ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পকলায় রাধারমণ সঙ্গীত উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

শিল্পকলায় রাধারমণ সঙ্গীত উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা লোকসঙ্গীতের পুরোধা লোককবি রাধারমণ দত্ত। তার রচিত ধামাইল গান সিলেট ও ভারতের বাঙালীদের কাছে পরম আদরের। নিজের মেধা ও দর্শনকে কাজে লাগিয়ে বাঙালীর মনে স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন তিনি। সিলেটের পুণ্যভূমির স্পর্শে স্বপ্নদ্রষ্টা কবি রাধারমণ দত্ত সারাজীবন যে পরিমাণ গান রচনা করেছেন তা কেবল ভবা পাগলার সঙ্গেই তুলনীয়। মরমি এই লোককবির ১০১তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী ‘রাধারমণ সঙ্গীত উৎসব।’ উৎসবের আয়োজন করেছে যৌথভাবে শিল্পকলা একাডেমি ও রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এদিন সন্ধ্যায় উৎসবের উদ্বোধন করেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, পিএসসির চেয়্যারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। আলোচক ছিলেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। ঢাকের বাদ্য ও প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন, রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। পরে রাধারমণের গানের সংকলন ‘স্মৃতি সত্তায় রাধারমণ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। উৎসব উদ্বোধনের সময় চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী বলেন, আমি চিত্রকলার মানুষ। সঙ্গীত ভাল লাগে তাই ভালবাসি। কেউ যদি বলেন আমি একজন ভাল সঙ্গীতশ্রোতা, তাও মেনে নেব। লোকগীতি এমন এক বিষয়, যা প্রথম কথার জন্য মনে ধরে এবং পরবর্তিতে সুরের জন্য মনে স্থান পায়। আমরা চাই রাধারমণের মতো এমন একজন বড় মাপের শিল্পীর গান সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক। বক্তারা বলেন, রাধারমণ দত্ত কিশোর বয়স থেকে সৃষ্টিত্বত্ত নিয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সৃষ্টিকর্তার স্বরূপ অনুসন্ধানে মনোনিবেশে করেন। এজন্য তিনি বিভিন্ন সাধুসন্তের আদেশ উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করতেন। শাক্ত, বৈষ্ণব, শৈব মতবাদের উপর ব্যাপক পড়াশোনা করেন। সবশেষে তিনি সহজিয়া মতে সাধন ভজন করেন। তিনি কৃষ্ণভাবে বিভোর হয়ে রাধাকৃষ্ণ প্রেমলীলা নিয়ে লোকগান রচনা করেন। তিনি ভজন সঙ্গীতে বিভোর হয়ে গান রচনা করে নিজেই তা গাইতেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ভাবরসে বিভোর হয়ে গীতরচনা করতেন। আলোচনানুষ্ঠানের শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কেন্দ্রের সভাপতি মাহমুদ সেলিম। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাধারমণের গান পরিবেশন করেন শিল্পী শাহনাজ বেলী, অনিমা মুক্তি গমেজ, আবুবকর সিদ্দীক, বিশ্বজিৎ রায়, সন্দীপন, নারায়ণ চন্দ্র শীল, বিজন মিস্ত্রি প্রমুখ। দলীয় সঙ্গীতে অংশ নেয় লোকাঙ্গনের শিল্পীরা। একক আবৃত্তি করেন রূপা চক্রবর্তী। দীপা খন্দকারের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করে দিব্য। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন জগন্নাথপুর ও সুনামগঞ্জের শিল্পীরা। আগামীকাল সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল সাড়ে ৪টায়। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্ত। পোল্যান্ডে ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ ॥ বিভিন্ন দেশের পর রুবাইয়াত হোসেনের প্রশংসিত চলচ্চিত্র ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ এবার প্রদর্শিত হবে পোল্যান্ডের একটি চলচ্চিত্র উৎসবে। দেশটির ওয়ারশোতে বুধবার থেকে শুরু হওয়া এ আয়োজনের নাম ফাইভ প্লেভার্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। শুক্রবার ও আগামীকাল এশিয়ার নতুন চলচ্চিত্র বিভাগে প্রতিযোগিতার জন্য প্রদর্শিত হবে ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’। এ প্রতিযোগিতায় বিবেচ্য বিষয় হলো সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়াদি। এর অংশ হিসেবে নেটপ্যাক জুরির পাশাপাশি সাধারণ দর্শকরাও বিজয়ী মনোনীত করবে। ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়ার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউড অভিনেত্রী শাহানা গোস্বামী। পোল্যান্ডের উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন তিনি। ফাইভ প্লেভার্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল পরিচালক জ্যাকব ক্রোলিকোয়াস্কি বলেছেন, শুধু গল্প বা দর্শকপ্রিয়তা নয়, আমরা ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’কে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির একটি দারুণ প্রভাবক হিসেবে বিবেচনা করছি।
×