ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিন মাসে খেলাপী ঋণ বাড়ল ২ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

তিন মাসে খেলাপী ঋণ বাড়ল  ২ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপীঋণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। যা আগের প্রান্তিক জুন শেষে ছিল ৬৩ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে শেষ তিন মাসেই বেড়েছে ২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। যার সবটাই বেড়েছে বেসরকারী ও বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলোর। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে, বিশেষ সুবিধায় নিয়মিত করা ঋণ আবারও খেলাপী হয়ে পড়ছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং রীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে নতুন পদ্ধতিতে ঋণ শ্রেণীকরণ করায়ও বাড়ছে খেলাপীঋণ। তবে প্রতি প্রান্তিকে হাজার হাজার কোটি টাকার খেলাপীঋণ বৃদ্ধিকে এ খাতের জন্য বিপদ সঙ্কেত হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিদরা। তারা বলছেন, বাছবিচার ছাড়া ঋণ অনুমোদন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সর্বোত্তম পরিপালন না করা এবং ঋণ আদায় কার্যক্রম জোরদার না করার কারণেই খেলাপীঋণ বাড়ছে। এতে ব্যাংকের তহবিল ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। কারণ খেলাপীঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। অন্যদিকে তহবিল ব্যয় বাড়ায় ঋণের সুদও প্রত্যাশিতহারে কমছে না। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, খেলাপীঋণ বেশি হলে ব্যাংকের ঋণ দেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে সুদের হারও বাড়ে। বাংলাদেশে আমানতের সুদের হার কমিয়ে এসব সমন্বয় করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, খেলাপীদের বিভিন্ন সুবিধা দেয়ার ফলে ভাল গ্রাহকদের কাছে খারাপ সঙ্কেত যাচ্ছে। আর অবলোপন করা হচ্ছে জনগণের আমানতের অর্থ দিয়ে। এর প্রভাব পড়েছে গ্রাহকদের ওপর। এতে ভাল গ্রাহক, সৃজনশীল উদ্যোক্তারা ঋণ পেতে সমস্যায় ভোগেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে বেসরকারী খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপীঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিক জুন শেষে যার পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা। ফলে গেল তিন মাসে এ খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপীঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এ সময়ে বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপীঋণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিক জুন শেষে যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। ফলে গেল তিন মাসে এ খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপীঋণ বেড়েছে ১১৩ কোটি টাকা। এ সময়ে বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপীঋণ অপরিবর্তিত রয়েছে। যার পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। তবে এ সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের খেলাপীঋণ কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিক জুন শেষে যার পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৭৭ কোটি টাকা।
×