ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দাউদ মার্চেন্টকে পুশ ব্যাকের পর বাংলাদেশের আশা

আটক সাজ্জাদ ও সুব্রত বাইনকে শীঘ্রই ফেরত দেবে ভারতে

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২২ নভেম্বর ২০১৬

আটক সাজ্জাদ ও সুব্রত বাইনকে শীঘ্রই ফেরত দেবে ভারতে

শংকর কুমার দে ॥ বাংলাদেশের মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া পলাতক ৫১ শীর্ষ সন্ত্রাসী ও দুর্ধর্ষ জঙ্গী পালিয়ে আছে ভারতে। ভারতে পালিয়ে বেড়ানো ৫১ জনের মধ্যে ১০ দুর্ধর্ষ জঙ্গী ও ৪১ শীর্ষ সন্ত্রাসী। বাংলাদেশের পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একটি তালিকাও দেয়া হয়েছে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে। নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কারাগারে আটক ভারতীয় সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব গুলশান কুমার হত্যা মামলার আসামি বহুল আলোচিত মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ আব্দুর রউফ দাউদ মার্চেন্টকে জেল থেকে মুক্তির পর ভারতে যাওয়ায় সেদেশের আদালতে হাজির করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশও ভারতের কারাগারে আটক ও পালিয়ে বেড়ানো জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের ফেরত পেতে সহযোগিতা চেয়ে প্রতীক্ষা করছে বাংলাদেশ। শীঘ্রই ভারতে আটক বাংলাদেশের রেড নোটিসধারী আসামি সাজ্জাদ হোসেন ও সুব্রত বাইনকে ফেরত দেয়া হতে পারে। পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমানের খাগড়াগড়ের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় শাকিল আহমেদ ও সুবহান ম-ল নামে দুজন মারা যান ও একজন আহত হওয়ার ঘটনায় রাজিয়া বিবি ও আমেনা বিবি নামে দুই নারীকে আটক করে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের কলকাতার দমদম বিমানবন্দরের কাছ থেকে সাজিদ নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়, তার আসল নাম শেখ রহমতউল্লাহ মাসুম। বাবার নাম সিদ্দিকুর রহমান। নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার ফরাজিকান্দায় তার বাড়ি। গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতীয় সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব গুলশান কুমার হত্যা মামলার আসামি দাউদ মার্চেন্টকে সীমান্ত পথে পুশব্যাক করা হয়েছে, যা কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্যে স্বীকার করছে না। কারাগার থেকে দাউদ মার্চেন্টকে মুক্তি দেয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই ভারতের মুম্বাইয়ের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এতেই তাকে পুশব্যাক করার ঘটনাটি স্পষ্ট হয়। দাউদ মার্চেন্টকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে বাংলাদেশের জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ, চোরাচালান, মানবপাচার, জালমুদ্রার ব্যবসাসহ বহু বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, দাউদ মার্চেন্টকে ফেরত দিয়ে বাংলাদেশের মোস্টওয়ান্টেড একাধিক অপরাধীকে ফেরত পাওয়ার আশা করা হচ্ছিল। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনের দুজন উর্ধতন কর্মকর্তা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে দাউদ মার্চেন্ট ও তার সহযোগী জাহিদ শেখের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তারা মোস্টওয়ান্টেড দুই ভারতীয়কে ফেরত পেতে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তারই ধারাবাহিকতায় দাউদ মার্চেন্টকে মুক্তি পেয়ে পুশব্যাক করার পর মুম্বাই আদালতে হাজির করা হয়। এর বিনিময়ে ভারতে বন্দী চট্টগ্রামের আট খুন মামলার আসামি ও শিবিরের দুর্ধর্ষ ক্যাডার পলাতক সাজ্জাদ হোসেন ও তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। তঁাঁদের ফিরিয়ে আনা হবে পুশইন-পুশব্যাক হস্তান্তর প্রক্রিয়ায়। খুব শীঘ্রই ভারতে আটক বাংলাদেশের রেড নোটিসধারী আসামি সাজ্জাদ হোসেন ও সুব্রত বাইনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে বলে জানা গেছে। এক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বলেন, অনুপ চেটিয়াকে পাওয়ার এক দিনের মধ্যে বাংলাদেশের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ফেরত দেয় ভারত। এরপর অলিখিতভাবে পুশব্যাক করা হয় দাউদ মার্চেন্টকে। এরপর থেকে সাজ্জাদ হোসেন ও সুব্রত বাইনকে ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।
×