ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশী চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বিষয়ে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত ॥ ইনু

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২১ নভেম্বর ২০১৬

বিদেশী চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বিষয়ে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত ॥ ইনু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনুমোদিত বিদেশী চ্যানেলে বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সচিবালয়ে রবিবার টেলিভিশন চ্যানেল মালিক, কলাকুশলী, বিজ্ঞাপনদাতাদের সংগঠন মিডিয়া ইউনিটি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তথ্যমন্ত্রী এ কথা জানান। মিডিয়া ইউনিটির আহ্বায়ক ও একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, বিদেশে চলা কোন চ্যানেলে বাংলাদেশের কোন ব্যবসায়ী পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে পারে। এজন্য একটি আইন আছে, সে অনুযায়ী বিজ্ঞাপনের জন্য একটি যৌক্তিক পরিমাণ টাকা বিদেশে নিতে পারে। কিন্তু যে টিভিটা বিদেশে দেখাই যায় না, সে টিভির নাম দিয়ে ডলার যদি বিদেশে পাঠাই, সেটা কি মানিলন্ডারিং নয়, এটা কি অবৈধ অর্থ পাচার নয়, চরম অন্যায় নয়? বৈধ পথের চেয়ে এজন্য অবৈধ পথে অনেক বেশি টাকা যাচ্ছে। তিনি বলেন, কিছু বিদেশী চ্যানেল আমাদের এখানে দেখানো হয়। যে দেশের চ্যানেল সেখানে যে বিজ্ঞাপন ও অনুষ্ঠান দেখানো হয় না, তা আমাদের এখানে দেখানো হয়। স্টার জলসা নিজেরাই বলছে, বাংলাদেশ ও ভারতে ভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখা যাবে। তারা বলছে বাংলাদেশের জন্য পৃথক বিজ্ঞাপন তারা ইনসার্ট করবে। তারা বিদেশী টিভিতে বিজ্ঞাপন দিতে টাকা নিল কিন্তু ওই টিভি তো বিদেশে দেখাই যাচ্ছে না। ওই বিজ্ঞাপন তো আমাদের এখানেই দেখানো হচ্ছে। এরা অবৈধভাবে বাংলাদেশে ব্রডকাস্ট করছে, ফিড বদলাচ্ছে। একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, ওরা (এসব কাজে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশী) হয়ত বলবে আমি তো জড়িত নই। কিছু দলিল দেখিয়ে তিনি বলেন, এখানে আপনি দেখেন স্পষ্ট লেখা হয়েছে তারা নিজেরাই বলছে, আওয়ার স্ট্রং নেটওয়ার্ক- আনন্দ আলো, চ্যানেল আই, রেডিও ভূমি, সাপ্তাহিক, ইনসেপটা, হাবাস মিডিয়া, ইন ফোকাস। তারা নিজেরাই বলছে আমাদের নেটওয়ার্ক আমরা এ কাজ করছি। ভারতের বিভিন্ন বাংলা চ্যানেলে এ কাজ হচ্ছে। প্রত্যেকটির জন্য আলাদা লিফলেট আছে। মিডিয়া ইউনিটির উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ী নেতা সালমান এফ রহমান বলেন, বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে যেটা হচ্ছে তা বেআইনী হচ্ছে। দেশেই মার্কেটিংয়ের জন্য বিদেশী চ্যানেল ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া বিদেশে বিজ্ঞাপনের রেট তো দেখা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক বিজ্ঞাপনের জন্য ৫ টাকার পারমিশন দিল, বিজ্ঞাপন ১০০ টাকার বাকি ৯৫ টাকা সে কেমন করে দিল। তার সঙ্গে তো প্রেম-প্রীতি ভালবাসা নেই। আমি মনে করি এটা ইমিডিয়েটলি বন্ধ করা প্রয়োজন। ২০০৬ সালের কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন তুলে ধরে মোজাম্মেল বাবু মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আইনের ১৯(১৩) ধারায় বলা হয়েছে বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য বিদেশী কোন চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। এ আইন অনুযায়ী আপনি বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করে দিতে পারেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশী চ্যানেল ডাউন লিঙ্ক ও বিদেশী চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের বিষয়ে আইনে যা যা আছে তা সবই কার্যকর করব। কিন্তু আমি এটুকু বলি, এ ব্যাপারে কোথায় কোথায় আইনের বরখেলাপ হচ্ছে সেটা আমরা পরীক্ষা করব এবং পরীক্ষা করে এ ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব। যদি আইনে অপর্যাপ্ততা থাকে, ঘাটতি থাকে তাহলে তা পূরণ করার জন্যও আইন সংশোধন করার চেষ্টা করব। তিনি বলেন, অনুমোদনপ্রাপ্ত চ্যানেলে কিছু প্রোগ্রামে এদিক-ওদিক হচ্ছেÑ এ বিষয়টা আজ আমাদের নজরে এসেছে। কোন্ কোন্ টিভি চ্যানেল সম্প্রচারের কোন্ কোন্ জায়গাগুলো ভঙ্গ করছে তা জানিয়ে সহায়তা করুন। আগামী বছর সম্প্রচার কমিশনের যাত্রা শুরু ॥ একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি খসড়া সম্প্রচার আইন তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। আরও মতামত নিয়েছি। সবকিছু প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে। আশা করছি আগামী শীতকালীন অধিবেশনে সম্প্রচার আইনটি সংসদে পাঠাতে পারব। এর আগে ডিসেম্বর মাসের ভেতরেই মন্ত্রিপরিষদে উত্থাপন করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস। হাসানুল হক ইনু বলেন, সম্প্রচার আইনে দুটি অংশ, সম্প্রচার আইনের সঙ্গে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন আধা-বিচারিক সম্প্রচার কমিশন গঠনের বিধান আছে। আমরা আশা করছি সংসদ যদি এটা অনুমোদন দেয় ২০১৭ সালের জুন মাসের মধ্যেই সম্প্রচার কমিশন আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করতে পারবে।
×