ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আজ গোয়ালমারী জামালকান্দি যুদ্ধ দিবস

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২০ নভেম্বর ২০১৬

আজ গোয়ালমারী জামালকান্দি যুদ্ধ দিবস

নিজস্ব সংবাদদাতা, দাউদকান্দি, ১৯ নবেম্বর ॥ রবিবার গোয়ালমারী-জামালকান্দি যুদ্ধ দিবস। এই দিনে যুদ্ধে শহীদ হন ১১ মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ২০ নবেম্বর ছিল পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। ভোর হয় হয় অবস্থা, মসজিদ থেকে ফজরের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। কেউ ঘুমের ঘোরে অচেতন আবার কেউবা তৈরি হচ্ছে নামাজ আদায় করতে। ঠিক এমনি সময়ে দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালমারী-জামালকান্দি এলাকা হানাদার পাক বাহিনীর মর্টার শেলের শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। গোয়ালমারীতে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প। ওই ক্যাম্পে হামলা করাই ছিল পাক হানাদারদের মূল উদ্দেশ্য। ঈদের দিনে অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলে সহজেই মুক্তিযোদ্ধাদের ঘায়েল করা যাবে ভেবে পাক সেনারা হামলা করেছিল। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস সরকার দাউদকান্দি বাজারের আলম ডিলারের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন ঈদের দিনে পাক সেনাদের গোয়ালমারী এলাকা আক্রমণের খবর। পাক সেনাদের মর্টার এবং রাইফেলের গুলির আওয়াজ শুনে মুক্তিযোদ্ধারাও শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ। শুরু হয় উভয়পক্ষের সম্মুখ লড়াই। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোয়ালমারী বাজার এবং জামালকান্দি এলাকা। ভোর সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত একটানা ১৫ ঘণ্টা যুদ্ধ চলে। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার জন্য পশ্চিম দিকের কালীর বাজার এবং মোল্লাকান্দি এলাকা দিয়ে এগিয়ে আসেন মতলবের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল অদুদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরাট বাহিনী। হানাদার বাহিনী উত্তর দিকে পিছু হটে তাদের দাউদকান্দি সদরের ডাকবাংলো ক্যাম্পে ফিরে যেতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। শেষদিকে উত্তর দিক থেকেও ঘিরে ফেলে মুক্তিযোদ্ধারা। কেউ বলেন এ যুদ্ধে ৭০ পাক সেনা নিহত হয়। পরদিন সকালে জামালকান্দি, লামছড়ি, দৌলদ্দি, কালাইরকান্দি, ডুনি নছরুদ্দি ও গোয়ালমারী এলাকায় ধানের মাঠ, খাল-বিল এবং ডোবা-নালায় পাক সেনাদের মৃতদেহ ভেসে ওঠে। এ যুদ্ধে শহীদ হন সুন্দলপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন এবং রফারদিয়া গ্রামের মোস্তাক আহমেদ। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে এবার দাউদকান্দির মুক্তিযোদ্ধারা গোয়ালমারী বাজারে মিলাদ মাহফিল ও স্মরণ সভার আয়োজন করেছেন।
×