ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির

প্রতিটি ধর্মই মানবতার কথা বলে। যখন কোন মানুষ ধর্মকে পুঁজি করে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করতে চায় তখন মনে রাখতে হবে তার রক্তে সাম্প্রদায়িকতার ক্যান্সার আক্রান্ত। মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রীস্টান সব ধর্মের মানুষের রক্ত লাল। আমি দেখেছি মানবতার ডাকে রক্তের প্রয়োজন হওয়ায় হিন্দুর শরীরে মুসলমানের রক্ত আবার মুসলমানের শরীরে হিন্দুর রক্ত দান করা হয়েছে। আমি নিজেও আমার এক হিন্দু বন্ধুর জন্য অসুস্থতার কারণে রক্ত দিয়েছি। আজ মানুষ এই বিষয়গুলো চিন্তা করে না। ধর্ম নিয়ে রেষারেষি কোন ধর্মই সমর্থন করে না। আমি মুসলমান। আমার ধর্মে কেউ আঘাত করলে আমার খারাপ লাগবে। আবার আমার কোন অধিকার নেই অন্য কারোর ধর্মে আঘাত করা। সাম্প্রদায়িক চিন্তা ধারা মানুষকে অমানুষে পরিণত করে। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে মাঝে মাঝে সাম্প্রদায়িক হামলা কেন হয়? ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের হিন্দুদের ওপর অনেক অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। তাদের সম্পদ লুণ্ঠন করা হয়েছে। এসব কারা করেছে? ’৭১-এর ঘাতক রাজাকার আলবদর বাহিনীর কুলাঙ্গাররা নিজেদের স্বার্থের জন্য এসব করেছে। আজ তাদের দোসরদের রক্তে এখনও সাম্প্রদায়িক ভাইরাস বয়ে চলেছে। স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হচ্ছে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে হানাহানি রক্তপাত। এতে দুইপক্ষই সক্রিয় থাকে। যা ভারতে অনেকবার হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যে হামলাগুলো হচ্ছে এগুলোকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বলে না। তাহলে বুঝতে হবে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে এই ধরনের হামলা ঘটানো হচ্ছে। এতে কিছু নিরীহ মানুষ বলির পাঁঠা হচ্ছে। দুঃখ লাগে এসব ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা হয়। ধর্মের অবমাননা যারা করছে তাদের আগে খুঁজে বের করতে হবে এবং আইনের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু তাই বলে নিরীহ মানুষের ওপর দল বল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া, তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া, সম্পদ লুণ্ঠন করা- এগুলো সব নিজেদের স্বার্থের জন্য করা হয়। এসব নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। আসলে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। যেই হোক না কেন ধর্মের অবমাননা করলে এবং মানুষের ওপর হামলা করলে তার বিচার রাষ্ট্রের কাছে আমরা প্রত্যাশা করি। দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম থেকে
×