ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বস্তির জয় আর্জেন্টিনার, মূলপর্বের কাছাকাছি ব্রাজিল

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

স্বস্তির জয় আর্জেন্টিনার, মূলপর্বের কাছাকাছি ব্রাজিল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা চার ম্যাচ জয়বঞ্চিত থাকার পর অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ বাছাই ফুটবলে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের দ্বাদশ রাউন্ডের ম্যাচে সুপারস্টার লিওনেল মেসির নৈপুণ্যে ভর করে আশা বাঁচান জয় পেয়েছে দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশ। বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত ম্যাচে আর্জেন্টিনা ৩-০ গোলে হারিয়েছে কলম্বিয়াকে। দলের জয়ে মেসি একটি গোল করা ছাড়াও বাকি দুই গোলে অবদান রাখেন। রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের জয়রথ চলছেই। টানা ষষ্ঠ জয় পেয়েছে পেলের দেশ। এবার সেলেসাওরা স্বাগতিক পেরুকে হারিয়েছে ২-০ গোলে। ব্রাজিলের হয়ে গোল করেন দারুণ ফর্মে থাকা ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও মিডফিল্ডার রেনাটো অগাস্টো। এটি বাছাইপর্বে কোচ টিটের অধীনে ব্রাজিলের টানা ষষ্ঠ জয়। এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে ব্রাজিলের জার্সিতে ১০০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেন ডিফেন্ডার দানিয়েল আলভেজ। হাইভোল্টেজ ম্যাচে উরুগুয়েকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দারুণভাবে বিশ্বকাপের টিকেট পাওয়ার রেসে ফিরেছে চিলি। কোপা আমেরিকার সবশেষ দুই আসরের চ্যাম্পিয়নদের হয়ে জোড়া গোল করেন তারকা ফরোয়ার্ড এ্যালেক্সিস সানচেজ। অপর গোলটি করেন এডুয়ার্ড ভারগাস। প্রথমদিকে দারুণ ছন্দে থাকা ইকুয়েডর মাঝপথে খেই হারিয়েছিল। অবশেষে তারাও স্বরূপে ফিরেছে। ভেনিজুয়েলাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরে উঠে এসেছে ইকুয়েডর। বলিভিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরে তালিকার ওপরে ওঠার সুযোগ হারিয়েছে প্যারাগুয়ে। ১২টি করে ম্যাচ শেষে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে ব্রাজিল। সেই সঙ্গে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও খেলা প্রায় নিশ্চিত নেইমার, জেসুস, আলভেজদের। ২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে সরাসরি উতরে যাওয়ার জন্য ২৮ পয়েন্টই যথেষ্ট ছিল। হারলেও ২৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে উরুগুয়ে। ২০ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে ইকুয়েডর। সমান পয়েন্ট নিয়ে গোলগড়ে চার নম্বরে চিলি। একধাপ এগিয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে উঠে এসেছে আর্জেন্টিনা। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে কলম্বিয়া। সপ্তম ও অস্টম স্থানে থাকা প্যারাগুয়ে ও পেরুর ভা-ারে জমা যথাক্রমে ১৫ ও ১৪ পয়েন্ট করে। বাছাইপর্বে প্রতিটি দলের আরও ছয়টি করে ম্যাচ বাকি আছে। ঘরের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই কলম্বিয়ার ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। ফল পেতেও বিলম্ব হয়নি। নবম মিনিটে দুর্দান্ত ফ্রিকিকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক মেসি। ২২ মিনিটে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন গঞ্জালো হিগুয়াইনের বদলে সেরা একাদশে খেলা লুকাস প্রাট্টো। মেসির ক্রস থেকে গোলটি করেন তিনি। ৮৩ মিনিটে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া করেন আর্জেন্টিনার তিন নম্বর গোল। এই গোলটিতেও অবদান রাখেন মেসি। অর্থাৎ মেসিময় ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ খেলার রেসে ভালভাবেই ফিরেছে আর্জেন্টিনা। এ্যাওয়ে ম্যাচে পেরুর বিরুদ্ধে সহজ জয় পেয়েছে ব্রাজিল। একাধিক সহজ গোল মিস না করলে জয়ের ব্যবধান আরও বড় হতে পারত। এই ম্যাচে আরেকবার দলের পক্ষে শতভাগ উজাড় করে দিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির তরুণ স্ট্রাইকার জেসুস। ৫৭ মিনিটে নিজে গোল করার পাশাপাশি ৭৮ মিনিটে অগাস্টোকে দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। নিজ দেশের সান্টিয়াগোতে উরুগুয়ের বিরুদ্ধে চিলি ৩-১ গোলের জয় পেলেও কাজটা সহজ ছিল না। ম্যাচে মূল ভূমিকা পালন করেন আর্সেনাল ফরোয়ার্ড সানচেজ। এডিনসন কাভানির গোলে উরুগুয়ে ১৬ মিনিটে এগিয়ে যায়। এরপর বিরতির ঠিক আগে চিলিকে সমতায় ফেরান ভারগাস। বিরতির পর দুই গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন সানচেজ। গত সপ্তাহে অনুশীলনে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ায় বেশ ঝুঁকি নিয়েই সানচেজেকে মাঠে নামায় চিলি। যে কারণে আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারের সঙ্গে কিছুটা মনোমালিন্যও হয়েছে। ওয়েঙ্গার এ মন্তব্যও করেছেন সানচেজকে নিয়ে চিলি ‘আত্মঘাতী’ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। কিন্তু দলের সেরা তারকা দেশকে মহাগুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট এনে দেন। ম্যাচের শেষদিকে ম্যানচেস্টার সিটি গোলরক্ষক ক্লডিও ব্রাভো লুইস সুয়ারেজের পেনাল্টি আটকে দিয়ে দুইবারের কোপা আমেরিকা বিজয়ীদের জয় নিশ্চিত করেন।
×