ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হিলারির পরাজয়ের পর আরও বিপর্যয়ের হাতছানি

ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের সামনে উভয় সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৩:২৪, ২১ নভেম্বর ২০১৬

ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের সামনে উভয় সঙ্কট

ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের বিশাল তহবিল গঠন সক্ষমতার কি একই রকম দুর্ভোগ ঘটবে যেমন চুরমার হয়ে গেছে হিলারি ক্লিনটনের রাজনৈতিক আকাক্সক্ষা? হোয়াইট হাউসে প্রবেশের জন্য তার নির্বাচনী প্রতিযোগিতার সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন ও তাদের মেয়ের নামের এ অলাভজনক ফাউন্ডেশনের তহবিল গঠন ও ব্যবস্থাপনা কাজের জন্য এক লজ্জাকর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয় প্রতিষ্ঠানটির। এ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর প্রায় ২শ’ কোটি ডলারের তহবিল গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সে অর্থ একটা ব্যয়সহ ফিরে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বে বেশকিছু মানবহিতৈষী প্রকল্প পরিচালনা করছে এবং ২০১৪ সালে ২০ কোটি ডলারের বেশি রাজস্ব হিসাবে আদায় করেছে। তুলনামূলকভাবে অধিক জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা সত্ত্বেও ফাউন্ডেশন ২০১৬ সালের নির্বাচনে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। এর বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে ব্যাপকভাবে এবং বিদেশের সরকার ও অন্য প্রভাবশালী দাতাদের কাছ থেকে গৃহীত বিশাল চাঁদার বড় অংশের ব্যাপারে স্বার্থের দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ফাউন্ডেশনের পাবলিক ডাটাবেজে উল্লেখ করা হয়, সংস্থাটির শুরু থেকে লাখ লাখ বড় ডোনার প্রতষ্ঠানটির দিকে ঝুঁকে পড়েন। ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের তহবিল সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচনে কিভাবে প্রভাব ফেলবে তা প্রকাশ করা হয়েছে উইকিলিকসের ই-মেইলগুলোয় এবং তাতে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগের। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আগস্টে এক ঘোষণায় বলেছেন, হিলারি ক্লিনটন তার প্রচারাভিযানে সাফল্য অর্জন করলে এ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট ও বিদেশী দান বাতিল করে দেবেন। কিন্তু দেশ এখন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিষিক্ত করতে প্রস্তুত। বিষয়টি তাই বিতর্কিত হয়ে উঠবে, বলেছেন জনহিতৈষী বিশেষজ্ঞরা। কারণ, ক্লিনটন বা হিলারি কেউ-ই অদূর ভবিষ্যতে সরকারের কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় আসবেন না। তাই অন্তত কিছুসংখ্যক বড় ডোনারের ফাউন্ডেশনের প্রতি ইচ্ছার অবসান ঘটবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, হিলারি ক্লিনটনকে ভবিষ্যত প্রেসিডেন্ট হিসেবেও আর মনে করা হবে না। চাঁদাদানকারীরা অন্যদিকে ঝুঁকবেন এবং ফাউন্ডেশন এর সুযোগ ও অগ্রাধিকার বিষয়গুলোর ব্যাপারে নতুন কনে ভেবে দেখবে হয়ত। সিএনবিসি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মন্তব্য চাইলে ফাউন্ডেশন কোন সাড়া দেয়নি। ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিলি ফ্যামিলি স্কুল অব ফিল্যানথ্রপির অধ্যাপক লেজলি লেংকোস্কি এক সাক্ষাতকারে সিএনবিসিকে বলেছেন, আমি মনে করি, সংস্থাটির তহবিল গঠন আরও অনেক দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, হিলারি ক্লিনটনের বাস্তবত সামনে কোন রাজনৈতিক ভবিষ্যত নেই যদিও তারা দুজনই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও অন্যজন ভবিষ্যত প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেশ কিছুসংখ্যক ডোনারের কাছে ছিলেন আকর্ষণীয়। নরওয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও কুয়েতের সরকারগুলোর মতো প্রভাবশালী ডোনারদের কাছ থেকে বেশকিছু বড় প্রতিবন্ধকের সম্মুখীন হয়েছে ফাউন্ডেশন। সানলাইট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জন ওন্ডারলিচ বলেছেন. হিলারি ক্লিনটনের ব্যর্থ রাজনৈতিক আকাক্সক্ষা ফাউন্ডেশনের জন্য এক দ্বিধারী তলোয়ার বা উভয় সঙ্কট হয়ে উঠতে পারে এবং তার এ নিষ্ফল আকাক্সক্ষার কারণে ফাউন্ডেশন আরও প্রথাগত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপ নেবে। Ñসিএনবিসি
×