ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস

উত্তরের হিমেল হাওয়ার সঙ্গে গুটি গুটি পায়ে শীতের আগমনে বেড়ে যায় পিঠার চাহিদা। বাহারি পসরা সাজিয়ে হাট-বাজারে, ফুটপাথে, রাস্তার অলিগলিতে, স্কুল-কলেজের মাঠের ধারে বসে চলে পিঠা কেনাবেচার ব্যবসা। কুয়াশার চাদরে মুড়ে জীবিকার তাগিদে দোকান পেতে বসে মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা। ভরা শীতে চলে ভাপা পিঠা বিক্রির ধুম। স্বামী পরিত্যক্ত, বিধবা ও নিম্নবিত্ত পরিবারের গৃহবধূসহ অনেককেই মৌসুমী এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। তেমন একটা পুঁজি লাগে না বলে সহজেই এ ব্যবসা শুরু করা যায়। এ ব্যবসার উপকরণ হলো জ্বালানি খড়ি, গুড়, চালের গুঁড়া আর নারকেল। শীতের সকাল ও বিকেলে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পিঠা খায় নারী-পুরুষ। কেউ কেউ আবার তাদের বসার ব্যবস্থাও করে। কোথাও দাঁড়িয়ে আবার কোথাও বসে পিঠার দোকানকে ঘিরে জমে ওঠে আড্ডা। রংপুর মহানগরের শালবন এলাকার আরসিসিআই স্কুল এ্যান্ড কলেজ মোড়ের পিঠা বিক্রেতা রওশন আরা। তিনি জানান, স্বামী রিক্সাচালক। স্বামীর একার আয়ে সংসার ভাল চলে না। পুরো শীতকালটা তিনি পিঠা বিক্রি করে সংসারে বাড়তি আয়ের যোগান দেন। প্রতিদিন সকাল ছয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করেন। আবার দুপুরের রোদ পড়ে বিকেল হতে না হতেই পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেন। পাঁচ টাকা দরে প্রতিদিন অন্তত ৬-৭শ’ পিঠা বিক্রি করেন। খরচ বাদ দিয়েও প্রতিদিন ৮-৯শ’ টাকা লাভ হয়। শীতের ৩/৪ মাসের এই বাড়তি আয় দিয়ে তিনি সংসারের সারা বছরের ঘাটতি পূরণ করেন। তিনি জানান, সকাল ও বিকেলে এ ব্যবসার উত্তম সময়। কখনও দিনভর কুয়াশা থাকলে সূর্য দেখা না গেলে সারাদিনই চলে পিঠা বিক্রি। বেগম রোকেয়া সরকারী কলেজ মোড়ের আবদুল গফুর বলেন, বছরের অন্যান্য সময় বাদাম, চানাচুর, ঝালমুড়ি ও মৌসুমী ফল বিক্রি করি। কিন্তু শীত এলে পিঠার ব্যবসা করি। শীত ঘনিয়ে এলে পিঠার ব্যবসা জমে ওঠে। পুলি, চিতই, কুশলি, তেলের পিঠা ও এসব পিঠার পাশাপাশি ভাপা পিঠা আড্ডাবাজদের নজর কাড়ে। তিনি বলেন, চালের আটায় নারকেল, গুড় ও অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে ভাপ দিয়ে ভাপা পিঠা তৈরি করা হয়। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ অফিস থেকে ফেরার পথে, তরুণ-তরুণীরা সন্ধ্যার আড্ডায় পিঠার দোকানে ভিড় করে। পিঠার দাম নেয়া হয় প্রকারভেদে। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হয়। -আবদুুর রউফ সরকার রংপুর থেকে
×