ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের পর জনসমক্ষে হিলারির প্রথম মূল্যায়ন

গভীর বিভক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

গভীর বিভক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র

হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিশ্বের সবচেয়ে মহান দেশটিতে গভীর বিভেদকেই তুলে ধরেছে। সাবেক ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী বুধবার ওয়াশিংটনে এক ইভেনিং বেনেফিট ইভেন্টে ভাষণ দিচ্ছিলেন। রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পরাজয় স্বীকার করার পর এটিই ছিল হিলারির প্রথম জনসমক্ষে আগমন। খবর এএফপি, বিবিসি ও টেলিগ্রামের। তিনি চিলড্রেন’স ডিফেন্স ফান্ডের অনুষ্ঠানে দাতা ও অন্যান্য অতিথিদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। এটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে থাকে। এমন এক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, আমি জানি আপনাদের অনেকেই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে গভীরভাবে হতাশ। আমি এত হতাশ যা আমি কখনও প্রকাশ করতে পারি না। তিনি বলেন, আমি জানি এটি সহজ নয়। গত সপ্তাহ ধরে অনেক মানুষই মনে মনে প্রশ্ন করেছেন, আমেরিকাকে আমরা যেমন মনে করি, এটি কি সেই দেশ। এ নির্বাচন গভীর বিভেদই স্পষ্ট করে তুলেছে, কিন্তু দয়া করে আমার এ কথাটি শুনুন। তিনি বলেন, আমেরিকা ভাল। আমাদের শিশুরা ভাল। আমাদের দেশের ওপর বিশ্বাস রাখুন, আমাদের মূল্যবোধের জন্য সংগ্রাম করুন এবং কখনও তা পরিত্যাগ করবেন না। অনুষ্ঠানে হিলারিকে ওই সংগঠনের প্রতি তার অবদানের জন্য সম্মানিত করা হয়। তিনি প্রথমে ১৯৭০-এর দশকে এক তরুণ আইনজীবী হিসেবে এর পক্ষে কাজ করেন। পরে তিনি এর বোর্ড অব ডিরেক্টরসের চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন। এক অডিটরিয়ামে সমাবেত কয়েক শ’ লোকের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি স্বীকার করব, আজ রাতে এখানে আসা আমার পক্ষে খুব সহজ ছিল না। গত সপ্তাহে কখন কখন আমি কোন ভাল বই নিয়ে সময় কাটাতে চেয়েছিলাম এবং আমি কখনও বাড়ি থেকে বেরোতে চাইনি। তিনি বলেন, শ্রোতাদের অনেকেই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে গভীরভাবে হতাশ। তিনি ম্লান হেসে বলেন, আমিও যা আমার ভাষায় প্রকাশ করারও অতীত। কিন্তু যেমন আমি গত সপ্তাহে বলেছিলাম, অমরা কোন এক ব্যক্তিকে নিয়ে বা এমন কি একটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কখনও প্রচার চালাইনি। এটি ছিল আমরা ভালবাসি এমন একটি দেশ নিয়ে এবং আশাবাদী ও উদারমনা আমেরিকা গড়ে তোলা নিয়ে প্রচার অভিযান। আমি উঁচু পদে আসীন হওয়ার জন্য জনসেবায় লিপ্ত হইনি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তা করে যেতে শ্রোতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি ট্রাম্পের অন্যতম বড় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি লাখ লাখ কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করেন। তবে তিনি তার সাবেক রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম উল্লেখ করেননি। তিনি বলেন, আজ শিশুরা আতঙ্কিত যেমন, আমি নেভাডাতে এক ছোট মেয়ের দেখা পাই এবং সে যখন আমাকে জানালো যে, তার মা-বাবাকে তার কাছ আলাদা করে নিয়ে বহিষ্কার করা হবে, তখন সে ভয়ে কাঁদতে শুরু করে। তিনি বলেন, কোন শিশুররই এমন ভয়ের সঙ্গে বাঁচা উচিত নয়। হিলারি আরও উল্লেখ করেন যে, প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলে শিশুদের অবস্থার উন্নতি হলেও যুক্তরাষ্ট্রে এখনও তিন কোটি ১০ লাখ শিশু দারিদ্র্যের মধ্যে বা এর কাছাকাছি বসবাস করে। তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলে অগ্রগতিকে ভিত্তি করে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগের আশা করেছিলাম। কারণ আমি জানি আমরা যখন পরস্পরকে সাহায্য করি তখন আমরা একতাবদ্ধ হয়ে আরও শক্তিশালী হই। কাজেই আমি আমাদের অভিন্ন মূূল্যবোধ পরিত্যাগ না করতে আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাই। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল এখনও কিছু কিছু আসছে। এতে জনগণের ভোটের হিসেবে হিলারি ১০ লাখেরও বেশি ভোটে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। কিন্তু, পরোক্ষ ভোটে নির্ধারিত নির্বাচনে ট্রাম্প চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেন। তিনি ইলেক্টোরাল কলেজের ২৯০ ভোট এবং হিলারি ২৩২ ভোট পান। হিলারি বলেন, আমেরিকা এখনও বিশ্বের মহত্তম দেশ। এটি এখনও সেই স্থান যেখানে যে কেউই অপ্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করতে পারে। Ñএএফপি, বিবিসি ও টেলিগ্রাফ
×