ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাগর কোড়াইয়া

মানবিকতায় ছোবল!

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

মানবিকতায় ছোবল!

ভারত-পাকিস্তান ভাগ হওয়ার সময় যে সাম্প্রদায়িকতার জন্ম হয়েছিল সেই সাম্প্রদায়িকতা যেন কিছু লোকের মধ্যে বীজাকারে লুকানো অবস্থায় ছিল যা এখন মাঝে মাঝে প্রকাশিত হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলার চিত্রগুলো আমাদের এটাই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, এর পেছনে রয়েছে কিছু কুচক্রী মহল। কারণ যারা এই অত্যাচার ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তারা ভিন্ন এলাকা থেকে এসে ঘটাচ্ছে। আর সব ঘটনাই পূর্বপরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হিন্দু ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লীতে বাড়িঘর, মন্দিরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের জন্য বড়ই অসম্মানের একটি বিষয়। আমাদের এই মাতৃভূমি অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সার্বিক জীবনমান উন্নয়নের দিক দিয়ে যেভাবে উন্নতির শিখরে ধাবিত হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মর্যাদা লাভ করছে তা সাম্প্রদায়িকতার ছোবলে ধসে পড়তে পারে। গ্রাম বাংলায় প্রতিটি ধর্মের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য-সম্প্রতির বন্ধন এখনও লক্ষণীয়। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খিস্টধর্মে বিশ্বাসীরা এখনও প্রত্যেকে একে অপরের ধর্মীয় আনন্দ-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকে। সম্প্রদায় ভেদ করে একে অন্যের প্রতিবেশী হিসেবে সবাই সুখ-দুঃখের সহভাগী হয়।। আমাদের প্রতিবেশী যে কোন ধর্মের লোকই হতে পারে। ‘প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে’ এই বাণীমন্ত্রে আলোকিত হওয়ার আহ্বান সবার। নিজেকে যেমন কেউ কখনও ঘৃণা করতে পারে না; ঠিক তেমনি প্রতিবেশীকে সবাই যদি নিজের মতো ভালবাসে তাহলে ঘৃণা করতে পারবে না। কিন্তু বর্তমানে স্বার্থানে¦ষী কিছু সাম্প্রদায়িক চিন্তা-ধারায় বিশ্বাসী মানুষ সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিরা অন্যদের মাঝেও সাম্প্রদায়িকতা বিস্তারে অগ্রসরমান। আমাদের এই সাম্প্রদায়িকদের মোকাবেলা করার এখনই সময়। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের অনুপ্রেরণা ও শিক্ষা আমাদের মাঝে আবার জাগিয়ে তোলা জরুরী। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দেশ ও সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একত্রে সোচ্চার হতে হবে। যারা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প ছড়াবে তাদের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ। বনানী, ঢাকা থেকে
×