ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জেনারেলদের সঙ্গে বৈঠককালে ন্যাটোর প্রতি পুতিনের হুঁশিয়ারি

রাশিয়া রক্ষায় সব কিছু করব

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২০ নভেম্বর ২০১৬

রাশিয়া রক্ষায় সব কিছু করব

রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ন্যাটোকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এ সামরিক জোটকে সতর্ক করে দেন যে, তিনি রাশিয়াকে রক্ষা করতে সবকিছুই করবেন। তিনি মাতৃভূমির প্রতি যে কোন হুমকি নিষ্ক্রিয় করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করতে গিয়ে ওই হুঁশিয়ারি দেন। তিনি শুক্রবার সোচিতে রুশ জেনারেল ও প্রতিরক্ষা শিল্প প্রধানদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। খবর যুক্তরাজ্যের ডেইলি স্টার ও রাশিয়া টুডে অনলাইনের। পুতিন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো ন্যাটোর বিশ্বব্যাপী এ্যান্টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসহ রাশিয়ার নিরাপত্তার প্রতি যে কোন সামরিক হুমকি কার্যকরভাবে নিষ্ক্রিয় করে দেয়া। তিনি বলেন, আমরা সামরিক শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সব কিছু করে যাব। এ ভারসাম্যই ঠা-া লড়াইয়ের সময় পরস্পর বিরোধী শিবিরগুলোর মধ্যে বড় ধরনের সাময়িক সংঘাত নিবৃত্ত করেছিল। রুশ নেতা তার শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওই বৈঠককালে রাশিয়ার শত্রুদের পরাজিত করতে উৎকৃষ্ট অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করে যাওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন। ধনাঢ্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্প ও পুতিন বন্ধুসুলভ আচরণ করে দু’পরাশক্তির মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা দূর করতে পারেন। কিন্তু নতুন প্রেসিডেন্ট ন্যাটোকে ‘সেকেলে’ বলে বর্ণনা করায় সামরিক জোট বিচলিত বোধ করছে। ন্যাটো প্রধানরা ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার এবং পুতিনের আক্রমণের মতো সবচেয়ে শোচনীয় পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। তবে পুতিন জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া কাউকে আক্রমণের পরিকল্পনা করছে না। তিনি ন্যাটোকে এত বিচলিত না হতে বলেন। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সোচি বৈঠকে পুতিন নির্ভিকচিত্তে তার পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দেয়ার চেষ্টা খুবই বিপজ্জনক হবে। তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ১৯৪০ ও ১৯৫০ এর দশকে গড়ে ওঠা এ শক্তির ভারসাম্য বিশ্বকে বড় রকমের সশস্ত্র সংঘাত পরিহার করতে সক্ষম করে তুলেছিল। তিনি বলেন, আমরা শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখতে সম্ভাব্য সব কিছুই করে যাব। পুতিন নতুন নতুন অস্ত্রের উন্নয়ন সম্পর্কেও কথা বলেন। যেমন রাশিয়ার নতুন হাইপারসোনিক ওয়ারহেড মাত্র ১৩ মিনিটে রুশ ঘাঁটি থেকে ব্রিটেনে পৌঁছতে পারে বলে ডেইলি স্টার অনলাইন জানায়। প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্বের নেতৃস্থানীয় শক্তিগুলো অস্ত্রোন্নয়নের জন্য বর্তমানে অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে কাজে লাগাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে লেন্সার প্রযুক্তি, হাইপারসাউন্ড প্রযুক্তি ও রোবটিকস। অন্যান্য দেশের মতো রাশিয়াও এরূপ গবেষণার ভিত্তিতে অস্ত্র তৈরি করছে। ভøাদ কোন সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন চুক্ত ‘বাতিল’ করার দায়ে পাশ্চাত্যকে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, কোন কোন দেশ দৃষ্টান্তস্বরূপ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতি রক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তি বাস্তবে রদ করছে। তিনি বলেন, যখন আমরা উন্নত অস্ত্র তৈরি করি তখন আমরা আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা কঠোরভাবে পালন করি। কিন্তু অন্য কোন কোন দেশ আগের চুক্তিগুলো রহিত করছে বলে আমরা সবাই জানি। এ্যান্টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে তাই ঘটেছিল। তিনি ২০০২ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের প্রশাসনের এবিএম চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করছিলেন। মস্কো রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল করার চেষ্টার দায়ে যুক্তরাষ্ট্র ও এর ন্যাটো অংশীদারদের অভিযুক্ত করে থাকে। সেই উদ্দেশ্যেই তারা রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্রের মোকাবিলা করার উপায় উদ্ভাবন, রুশ সীমান্তের দিকে ন্যাটোকে সম্প্রসারিত এবং বড় ধরনের হামলায় ব্যবহার করা যেতে পারে এমন উন্নত প্রচলিত অস্ত্র প্রযুক্তির উন্নয়ন করছে বলে রাশিয়া মনে করে। পুতিনের মনোযোগ এখন সিরিয়ার দিকেই কেন্দ্রীভূত। কারণ তার ঘনিষ্ঠমিত্র বাশার আল আসাদকে সহায়তা করতে এবং ইসলামিক স্টেটকে ধ্বংস করতে রুশ বিমান সেখানে হামলা চালাচ্ছে।
×