ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়া নগরীর বেশিরভাগ সড়ক বেহাল

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

বগুড়া নগরীর বেশিরভাগ সড়ক বেহাল

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ পৌর এলাকাকে সিটি কর্পোরেশন রূপান্তর করা নিয়ে মাঝে মধ্যেই তোড়জোড় শুরু হয়। অথচ সিটি কর্পোরেশন হওয়ার মতো অবকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। ২০০৪ সালে বলা নেই কওয়া নেই কলমের এক খোঁচায় পৌরসভার আয়তন রাতারাতি বাড়িয়ে পূর্বের আয়তন থেকে পাঁচগুণ বাড়ানো হয়। ১২ ওয়ার্ডকে বাড়িয়ে ২১ ওয়ার্ডে পরিণত করা হয়। এরপর এই পৌরসভার আগের অংশে ও সম্প্রসারিত অংশের রাস্তাঘাটই ঠিক হয়নি। এখনও অনেক ওয়ার্ডে গেলে মনে হয় গ্রামের পথ। যদিও কোন সড়ক ইউনিয়ন পরিষদ থাকার সময় এলজিইডির কল্যাণে সরু পাকা সড়কে পরিণত করা হয় সেই সড়ক আর আধাপাকাও নেই। রাস্তার খোলস উল্টে এখন এবড়ো-খেবড়ো। বগুড়া পৌর এলাকার আগের অংশের পাড়া-মহল্লার ফিডার রোডগুলো চলাচল অনুপযোগী। সম্প্রসারিত অংশের কি হাল তা আর বলতে হয় না। পৌর পিতার একই কথা বাজেট বরাদ্দ নেই। কাজ হবে কোত্থেকে। বগুড়া পৌরসভার আয়তন ছিল ১৪ দশমিক ৭৬ বর্গকিলোমিটার। ২০০৬ সালে তৎকালীন সরকার কোন ফিজিবিলিটি স্টাডি না করেই আয়তন ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গকিলোমিটার নির্ধারণ করে তড়িঘড়ি গেজেট প্রকাশ করে। ফলে চারদিকের তিনটি ইউনিয়ন পৌরসভার মধ্যে ঢুকে ইউনিয়ন পরিষদ বিলুপ্ত হয়ে যায়। জনসংখ্যা দাঁড়ায় পাঁচ লাখেরও বেশি। পৌরসভার আয়তন বেড়ে যাওয়ায় রাস্তাও বেড়ে যায়। পৌরসভার সম্প্রসারিত অংশে পৌর সুবিধা বাড়ানোর তাগাদা দেয়া শুরু হয়। বর্তমানে বগুড়া পৌরসভার মোট সড়ক ৮শ’ ৫৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা সড়ক ২শ’ ২৬ কিলোমিটার। পাকা এই সড়কের মধ্যে বেহাল হয়ে রয়েছে ১শ’ ৮০ কিলোমিটার। অর্থাৎ পৌর এলাকার পাকা সড়কের চার ভাগের তিন ভাগেরও বেশি চলাচল অনুপযোগী। বিশেষ করে সম্প্রসারিত অংশের বেশিরভাগ ও মূল শহরের মধ্যে পাড়া-মহল্লার ফিডার রোডগুলো যে কোন যান চললেই যাত্রী বুঝতে পারে কি অবস্থা সড়কের। এসব সড়কে রিক্সায় চলতে ঝাঁকুনিতে কোমর ও শরীরের স্ট্রাকচার এলোমেলো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কোন রোগীকে যদি রিক্সায় এই পথে চলতে হয় তার ভোগান্তি হয় অবর্ণনীয়। শহরের ফিডার রোড একে তো সরু তার ওপর এবড়ো-খেবড়ো হওয়ায় কোন বাড়িতে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস সহজে যেতে পারে না। বগুড়া শহরের ভেতরে শহীদ খোকন পার্কের কাছে হোটেল পট্টি, গলাপট্টি, বিটিসিএল এর সামনের রাস্তা, নদীবাংলা ভবনের দুই ধারের রাস্তা এবড়ো-খেবড়ো হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। নুরানীর মোড়, হাকির মোড়, কামারগাড়ি, বাদুরতলা, চকসূত্রাপুর এলাকা, চেলোপাড়া ব্রিজ থেকে পূর্বের দিকের রাস্তা, সান্দারপট্টি, সারিয়াকান্দি সংযোগ সড়ক বেহাল অবস্থায় রয়েছে অনেকদিন ধরে। প্রেসপট্টি, চকযাদু রোড, নামাজগড়, খান্দার, মালগ্রাম, ফুলতলা, টিটিসির ধারে, বৃন্দাবনপাড়া, আটাপাড়া শ্মশান ঘাটের রাস্তাকে রাস্তা বলে মনে হয় না। পুরানো দিনাজপুর সড়কের ভেতরে গর্তে খানাখন্দে ভরে যাচ্ছে। এসব সড়কে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করা দুরূহ হয়ে উঠেছে। এই বিষয়ে পৌরসভা সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে পৌরসভা সম্প্রসারণের সময় বর্ধিত অংশে এলজিইডির ৬০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ছিল। পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর কোন সংস্কার হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের সময় যে কাঁচা সড়ক ছিল তা পাকা হয়নি। পৌর মেয়র বলেন, উন্নয়ন বরাদ্দ মেলে ৬০ লাখ টাকা। এই অর্থে রাতারাতি রাস্তা সংস্কার ও উন্নয়ন সম্ভব নয়।
×