ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়া হায়দার

এ লে বে লে

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

এ লে বে লে

(পূর্ব প্রকাশের পর) মেয়ে : ছি: ডার্লিং পুওর চবড়ঢ়ষব নিয়ে ওভাবে কথা বলতে নেই। ছেলে : আরো আছে= ঐ যে পূর্ব-পশ্চিম উত্তর-দক্ষিণ= ঐ সব পাড়া বেপাড়ার লোকজন। ইতোমধ্যে মিউজিশিয়ান গীটারে টুংটাং করতে থাকে। নির্দেশক : (মিউজিশিয়ানকে) তুমি আবার টুংটাং শুরু করলে কেন? স্বামী : তোমরা কোন পাড়ার শুনি। মিউজিশিয়ান টিউনিং করে নিচ্ছি। ( সে আরো দু একবার বাজায়) ছেলে : আমরা... আমরা... আমরা হচ্ছি আসল পাড়ার। মেয়ে : না, না, আমরা হচ্ছি উর্ধ পাড়ার। স্বামী : আসলে অধঃপাড়ার বুঝলে। (দর্শকদের ) দেখলেন তো, দেশটা কোথায় চলেছে। নির্দেশককে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আপনারা! কাঞ্চু : গম্ভীর স্বরে হীরক রাজার দেশে। সেখানেই সব সমস্যার সমাধান। নির্দেশক : আপনারই বা কি উদ্ধার করেছেন এতো দিন, শুনি! মাঝখান থেকে আমার কতোটা সময় নষ্ট হলো, সেটা বুঝতে পেরেছেন? স্বামী : (স্ত্রীকে) তুমি থাকবে? (স্ত্রী সম্মতিসূচক মাথা নাড়ে) আমি যাচ্ছি তাহলে। স্ত্রী : তুমি তাহলে গাড়িটা রেখে রিকশা-টিকশা নিয়ে যাও। স্বামীর প্রস্থান। নির্দেশক : যত্তোসব। (ছেলে ও মেয়েকে) যাও নিজেদের জায়গায় গিয়ে বসো। (তারা নির্দেশ পালন করে) গো অন। ছেলে ও মেয়ে কি বলবে বা করবে ঠিক করতে পারছে না। ছেলে : (হঠাৎ) জানো আমার না একটা গান গাইতে ইচ্ছে করছে। মেয়ে : হলো না। ছেলে : কি হলো না? মেয়ে : এখন তো গানের সিকোয়েন্স নয়। ছেলে : তাহলে? মেয়ে : এখন মনে হয় ঐ যে পড়া-টড়ার কথা। ছেলে : সেটা তো তোমার লাইন। মেয়ে : হ্যাঁ। ছেলে : তাহলে বলছো না কেন? মেয়ে : (ফিসফিস করে) মনে পড়ছে না। ছেলে : (ফিসফিস করে) একটা কিছু বানিয়ে বলে দাও। মেয়ে : (একটু ভেবে) আমরা কোন স্কুলে পড়ি গো। ছেলে : ভালোবাসার নার্সারিতে। মেয়ে : বেশ মজার কথা বললে তো। জবধষষু সুন্দর। ঋধহঃধংঃরপ. ছেলে : এর আগে যে আরো সুন্দর কথা বললাম। মেয়ে : কোনটা? ছেলে : চলো যাই, চলো যাই। মেয়ে : সেটা বুঝি অমন সুন্দর হলো? ছেলে : সবচেয়ে সুন্দর, সুন্দরতর, সুন্দরতম। মেয়ে : এর চেয়ে সুন্দরতম অনেক কিছু পৃথিবীতে আছে। ছেলে : না নেই। মেয়ে : আছে। ছেলে : যেমন। মেয়ে : আমি আমার মুখ, আমার চোখ, আমার কেশদাম, আমার দেহবল্লরী আর.... আর আমার আয়না। ছেলে : (বিস্মিত হয়ে ) আয়না! মেয়ে : কারণ, ঐ আয়নাতে আমার সুন্দরতম সৌন্দর্যকে আমি দেখি। ছেলে : না। ( মেয়ে বিস্মিত চোখে তাকায়) তুমি ভুল বললে প্রিয়তমা। তুমি যে সুন্দর, সুন্দরতমা সে তো আমার চোখের আয়নাই তোমাকে বলে দিয়েছে। মেয়ে : আমি না হলে তোমার জগৎ মিথ্যে। ছেলে : তুমি না হলে আমার আকাশ অন্ধকার। মেয়ে : আমি না হলে তোমার রাত্রি নিদ্রাহীন। ছেলে : তুমি না হলে আমার দিগন্ত কুয়াশায় ঘেরা। মেয়ে : তুমি না হলে আমার রাত্রিও নিদ্রাহীন। ছেলে : (আনন্দে উত্তেজিত হয়ে) তা-ই! তাহলে চলো। মেয়ে : (পূর্বেকার সিদ্ধান্তে) যাবো? কোথায়? ছেলে : আগে এখান থেকে বেরিয়ে পড়ি, তারপর... মেয়ে : আগে ঠিক করে নাও। ছেলে : আামদের সামনে দুটো পথই খোলা আছে। হয় আত্মহত্যা, নয় আমাদের স্বপ্নের দেশে। মেয়ে : আত্মহত্যা করতে হলে ভেজাল পরীক্ষা তুমি করবে। আর তা না হলে প্রথমে কাজীর অফিসে। ছেলে : আত্মহত্যা করতে তুমি রাজি হয়েছো। মেয়ে : রাজী। ছেলে : আমার সঙ্গে যেতেও তুমি রাজী হয়েছো। মেয়ে : রাজী। ছেলে : আমরা আত্মহত্যা করবো না। আত্মহত্যা মহাপাপ। মেয়ে : তাহলে। ছেলে : আমার সঙ্গে আমি যেখানে, তুমিও সেখানে। মেয়ে : (আদুরে গলায়) প্রথমে কাজীর অফিসে, কেমন। তারপর যেখানে খুশি ... ছেলে : (কঠিন করে) হ্যাঁ। মেয়ে : হ্যাঁÑ ছেলে : (চিৎকার করে ) না। মেয়ে : এমন একটা পাশবিক চিৎকার না করলেও চলবে। ছেলে : কি বললে? পাশবিক চিৎকার? আমার হৃদয়টা ভেঙ্গে খান খান করে দিয়ে এখন কিনা... (ক্রোধান্বিত আবেগ ও উত্তেজনায়) (চলবে)
×