ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কিশোরগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

কিশোরগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ  ভবনে পাঠদান

মাজহার মান্না, কিশোরগঞ্জ ॥ কিশোরগঞ্জ পৌরসভার ভট্টাচার্য্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। স্কুল ভবনের ছাদ ধসে পড়ে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ছাত্রছাত্রীসহ অভিভাবক মহল। এছাড়া বৃষ্টি নামলেই ভবনের ছাদ চুইয়ে ক্লাশরুমে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় জরাজীর্ণ ভবনেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পাঠদান গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে। বিদ্যালয়ের চার রুমের ভবনের একটিতে অফিসকক্ষ আর তিনটিতে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হয়। বিদ্যালয়ের পাঁচ নারী শিক্ষকম-লী ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোনরকমে সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত, আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কোমলমতি শিশুরা নিয়মিত স্কুলে না আসায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানা গেছে, ১৯৩৫ সালে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে ভট্টাচার্য্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ওই ভবনের ছাদের প্লাস্টার ভেঙ্গে পড়েছে। এ বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অনেকটা বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন। সরজমিনে শিশুদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, ক্লাস চলাকালে প্রায়ই ছাদ ও বিম ভেঙ্গে শরীরে পড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। অভিভাবক সদস্য খোকন দে বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কিত থাকেন। অনেকে তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে দ্বিধাবোধ করেন। সম্প্রতি সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোমতাজ বেগম বিদ্যালয় পরিদর্শন করে স্কুলভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় শিশুদের সেখানে ক্লাস না করাতে পরামর্শ দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক রাবিয়া আখতার হ্যাপি জানান, বিদ্যালয়ে মোট ২১২ শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করতে এসে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারছে না। তাদের মনে সবসময় এক ধরনের ভয় বিরাজ করে। তাছাড়া শিক্ষকম-লীরা শিশুদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে অনেকটা বাধ্য হয়েই জরাজীর্ণ ভবনে সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। স্কুল কমিটির সভাপতি আব্দুল করিম জানান, ১৯৯৫ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হলেও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ভবন ধসে পড়েছে। প্রায়ই ছাদের প্লাস্টার ভেঙ্গে ক্লাশরুমে পড়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হয়। ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
×