ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সেনাকুঞ্জে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে কখনও ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার করিনি

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২২ নভেম্বর ২০১৬

আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে কখনও ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার করিনি

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বর্ণাঢ্য আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত ছিল ঢাকা সেনানিবাস। ফুলে ফুলে আর বর্ণাঢ্য সজ্জায় সেজেছিল সেনাকুঞ্জ। সুরের মূর্ছনায় সেনাকুঞ্জ এলাকায় তৈরি হয় অন্যরকম মনোরম পরিবেশ। এমন দৃশ্য সেনাকুঞ্জে বছরে একবারই দেখা যায়। আর সে দিনটি হচ্ছে ২১ নবেম্বর। দিনটি সশস্ত্র বাহিনীর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। তাই দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতির যে কোন প্রয়োজনে নিবেদিত থাকার অঙ্গীকার এবং যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সোমবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে সশস্ত্র বাহিনীর কল্যাণে কাজ করেছে। কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা (আওয়ামী লীগ) কখনই সশস্ত্র বাহিনীকে ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করিনি বা ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বারবার ক্যু করে সশস্ত্র বাহিনীর শত শত অফিসার বা সৈনিকের হত্যাকা- আমরা ঘটাইনি। হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাইনি। সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে কাজ করছি। সুসজ্জিত আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গঠনে কাজ করেছে আওয়ামী লীগ। শুধু বাংলাদেশের জনগণের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্বব্যাপী যেন আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। বিকেলে সেনাকুঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৌঁছলে তিন বাহিনীর প্রধানগণ তাঁকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে আসামাত্রই তিন বাহিনীর একটি চৌকস বাদক দল বাদ্যযন্ত্রে জাতীয় সঙ্গীতের সুর তোলেন। এ সময় উপস্থিত সামরিক-বেসামরিক সর্বস্তরের কর্মকর্তা, নেতা-মন্ত্রীসহ সবাই যে যেখানে ছিলেন সেখানেই নীরবে দাঁড়িয়ে যান। এরপর উদ্বোধনী বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী ঘুরে ঘুরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আসা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও শ্রেণী-পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া যাননি, তবে তাঁর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। গত চার বছর ধরে অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, শারীরিক অসুস্থতার জন্য সেনাবাহিনীর এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উনি (খালেদা জিয়া) উপস্থিত থাকতে পারেননি। বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী সেনাকুঞ্জে যাওয়ার আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, মেজর জেনারেল (অব) তারেক আহমেদ সিদ্দিক, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যা বলেন ॥ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতার শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন এবং একই সঙ্গে স্মরণ করেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ মহান মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের ত্যাগ ও বীরত্বগাথায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল একটি দক্ষ ও চৌকস সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা। সে কারণেই স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তিনি গভীর প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টি নিয়ে একটি আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। এ সময় তিনি সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সশস্ত্র বাহিনীর যে সুদৃঢ় ভিত্তি রচনা করে গেছেন তারই ওপর দাঁড়িয়ে আজ আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পেশাদারিত্ব এবং কর্মদক্ষতার পরিচিতি দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিম-লে স্বীকৃত ও প্রশংসিত। আন্তর্জাতিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা বিশ্ব দরবারে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে। তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী আজ তাদের নানাবিধ জনসেবামূলক কর্মকা-ের জন্য জনগণের নির্ভরতা অর্জন করছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাসহ উদ্ধার তৎপরতা ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ সঙ্কট নিরসনকল্পে সশস্ত্র বাহিনী দেশপ্রেমের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো নির্মাণ, আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং জাটকা নিধন রোধসহ বিভিন্ন জাতি গঠনমূলক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কর্মকা-ে অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে চলেছে। এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সশস্ত্র বাহিনী উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। এসব কল্যাণমুখী ও জনহিতকর কর্মকা-ের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। সশস্ত্র বাহিনীকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম করে তোলার জন্য সরকার কার্যকরী পরিকল্পনা নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা বাহিনীকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীকে দেশে ও বিদেশে উন্নততর প্রশিক্ষণ প্রদানসহ আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যুদ্ধসরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ়করণ এবং সেনাবাহিনীর উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে নতুন পদাতিক ডিভিশন ও বেশকিছু ব্রিগেড প্রতিষ্ঠা করেছে। এ সরকারের চলতি মেয়াদে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র, সরঞ্জামাদি ও জনবলের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করা হয়েছে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধনে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আদর্শ ও অনুপ্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে পারেন সেই কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত সশস্ত্র বাহিনী আমাদের জাতির অহঙ্কার। আমি তাদের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি। আপনারা যেন শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতায় সর্বত্র প্রশংসিত হতে পারেন, দেশের প্রতিরক্ষায় এবং দেশ গড়ার কাজে অবদান রেখে আমাদের গৌরব সমুন্নত রাখতে পারবেনÑ এ বিশ্বাস আমার আছে। তিনি বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে, সেজন্য আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন একটি সশস্ত্র বাহিনী, আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত পারদর্শী সশস্ত্র বাহিনী হিসেবেই গড়ে তুলতে চাই। প্রতিরক্ষা বাহিনীকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীকে দেশে ও বিদেশে উন্নততর প্রশিক্ষণ প্রদানসহ আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যুদ্ধসরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বাহিনীর সকল সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গের সুখ, শান্তি ও কল্যাণও কামনা করেন। শিখা অনির্বাণে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন ॥ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতির যে কোন প্রয়োজনে নিবেদিত থাকার অঙ্গীকার এবং যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সোমবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। কর্মসূচীর শুরুতে দেশের সকল সেনানিবাস, নৌঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে পৃথকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করে। পুষ্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে এসে পৌঁছলে তাদের স্বাগত জানান তিন বাহিনী প্রধানগণ এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার। মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল আবু এসরার নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ মাহফুজুর রহমান এবং মহাপরিচালকবৃন্দ। সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান ও বিমানবাহিনী প্রধান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্ধারিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। তিনি তাদের হাতে সম্মানী চেক এবং উপহার হিসেবে শাল ও মোবাইল ট্যাব তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর ২০ জন খেতাবপ্রাপ্ত জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ পরিচয়পত্র বিতরণ করেন। এটির সাহায্যে তারা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়া ২০১৫-২০১৬ সালে সশস্ত্র বাহিনীর শান্তিকালীন সেনা ১ জন ও বিমান বাহিনীর ২ জন সদস্যকে বাহিনী পদক এবং অসামান্য সেবা পদকপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ১ জন ও নৌবাহিনীর ১ জন সদস্যসহ মোট ৫ জনকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক পদকে ভূষিত করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সব কিছু করতে তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধানের সাক্ষাত ॥ সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে তিন বাহিনী প্রধান সোমবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং বিমানবাহিনী প্রধান আবু এসরার বেলা ১১টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বাহিনীর সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দেশের গ-ি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এতে বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। তিনি ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাতে তিন বাহিনী প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানান। বৈঠকে তিন বাহিনী প্রধানগণ তাদের নিজ নিজ বাহিনীর কর্মকা- সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। তাঁরা রাষ্ট্রপতিকে বলেন, সশস্ত্র বাহিনী ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর অধীনে এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সেনাবাহিনী প্রধান ও বিমানবাহিনী প্রধান নিজ নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন। এছাড়া নৌবাহিনী প্রধান সোমবার নিজ বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। দিবসটি পালনে সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সেনাকুঞ্জে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাকা ছাড়াও সাভার, বগুড়া, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, রংপুর, খুলনা ও রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসেও সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। স্টাফ রিপোর্টার বগুড়া থেকে জানান, বগুড়া সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ১১ পদাতিক ডিভিশন ও বগুড়া এরিয়া আয়োজিত অনুষ্ঠানে সকালে সদর দফতরে ও সকল ইউনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিকেলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ অঞ্চলের সংসদ সদস্য, শহীদ পরিবারের সদস্যগণ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ এবং সামরিক ও বেসামরিক পদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নেন। অতিথিদের স্বাগত জানান বগুড়া এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোঃ মোশফেকুর রহমান। এর আগে তিনি কেক কাটেন।
×