ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিউইয়র্কে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষে শিনজো আবে

আস্থার সম্পর্ক গড়তে চাই

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

আস্থার সম্পর্ক গড়তে চাই

জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর আস্থা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে বিজয়ী রিপাবলিকান প্রার্থীকে অভিনন্দন জানাতে গেলে তাদের মধ্যে ৯০ মিনিটের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের এটিই কোন বিশ্ব নেতার সঙ্গে প্রথম সরাসরি বৈঠক। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের। আবে সাংবাদিকদের বলেন, আজকের আলোচনার ফলে আমি বুঝতে পেরেছি যে, ট্রাম্প এমন একজন নেতা যার ওপর আমি বিরাট আস্থা স্থাপন করতে পারি। আমি মনে করি, আমরা আস্থার এক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি। বৈঠক এক উষ্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় বলে তিনি জানান। নির্বাচনী অভিযান চলাকালে ট্রাম্পের কিছু কিছু কথাবার্তা জাপানসহ মার্কিন মিত্রদের মনে আশঙ্কার সৃষ্টি করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান অন্যতম বড় মিত্র হিসেবে কাজ করে এসেছে। সেই সময় যুক্তরাষ্ট্র জাপানের অর্থনীতি পুনর্গঠনে সহায়তা করে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করার সঙ্কল্প ব্যক্ত করেন। কিন্তু আবে চীনের অর্থনৈতিক শক্তির ক্রমবৃদ্ধি রোধ করার অন্যতম উপায় হিসেবে ওই চুক্তি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন। চুক্তিটি জাপানের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়, যদিও ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি বাতিল করার সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্প আরও বলেন যে, জাপানের ভূখ-ে মোতায়েন হাজার হাজার মার্কিন সৈন্যের ভরণপোষণের জন্য টোকিওর আরও অর্থ পরিশোধ করা প্রয়োজন। তিনি এ ধারণা ব্যক্ত করেন যে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি মোকাবেলার জন্য জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে তাদের নিজস্ব পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা উচিত। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষে আবে বলেন, আমরা উল্লেখযোগ্য সময় ধরে এক স্বচ্ছ আলোচনায় মিলিত হতে সক্ষম হই। আবে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে পেরু যাওয়ার পথে নিউইয়র্কে ওই বৈঠকে মিলিত হন। জাপানী নেতা বৈঠক সম্পর্কে বিস্তারিত তেমন কিছু জানাননি। তবে দুই নেতা ব্যাপক সংখ্যক ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনার জন্য আবারও মিলিত হতে একমত হন বলে তিনি জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পারেন মিট রমনি ॥ এনএসএনবিসি জানায়, ট্রাম্প তার অন্যতম কড়া রিপাবলিকান সমালোচক মিট রমনিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ করার কথা ভেবে দেখতে পারেন। ট্রাম্প ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ওই সাবেক গবর্নরের সঙ্গে সপ্তাহান্তে এক বৈঠকে মিলিত হবেন বলে মনে করা হয়। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর সিনেটর জেফ সেসনস সাংবাদিকদের বলেন, আমার মনে হয়, রমনি অনেক কিছু করতে ভালভাবেই সক্ষম হবেন। রমনি ট্রাম্পকে অভদ্র, অসৎ ও মার্কিন মূল্যবোধ বিবর্জিত বলে অভিহিত করেন। তিনি সব বিদেশী মুসলিমের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার মতো প্রস্তাব করার দায়ে ট্রাম্পের নিন্দা করেন। ২০১২ সালে রমনি রাশিয়াকে সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক হুমকি বলে অভিহিত করেন। এটি ট্রাম্পের নীতির একেবারেই বিপরীত। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। রমনি ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বারাক ওবামার কাছে পরাজিত হন। আগের খবরে বলা হয়, সাউথ ক্যারোলিনার গবর্নর নিকি হ্যালিকে শীর্ষ কূটনীতিকের দায়িত্ব দিতে পারেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ নারী ট্রাম্পের টিমে বিরল বৈচিত্র আনবেন। হ্যালি বৃহস্পতিবার ট্রাম্প টাওয়ালে যান, কিন্তু তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র রুডি জুলিয়ান্টিকে নিয়োগ করা হতে পারে এমন খবরও বেরিয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাম্পের সমর্থক। তবে তার মনোনয়ন সিনেটে অনুমোদিত হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি তার ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে কড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে পড়তে পারেন। এদিকে নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ট্রাম্পের অন্তর্বর্তী টিমের নেতা মাইক পেন্স বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে কাজ করতে পারবে, এ নিয়ে তিনি আস্থাশীল। সিনেট ডেমোক্র্যাটিক লিডার চাক সুমার ও হাউস ডেমোক্র্যাটিক লিডার ন্যান্সি পেলোসির সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে পেন্স বলেন, আমরা যাতে মতৈক্যে পৌঁছা ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজে পেতে পারি, আমি সেই অপেক্ষায় রয়েছি।
×