ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের

ইসি পুনর্গঠনে বেগম জিয়ার প্রস্তাব অন্তঃসারশূন্য

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৯ নভেম্বর ২০১৬

ইসি পুনর্গঠনে বেগম জিয়ার প্রস্তাব অন্তঃসারশূন্য

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে দেয়া প্রস্তাবকে চর্বিতচর্বণ ও অন্তঃসারশূন্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ৪৫ মিনিটের অন্তঃসারশূন্য বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে জনগণের ওপর তার (খালেদা জিয়া) কোন আস্থা নেই। উনি (খালেদা জিয়া) এমন কিছু প্রসঙ্গ এনেছেন, যা ইতোমধ্যেই আমাদের সংবিধান বা নির্বাচনী আইনে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন সম্পূর্ণ রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। এক্ষেত্রে সংবিধান মেনেই সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিএনপি ও খালেদা জিয়া বিতর্ক সৃষ্টি করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছেন। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে খালেদা জিয়ার দেয়া প্রস্তাব নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার ফর্মুলা অন্তঃসারশূন্য। তিনি জাতির সঙ্গে তামাশা করেছেন। তার সংলাপের আহ্বান হাস্যকর। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির প্রস্তাবনায় গ্রহণযোগ্য ও ভাল কিছু থাকলে তা গ্রহণ করা যেতে পারে, তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতি কাকে ডাকবেন বা ডাকবেন না, সেটা একান্তই তার বিষয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের যে প্রক্রিয়া দেখিয়ে গেছেন, সেখান থেকে আওয়ামী লীগ বিচ্যুত হবে না, হওয়ার সুযোগও নেই। অতীতে এত গণতান্ত্রিক ও আধুনিক প্রক্রিয়ায় কখনও কোন সরকার অনুসরণ করেনি। তাই খালেদা জিয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন তার মাধ্যমে তিনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে অবজ্ঞা করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, দেখতে হবে আমরা সংবিধান অনুসরণ করছি কিনা। সংবিধানে যা আছে আমরা সে অনুযায়ী চলতে চাই। এর আগে রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। সেই প্রক্রিয়া থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনই সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, বিএনপি ও তাদের নেত্রী ভুল রাজনীতির কারণে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এখন মিথ্যাচার করছেন। জনগণের কথা না ভেবে তারা এখন কোন দেশে কে ক্ষমতায় এলো তা খুঁজে বেড়াচ্ছে। জনগণের ভোটের ওপর বিএনপির কোন আস্থা বা বিশ্বাস নেই। গত নির্বাচন তারা প্রতিহত করতে চেয়েছিল। এ জন্য পেট্রোলবোমার আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তিনি বলেন, কোন প্রেসক্রিপশন দেয়ার আগে খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা, মানুষ হত্যার অপরাধে, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার অপরাধে, তার ছেলে তারেক জিয়ার মানি লন্ডারিংয়ের জন্য, দুর্নীতির জন্য, নিজের জন্ম তারিখ নিয়ে জাতির সামনে মিথ্যাচারের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপ্রধান রূপে রাষ্ট্রের অন্য সব ব্যক্তির উর্ধে। সংবিধানের চতুর্থ ভাগের ৪৮ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ওপর প্রদত্ত ও অর্পিত সব ক্ষমতার প্রয়োগ ও কর্তব্য পালনের অধিকার দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের সপ্তম ভাগের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ প্রদান করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশন এবং অনধিক চার নির্বাচন কমিশনার নিয়ে রাষ্ট্রপতি সংবিধানে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করেন।’ এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতিকে যে সংলাপ অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন, তা খুবই হাস্যকর। কারণ তিনি (খালেদা জিয়া) ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংলাপ আহ্বানকে অসম্মান দেখিয়েছিলেন। তার পুত্র বিয়োগের পর প্রধানমন্ত্রী তাকে সমবেদনা জানাতে গুলশান কার্যালয়ে গেলে খালেদা জিয়া কার্যালয়ের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে সংলাপের সম্ভাবনা চিরদিনের জন্য রুদ্ধ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সংস্কারের ফর্মুলায় বাংলাদেশের জনগণের ওপর কিংবা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ-র‌্যাব, বিজিবির প্রতি খালেদা জিয়ার আস্থাহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৯৯৬ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের নবজাতককে হত্যা করেছিলেন। মাগুরার উপ-নির্বাচন ও ঢাকা-১০ আসনের উপ-নির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, নিজের অতীত ভুলে গিয়ে এখন তিনি (খালেদা জিয়া) ভাল ভাল বুলি আওড়াচ্ছেন। সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতি তাদের কোন অঙ্গীকার নেই। যে কোনভাবে ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
×