স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচন কমিশন গঠনে খালেদা জিয়ার প্রস্তাবনায় আওয়ামী লীগ যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তা আগে থেকেই তৈরি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। তার পুরোটাই মানতে হবে সে কথা বলা হয়নি। এ প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে। এই প্রস্তাব যে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে তা নয়। আসুন আলোচনার মাধ্যমে পরিবর্তন করি। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করলে এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়া উচিত উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আগামীতেও নীল নক্সার নির্বাচন করতে চায় বলেই এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। মূলত আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারানোর ভয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য খালেদা জিয়ার দেয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচা মেলা মিলনায়তনে জিয়া নাগরিক ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ৭ নবেম্বর এবং জিয়া আমার চেতনা স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বক্তব্য শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আওয়ামী লীগ ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় তাদের প্রতিক্রিয়া আগেই তৈরি ছিল। এমনভাবে তৈরি করে রাখা হয়েছিল যে বক্তব্যের পরই তারা প্রত্যাখ্যান করবে। যেমন বাজেট দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিছিল বের হয় ‘মানি না মানি না। গণবিরোধী বাজেট মানি না এরকম ব্যানার তৈরি করা থাকে। আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া একইভাবে তৈরি করা ছিল।
গত শুক্রবার বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে কতিপয় প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সেখানে তিনি সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি পরামর্শ দেন যে নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে সব দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি পৃথক বৈঠক করবেন। বৈঠকে রাজনৈতিক দল থেকে যেসব নাম প্রস্তাব করা হবে বাছাই কমিটি তৈরি করে সেখান থেকে ১০ জনের নাম বাছাই করতে হবে। ১০ জনের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি সবার গ্রহণযোগ্য বক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য কমিশন গঠন করবেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার এ প্রস্তাব ওইদিনই প্রত্যাখ্যান করেছে আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উল্লেখ করেছেন খালেদা জিয়ার ফর্মুলা অন্তঃসারশূন্য। খালেদা জিয়ার এ ধরনের প্রস্তাবে জাতির সঙ্গে তামাশ উল্লেখ করেছেন। বলেন, সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৪৫ মিনিট ধরে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে নতুন কিছু নেই।
আওয়ামী লীগের এই প্রস্তাবনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল আরও উল্লেখ করেন, এটাকে তারা প্রত্যাখ্যান করবে আগে থেকে তা তৈরি করে রেখেছিল। বেগম খালেদা জিয়ার প্রস্তাব শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন সাংবাদিক বললেন আওয়ামী লীগ এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি চেয়ারপার্সন একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী হলে তাদের উচিত হবে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা। কারণ খালেদা জিয়ার প্রস্তাব পুরোটা মানতে হবে সেটা কোথাও বলা হয়নি। এ প্রস্তাবের ওপর ওপর ভিত্তি করে সব দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে।