ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডোর হ্যাটট্রিকে উড়ে গেল এ্যাটলেটিকো

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২১ নভেম্বর ২০১৬

রোনাল্ডোর হ্যাটট্রিকে উড়ে গেল এ্যাটলেটিকো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আবারও জ্বলে ওঠলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। শনিবার ক্যারিয়ারের ৩৯তম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করলেন তিনি। আর তার হ্যাটট্রিকের সৌজন্যেই লা লিগায় তিন মৌসুম পর মাদ্রিদ ডার্বি জিতল রিয়াল। ভিসেন্তে ক্যালডেরনে জিনেদিন জিদানের দল এদিন ৩-০ গোলে হারিয়েছে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে। সেইসঙ্গে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটাকে আরও মজবুত করল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। এর আগে লা লিগায় সমর্থকদের হতাশ করেছে রিয়াল মাদ্রিদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনা। লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজবিহীন কাতালান ক্লাবটি এদিন গোলশূন্য ড্র করেছে। তাও আবার নয়জনের দল মালাগার সঙ্গে। এর ফলে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান দাঁড়াল চার। মৌসুমের প্রথম ১২ ম্যাচ থেকে জিদানের দলের সংগ্রহ ৩০ পয়েন্ট। আর সমান সংখ্যক ম্যাচ থেকে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রয়েছে বার্সিলোনা। মে মাসে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে এই এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়েই ইউরোপ সেরার মুকুট পরেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই ম্যাচে স্পট কিকে গোল করেছিলেন রিয়ালের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এবার লা লিগাতেও রিয়ালকে জেতালেন সেই রোনাল্ডো। দীর্ঘ তিন মৌসুম পর লা লিগায় প্রতিবেশীদের বিপক্ষে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল গ্যালাক্টিকোরা। ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা এ্যাটলেটিকোর গোলরক্ষক ইয়ান ওবালাকের বিপক্ষে পর্তুগীজ তারকার গোলটি অবশ্য কিছুটা সৌভাগ্যই বলা চলে। ১২ মিনিটে রোনাল্ডোর হেড অবশ্য রক্ষা করতে সেøাভেনিয়ান ওবালাক অবিশ^াস্য কিছুই করেছেন। কিছুক্ষণ পরে লুকা মদরিচকেও ওবালাকের কারণেই হতাশ হতে হয়। তবে ২১ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। রোনাল্ডোর ফ্রি-কিক ডিফেন্ডারদের দেয়ালে লেগে রিয়ালকে এগিয়ে দেয়। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফিরতে সবধরনের চেষ্টা করে স্বাগতিকরা। কিন্তু ম্যাচের ৭১ মিনিটে পেনাল্টি পায় রিয়াল। সহজ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রিয়ালের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রোনাল্ডো। তার পাঁচ মিনিটের ব্যবধানেই গ্যারেথ বেলের দুর্দান্ত ক্রস থেকে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন রিয়াল মাদ্রিদের পর্তুগীজ সুপারস্টার। সেইসঙ্গে মাদ্রিদ ডার্বিতে ১৮ গোল করে রিয়াল কিংবদন্তি আলফ্রেডো ডি স্টেফানোকেও ছাড়িয়ে যান রোনাল্ডো। এর ফলে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে সফরকারীরা। ম্যাচ শেষে দারুণ তৃপ্ত জিনেদিন জিদান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দারুণ এক জয়। কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই আমরা অসাধারণ খেলেছি। খুব কম দলই এখানে খেলতে এসে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে। লীগে শেষ চার ম্যাচের তিনটিতেই পরাজয়। চরম দুঃসময়ের মধ্যে এখন এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তবে কোচ দিয়েগো সিমিওনে অবশ্য এখনও দারুণ আশাবাদী। এই পরাজয়ে রিয়ালের থেকে ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে এ্যাটলেটিকো। সিমিওনে বলেন, সব মিলিয়ে প্রথামার্ধে তারা আমাদের চেয়ে ভাল খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধেও প্রথম ২০ মিনিট আমরা বেশ কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করেছি। তাদের চেয়ে বলের নিয়ন্ত্রণও আমাদের বেশি ছিল। কিন্তু পেনাল্টি আদায় করে ম্যাচ নিজেদের করে নিয়েছেন তারা। অধিনায়ক সার্জিও রামোস, পেপে, কাসেমিরো, টনি ক্রুস, আলভারো মোরাতা ও করিম বেনজামার মতো গুরুত্বপূর্ণ ছয় খেলোয়াড়কে ছাড়াই মাঠে নামে রিয়াল। তারপরও অসাধারণ এক জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন তারা। এদিকে দিনের প্রথম ম্যাচে ন্যুক্যাম্পে মাঠে নামার আগে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মেসি। আর বহিষ্কার হওয়া সুয়ারেজকে ছাড়া ২০১৪ সালের পরে প্রথম মালাগা সফরটিকে স্মরণীয় করে রাখতে পারল না। ম্যাচ শেষে বার্সা অধিনায়ক সার্জিও বাসকোয়েট বলেন, ‘তারা দু’জনই আমাদের মূল খেলোয়াড়। বেশিরভাগ ম্যাচে তারাই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। দলের দুই মূল স্ট্রাইকারকে ছাড়া আক্রমণভাগে পুরো দায়িত্বটাই ছিল নেইমারের কাঁধে। কিন্তু মালাগার শক্তিশালী রক্ষণভাগের বিপক্ষে নেইমার তেমন কিছুই করে দেখাতে পারেননি। এমনকি ম্যাচ শেষে ২১ মিনিট আগে দিয়েগো লোরেন্টে নেইমারকে পিছনে থেকে চ্যালেঞ্জ করে লাল কার্ড পেলে মালাগা ১০ জনের দলে পরিণত হয়। একজন খেলোয়াড় কম পেয়েও মালাগাকে পরাস্ত করতে পারেনি বার্সিলোনা। স্টপেজ টাইমে কার্লোস কামেনিও লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ত্যাগ করলে মালাগাকে ৯ জন নিয়েই ম্যাচ শেষ করতে হয়েছে। দিনের আরেক ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও দেপোর্তিভো লা করুনার বিপক্ষে ৩-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে সেভিয়া। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে সেভিয়া।
×