ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্তে আইনশ্ঙ্খৃলা বাহিনী সতর্ক ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২১ নভেম্বর ২০১৬

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্তে আইনশ্ঙ্খৃলা বাহিনী সতর্ক ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সচিবালয়ে রবিবার জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। এরা বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-েও জড়িয়ে পড়ছে। এ দেশে কিছুদিন থেকে তারা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে বিভিন্ন দেশে পাড়িও জমিয়েছে। এমনকি বিভিন্ন দেশে গিয়ে অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে সেখানে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করারও নজির তৈরি করেছে। এছাড়া দেশের মধ্যেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়ার নজির রয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সেল এদের নিয়ে কাজ করছে। তারা বাংলাদেশ সরকারকে এদের বিষয়ে সহনশীল হওয়ার কথা বিভিন্ন সময়ে বললেও, তাদের দেশে আশ্রয় দেয়ার প্রশ্নে তারা নীরব থাকে। এদিকে মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সম্প্রতি দেশটির সামরিক বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিযানে ১৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাড়িছাড়া হয়েছে এবং অন্তত ৬৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। তবে একজন রোহিঙ্গা নেতা বিবিসিকে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে কমপক্ষে সাড়ে তিন শ’ লোক নিহত হয়েছে। বাড়িঘরহীন রোহিঙ্গারা জলপথে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ অবস্থায় বর্ডার (সীমান্ত) অতিক্রম করে মিয়ানমারের কেউ যেন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য বিজিবি (বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ), কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধের বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রায় তিন লাখ ৮ হাজার চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালিয়ে ৯ হাজার ৮৬২ জন চোরাচালানিকে আমরা গ্রেফতার করেছি এবং ১২শ’ ৬১ কোটি টাকার মালামাল এ পর্যন্ত আটক হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা শীঘ্রই চেকপোস্টে স্ক্যানিং মেশিন ও এর ব্যবহার চালু করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চোরাচালান অভিযান ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে অভিযানের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে বর্ডার এলাকায় অভিযান আরও বাড়ানো হবে এবং নিয়মিত মনিটরিং করা হবে। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র দেশে প্রবেশ রোধে সীমান্ত এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বয় করা হবে। সভায় চোরাচালান মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া আরও গতিশীল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বিভাগওয়ারি চোরাচালান মামলায় এক হাজার ৪৮৮ জন আসামি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও নির্মূলের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণের সমন্বয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সভায় আলোচনা করা হয়। সীমান্ত এলাকায় অত্যাধুনিক সার্ভিলেন্স ডিভাইস স্থাপনের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তেজস্ক্রিয় পদার্থ যাতে বাংলাদেশে না আসে সেজন্য আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন এন্ট্রি পয়েন্টে যেখান দিয়ে বিদেশ থেকে মালামাল আসে, সেখানে আমাদের এ ডিভাইস স্থাপনের জন্য সভায় আলোচনা হয়েছে।
×