ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুর ও কুমিল্লা

হত্যার দায়ে ৪ জনের ফাঁসি

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

হত্যার দায়ে ৪ জনের ফাঁসি

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করে ট্রেনের ছাদ থেকে ফেলে এক যাত্রীকে হত্যা ও অপর দুই যাত্রীকে আহত করার অপরাধে দুইজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদ-সহ অর্থদ- দেয়া হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম এনামুল হক বুধবার দুপুরে ওই রায় দিয়েছেন। দ-প্রাপ্তরা হলেন ময়মনসিংহের তারাটি চরপাড়া গ্রামের হাবুল মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া ও মৌলভীবাজার জেলার বিছামনি গাংপাড়া গ্রামের মৃত হোসেন মিয়ার ছেলে মুন্না মিয়া। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ মার্চ রাতে আন্তঃনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিল। পথে ঢাকার শাহজালাল আান্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ওই ট্রেনের ছাদে চড়ে বগুড়ার দুপচাচিয়া থানার জিয়ানগর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে আবু সাঈদ (১৮), কক্সবাজারের উখিয়া থানার রুমকা গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে হাসান মাহমুদ (২৬) ও নওগাঁর বদলগাছি থানার মিঠাপুর ফকিরপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে আব্দুল মমিন (১৮)। ট্রেনটি গাজীপুরের টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রমের পর কালীগঞ্জের শিমুলিয়া এলাকা অতিক্রমকালে রাত পৌনে ১০টায় ৪-৫ জন সশস্ত্র দুর্বৃত্ত ছিনতাইয়ের উদ্দেশে ট্রেনের ছাদে ভিকটিম আব্দুল মোমিনকে মারপিট এবং ছুরিকাঘাত করে। এ সময় অপর যাত্রী আবু সাঈদ এবং হাসান মাহমুদ তাদের বাঁধা দিলে দুর্বৃত্তরা তাদের টাকা পয়সা ও মোবাইল সেট ছিনতাই করে হত্যার উদ্দেশ্যে ওই তিন যাত্রীকে ট্রেনের ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আব্দুল মোমিন মারা যান এবং অপর দুইজন গুরুতর আহত হন। নিজস্ব সংবাদদাতা কুমিল্লা থেকে জানান, ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র চাঞ্চল্যকর শিহাব হত্যা মামলায় দুইজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক আজিজ আহমদ ভূঁইয়া এ রায় দেন। ফাঁসির দ-প্রাপ্তরা হলেন- জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শিদলাই গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে কুদ্দুছুর রহমান রবিন (২০) ও আদর্শ সদর উপজেলার রতœাবতী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে মাহে আলম নয়ন (১৯)। জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আদর্শ সদর উপজেলার রতœাবতী গ্রামের মাইলস্টোন বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র রাশেদুল ইসলাম শিহাবকে পিকনিক থেকে অপহরণ নিয়ে যায় একই গ্রামের রত্মাবতী আলী আমেনা হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র নয়ন ও ফয়সল। অন্ধকারে নেয়ার পর শিশু শিহাব কান্নাকাটি শুরু করলে নয়ন ও ফয়সল তাদের গায়ের চাদর দিয়ে শিহাবের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে, এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ সময় অন্ধকার ট্যাংকিতে শিহাব নড়াচড়া করছে দেখে রবিন দোকান থেকে ব্লেড কিনে এনে তাকে জবাই করে। তারপর হৃদয় তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বাড়ি থেকে ছুরি এনে আবারও তার গলায় ছুরি চালায়। এরপর ট্যাংকের উপরে ঢাকনা দিয়ে ট্যাংকের মুখ বন্ধ করে লাশ গুম করে রাখা হয়। লক্ষ্মীপুরে তিনজনের যাবজ্জীবন নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর থেকে জানান, মঙ্গলবার শিশু পরিবারের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র মামুন হোসেন হত্যা মামলায় তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ ড. একেএম আবুল কাসেম। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেকের ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেয় আদালত। অনাদায়ে দ-প্রাপ্ত আসামিদের আরও এক বছরের কারাদ- দেন আদালত। নিহত শিশু মামুন চাঁদপুর জেলার মধ্য ইছুলীর নতুন বাজার এলাকার মৃত আকতার মিয়ার ছেলে। যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্তরা সবাই শিশু পরিবারের শিক্ষক কর্মচারী। দ-প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বাসিন্দা আশিকুর রহমানের মেয়ে শিশু পরিবারের খালা (আয়া) হামিদা বেগম, যশোহ জেলা সদরের শংকরপুর গ্রামের বাসিন্দা মুকবুল হোসেনের ছেলে ও শিশু পরিবারের কারিগরি শিক্ষক খায়রুল বাশার, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত. হাবিবুর রহমানের ছেলে শিশু পরিবারের কম্পিউটার অপারেটর শেখ মোঃ সাইফুর রহমান। মামলায় হামিদা বেগম ও খায়রুল বাশারকে অপর ২০১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে আরও ৭ বছরের সশ্রম কারাদ-, ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদ-ের আদেশ দেয়া হয়। সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ২৮ জুন পুকুর থেকে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় মামুনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
×