ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্যকর শীতের ফল

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২১ নভেম্বর ২০১৬

স্বাস্থ্যকর শীতের ফল

‘গড নিউ হোয়াট হি ওয়াজ ডুয়িং হোয়েন হি মেড ফ্রট এ্যান্ড ভেজিটেবলস।’ অর্থাৎ ঈশ্বর ফল ও সবজি সৃষ্টির সময় ভালভাবেই জানতেন, তিনি কেন এগুলো তৈরি করছেন। এ উক্তিটি করেছেন খ্যাতনামা পুষ্টিবিশারদ জেমস জোসেফ। এর অর্থ মানুষের কী কী কাজে কখন এগুলো লাগবে, তা তিনি জেনেই ফলফলাদি তৈরি করেছেন। যেমন আমাদের অঞ্চলে শীতের সময় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার দরকার। তাই বছরের এ সময়টিতে উৎপাদিত হয় কমলা (উল্লেখ্য, কমলা, বাতাবি লেবু ইত্যাদি ফল ঠাণ্ডাজনিত রোগপ্রতিরোধে শুধু ভিটামিন সি-ই জোগায় না, এগুলো সরাসরি রক্তে কোলেস্টেরল কমায় এবং হƒদরোগ প্রতিরোধ করে)। এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদদের তথ্য হচ্ছে, ফল থেকে জুস তৈরি করা হলে ফলের আশ নষ্ট হয়ে যায়। আর জুস দ্রুত রক্তে মিশে গিয়ে ব্লাড সুগার বাড়াতে সাহায্য করে। পাশাপাশি অধিক ক্যালরি খাওয়া হয়। যদি ছালসহ তাজা ফল খাওয়া হয়, তাহলে প্রচুর ফাইবার বা আঁশ পাওয়া যায়। ফলের আঁশ একদিকে যেমন- ব্লাড সুগার দ্রুত বাড়তে দেয় না, অন্যদিকে আঁশ ওজন নিয়ন্ত্রণ ও কনস্টিপেসন সমস্যা থেকে রক্ষায় বেশ কার্যকর। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত টিনজাত, বোতলজাত ও প্যাকেটজাত ফলের রসে অন্যান্য প্রিজারভেটিভস ও এ্যাডিটিভস মিশানো হয়। এসবও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আমেরিকান একাডেমি অব নিউট্রিশন এ্যান্ড ডায়েটিকসের বিশেষজ্ঞের মতে, ফলের জুস অপেক্ষা তাজা ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। শীতে আরও কিছু ফলের ব্যাপক উৎপাদন হয়। কমলা কমলাকে শীতের ফলের রাজা বলা হয়। গুণে ও মানে এর তুলনা নেই। কমলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবার ভিটামিন সি-এর ঘাটতি পূরণে সমান এবং রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যারা হৃদরোগী তাদের জন্য কমলা খুবই উপকারী। যারা অপুষ্টিতে ভুগছে তারা এই শীতকালে প্রতিদিন একটা কমলা খেলে অপুষ্টি দূর হবে। কুল শীতের জনপ্রিয় ফল কুল। কুল নানা জাতের হয়। যেমন নারকেল কুল, আপেল কুল, বাউ কুল ইত্যাদি। সব কুলই উপকারী। ফোঁড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, হৃদরোগ, প্রদর, রক্ত আমাশয়, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা কুল, কুলের পাতা, ছাল সমাধান করতে পারে। আপেল কথায় বলে, যদি প্রতিদিন একটি আপেল খাও, ডাক্তার দূরে থাকবে। অর্থাৎ দিনে একটি আপেল খেলে সুস্থ থাকা যায়। যারা অল্পে রেগে যায়, অনিদ্রায় ভোগে তারা প্রতিদিন একটি লাল আপেল খোসাসহ খেলে সমস্যা চলে যাবে। শিশুর হজমশক্তি কমে গেলে লাল আপেল বেটে রস খাওয়ালে বদহজম ও হজমশক্তিহীনতা দূর হবে। আপেল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া দূর হয়। নিয়মিত আপেল খেলে কোলন ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। সফেদা সফেদা দেখতে খুব একটা সুন্দর নয়, কিন্তু এর মতো মিষ্টি স্বাদ এবং সুগন্ধযুক্ত ফল বোধ হয় বাংলাদেশে আর নেই। সফেদা নানা গুণে সমৃদ্ধ। অপুষ্টি, পরিশ্রমজনিত ক্লান্তি, হার্টের দুর্বলতা, প্রসবজনিত দুর্বলতা, মায়ের বুকের দুধের স্বল্পতা প্রভৃতি সমস্যা পাকা সফেদা খেলে সমাধান হয়। ডালিম আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তিন ধরনের ডালিমের উল্লেখ পাওয়া যায়Ñ মধুর ডালিম, কষায় ডালিম ও টক ডালিম। মধুর ডালিমের দানা বেশি লাল ও রসালো এবং অধিক উপকারী। আমাশয়, হৃদরোগ, লিভার বৃদ্ধি, অনিদ্রা, অজীর্ণ, রক্তপিত্ত, অরুচি, কৃমি, শ্বেতপ্রদর, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় ডালিম উপকারী। যাপিত ডেস্ক
×