই ছকে খেলান কোচ। তবে একাদশে কিছুটা পরিবর্তন আনেন ডানপাশে উইলিয়ানের বদলে পেড্রোকে সুযোগ দিয়ে। এর পরেই আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি কন্টেকে। ভাবতে হয়নি একাদশ নিয়েও। একই ছক আর একই একাদশ নিয়ে টানা পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে চেলসি, জিতেছে সব কটি ম্যাচই। এই পাঁচ ম্যাচে গোল করেছে ১৫টি, খায়নি একটিও। কন্টের এই কৌশলে বদলে যাওয়া চেলসি গড়েছে নতুন ইতিহাসও। প্রিমিয়ার লীগের ইতিহাসে আর কখনই স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের এই ক্লাব টানা ৫ ম্যাচ একই একাদশ নিয়ে খেলেনি।
×