ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রামপালে গাছ মরে বিরাণ ॥ ৮ গ্রামের মানুষ বিপাকে

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ২২ নভেম্বর ২০১৬

রামপালে গাছ মরে বিরাণ ॥ ৮ গ্রামের মানুষ বিপাকে

বাবুল সরদার, বাগেরহাট ॥ রামপাল উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় হাজার হাজার গাছপালা মরে বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে বনজ, ফলজ, ওষুধি নির্বিশেষে গাছ মরছে। এমনকি ধান, শাকসবজিও চাষ করা যাচ্ছে না। ঘের ও পুকুরের মাছ মরে গেছে। এখানে অধিকাংশ রাস্তাঘাট মাটি-বালির নিচে চাপা পড়েছে। মংলা-ঘষিয়াখালী খালের খননকৃত অতিরিক্ত লবণ মাটি-বালি অপরিকল্পিত যত্রতত্র ফেলার (ডাম্পিং) কারণে নির্বিচারে গাছ-গাছালি মরে যাচ্ছে। চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ওই এলাকায় কমপক্ষে ৮ গ্রামের সাধারণ মানুষ পড়েছে মহাবিপাকে। বাঁশতলী ইউনিয়নের উত্তর বাঁশতলীর বিস্তীর্ণ এলাকায় সবধরনের গাছপালা মরে যাচ্ছে। ঘষিয়াখালী খাল খনন করে বিআইডব্লিউটিএ পাইপলাইনের মাধ্যমে ওই অঞ্চলে মাটি বালি ফেলার কারণে হাজার হাজার গাছপালা অন্তত ৩-৪ ফুট মাটির নিচে পড়েছে। দেখা গেছে- আম, জাম, কাঁঠাল, নারকেল, সুপারি, তাল, তেঁতুল, সবেদাসহ সব ধরনের ফলজ ও বনজ গাছপালা মরে বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় আগুনে পুড়ে গেছে গাছপালা। গাছপালার তলায় ছোট ছোট ঘরবাড়িতে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থার মধ্য বসবাস করছে সাধারণ মানুষ। মংলা-ঘষিয়াখালী খালের খননকৃত মাটি অপরিকল্পিতভাবে ফেলার কারণে রাস্তাঘাটের কোন চিহ্ন নেই। লবণাক্ত মাটি বালির উপর গাছপালা লাগালেও কোন লাভ হচ্ছে না। অনেকে মরা গাছপালা পানির দরে বিক্রি করছে। গ্রামবাসীর মনে করছেন, মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ত মাটি যত্রতত্র ফেলার কারণে গাছপালা মরে যাচ্ছে। এতে যে ক্ষতি হয়েছে তা আগামী ২৫ বছরেও পূরণ হবে না। তারা এজন্য বিআইডব্লিউটিএকে দায়ী করছেন। এক সময় এই এলাকা নিচু থাকলেও প্রতিনিয়ত জোয়ার ভাটার পানি ওঠা-নামা করত। কিন্তু সেসময় গাছপালার তেমন ক্ষতি হয়নি। এবার বিআইডব্লিউটিএ লবণযুক্ত মাটি বালি ফেলার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান। এখানে রামপাল উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আবু সাঈদের বাড়ি। তিনি বলেন, ড্রেজার থেকে ফেলা দূষিত পানি ও বালিমাটির কারণে গাছপালা মরে গেছে। নদীর তলদেশে জমে থাকা বালু ও মাটির সংমিশ্রণ আর তীব্র লবণাক্ততার কারণে এ এলাকা এখন বিরাণ। এ এলাকার অনেক ঘের ও পুকুরের মাছ মরে গেছে।
×