ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা

‘গণমানুষের অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত’

প্রকাশিত: ০৮:০৬, ২০ নভেম্বর ২০১৬

‘গণমানুষের অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মানুষের বাস্তব জীবনের চিত্র তুলে এনে গবেষণার মাধ্যমে আবুল বারকাত নতুন এক অর্থনীতির জন্ম দিয়েছেন। নতুন দুটি গ্রন্থে তিনি অবহেলিত আদিবাসী সমাজের করুণ চিত্র যেমন তুলে এনেছেন, তেমনি শঙ্কা প্রকাশ করছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিরুদ্দেশ হওয়া নিয়েও। সমাজ থেকে ধীরে ধীরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হারিয়ে যাচ্ছে, বছরে দুই লাখ ৩০ হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ নিরুদ্দেশ বা দেশত্যাগে বাধ্য হচ্ছে। মানুষ হিসেবে মানুষের করুণ চিত্র তুলে ধরা, মানুষের জীবনের সঙ্গে অর্থনীতির যে গভীর সম্পর্ক- সেই বন্ধনে সবাইকে এনে তিনি যে গবেষণা করে যাচ্ছেন, এর ফলশ্রুতিতেই তিনি হয়ে উঠেছেন গণমানুষের অর্থনীতিবিদ। শনিবার বিকেলে ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে গণমানুষের অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত রচিত ‘পলিটিক্যাল ইকোনমি অব আনপিপলিং অব ইনডিজিনিয়াস পিপলস : দ্য কেস অব বাংলাদেশ’ এবং ‘বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ গ্রন্থদ্বয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তরা এসব কথা বলেন। এ সময় আমন্ত্রিত অতিথিরা বই দুটির মোড়ক উন্মোচন করেন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানব উন্নয়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে জনকল্যাণকামী কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের কোন বিকল্প নেই। আবুল বারকাত দেখিয়েছেন এটা শ্রেণী সমস্যা। এতদিন আমরা খুব ভাবিনি যে, এ দেশের আদিবাসীদের ভূমি সমস্যাকে সামগ্রিক জাতীয় কৃষি-ভূমি সমস্যার নিরিখে দেখতে হবে। সন্তু লারমা বলেন, বাংলাদেশের জমি-জলা-বন ও সাধারণ মানুষের সম্বন্ধে জানতে চাইলে বই দুটির বিকল্প নেই। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে যে, সংস্কার কে করবে- সেই দিকনির্দেশনারও প্রয়োজন আছে। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, গোবিন্দগঞ্জে আদিবাসী মানুষদের গুলি করে হত্যা করল পুলিশ। সেখানকার চেয়ারম্যান, এমপি ও মিলের ব্যবস্থাপক আব্দুল আওয়াল যেভাবে নারীদের লাঞ্ছিত করল, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিল- মানবিক জীবনে এমন নির্মম ঘটনা আর হতে পারে না। বারবার সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, বিচার হয় না। যে কোন মূল্যে আদিবাসীদের রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ভূমি-বন যদি মা হয়, তাহলে কেন মাকে আমরা দলিল করব। ধরিত্রী আমাদের নয়, আমরাই ধরিত্রী। আমি মনে করি আমিই ভূমি। অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ড. জালালউদ্দিন আহমেদ। এ সময় অধ্যাপক অজয় রায়, অধ্যাপক গোলাম রহমান, পঙ্কজ ভট্টাচার্য প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
×