ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পন্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১৮ নভেম্বর ২০১৬

বায়ান্ন বাজার তিপ্পন্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ বিপুল আয়োজনে উদ্যাপিত হলো নবান্ন। অগ্রহায়ণের প্রথম দিন গ্রামের মতো শহর ঢাকাও ছিল উৎসবমুখর। বিভিন্ন বয়সী মানুষের ঢল নেমেছিল চারুকলার বকুলতলায়। নাচ গান কবিতাসহ নানা আয়োজনে শিল্পীরা বাংলার লোক ঐতিহ্যকে তুলে ধরেন। প্রতিবারের মতোই মূল আয়োজনটি ছিল চারুকলার বকুলতলায়। এখানে বর্ণাঢ্য উৎসবের আয়োজন করে জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদ। নানা পরিবেশনায় বাংলার লোকজীবন ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। আরও ছিল গ্রামীণ ঐতিহ্যের পিঠাপুলি। মুড়ি-মুড়কি বাতাসা। প্রায় একই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় আয়োজন করা হয় নবান্ন ও লোকজ মেলার। দু’দিনব্যাপী আয়োজনে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর। প্রথমবারের মতো উৎসবের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ুথ এ্যান্ড স্টুডেন্টস ফোরাম ফর ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট। একই দিন ধানম-ির রবীন্দ্রসরোবর মুক্তমঞ্চে ছিল নবান্ন উৎসব। এখানেও ঢল নামে মানুষের। সব মিলিয়ে চমৎকার উৎসব। মাটি ও মানুষের কাছে ফিরে যাওয়ার প্রয়াস। দেশী-বিদেশী কবি-সাহিত্যিকের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে বাংলা একাডেমি। কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এখানে আয়োজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক সাহিত্য আসর ঢাকা ‘লিট ফেস্ট’। আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত উৎসবে দেশ-বিদেশের ২ শতাধিক লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও শিল্পী যোগ দিয়েছেন। উৎসবের আলোকিত দিক নোবেলজয়ী সাহিত্যিক ভি এস নাইপলের অংশগ্রহণ। লিট ফেস্ট উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে একাডেমির ভেতর-বাহির। প্রাঙ্গণজুড়ে নানা আয়োজন। সাহিত্য আলোচনা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, চলচ্চিত্র, থিয়েটার, সঙ্গীত; কী নেই! আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাহিত্য সম্মেলন মোট ৯০টি অধিবেশনে ভাগ করে নেয়া হয়েছে। প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হয় ১৫টি অধিবেশন। বিশ্বসাহিত্য সমাজনীতি রাজনীতি অর্থনীতি কোনটাই বাদ যায়নি। একাধিক আন্তর্জাতিক ইস্যুর সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করে সমৃদ্ধ আলোচনার সূচনা করা হয়। বাংলা সাহিত্য ও নাটকের ইংরেজী অনুবাদ নতুন মাত্রা যোগ করে। এদিন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ‘নীল দংশন’ নাটকটি ‘ব্লু ভেনম’ শিরোনামে মঞ্চস্থ হয়। ইংরেজী অনুবাদ হওয়ায় বিদেশী অতিথিরাও উপভোগ করেন নাটকটি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেন নায়লা আজাদ নূপুর। অভিনয় করেছেন আরিফ সৈয়দ ও আরিক আনাম খান। একইদিন আলোচনা হয় মীর মশারফ হোসেনের অমর সৃষ্টি ‘বিষাদ সিন্ধু’ নিয়ে। ইংরেজীতে অনুবাদ করা হয়েছে বইটি। আজ শুক্রবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচী শুরু হবে সকাল ১০টায়। চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত। তিন দিনব্যাপী সম্মেলন শেষ হবে শনিবার। শেষ করা যাবে অন্য প্রসঙ্গ টেনে। রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ ফুটওভার ব্রিজ প্রায় পরিত্যক্ত। খুব কম লোকই ব্যবহার করেন। ব্যতিক্রম ঘটেছিল ফার্মগেট এলাকার একটি ফুটওভারব্রিজের বেলায়। শহরের অন্যতম বড় ও দীর্ঘ ফুট ওভারব্রিজ শতকরা এক শ’ ভাগ পথচারী ব্যবহার করে আসছিলেন। বহু বছর ধরেই। নিচে রোড ডিভাইডারে শক্ত কাঁটাতারের বেড়া বসানোর কারণে এটি সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি নিচের কাঁটাতারের বেড়াটি দুর্বল হয়ে পড়ায় দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। কাঁটাতারের বেড়া টেনে নিচে নামিয়ে রাস্তা পার হতে দেখা যাচ্ছে পথচারীকে। প্রথম প্রথম কিছুটা বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। এখন মনে হচ্ছে, স্বাভাবিক হয়ে গেছে! প্রতিদিনই অবৈধভাবে রাস্তা পার হওয়া লোকের সংখ্যা বাড়ছে। দেখার কেউ নেই। অথচ ওভারব্রিজের নিচে ভিআইপি সড়ক। যারপরনাই ব্যস্ততা। এ অবস্থায় যখনতখন বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা যেমন দেখা দিয়েছে তেমনি বাড়ছে যানজট। কর্তৃপক্ষ বলতে কিছু তো নিশ্চয়ই আছে। বিষয়টি তারা দেখবেন কি?
×