ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘শিশুদের বাজেট পাঠ সহায়িকা’ শীর্ষক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী

আগামী অর্থবছরে বাজেটের ওপর জনমত জরিপ করবে সরকার

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

আগামী অর্থবছরে বাজেটের ওপর জনমত জরিপ করবে সরকার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের ওপর জনমত জরিপ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, বাজেট সম্পর্কে দেশের মানুষ কতটা সচেতন- সেটা জানার জন্য ২০১৭ সালে এ জরিপ করা হবে। বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘শিশুদের বাজেট পাঠ সহায়িকা’ শীর্ষক পুস্তিকার প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। যৌথভাবে অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও ইউনিসেফের তৈরি এ পুস্তিকার উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, জাতীয় বাজেট নিয়ে মানুষের মধ্যে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। মানুষ বাজেট সম্পর্কে জানতে চায়। এখন বেশ সচেতন তারা। তাই তাদের মধ্যে বাজেট সম্পর্কে কতটুকু ধারণা রয়েছে- তা জানতে ২০১৭ সালে একটি জনমত জরিপ করা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেট প্রকাশের পরই সবকিছুর দাম বাড়ে- মানুষের মধ্যে এমন ধারণা ছিল। এখনও অনেকেই এ ধারণা পোষণ করে। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় সরকার আসার পর দাম বাড়ার এই প্রবণতা অনেকাংশে কমেছে। দেশ এবং মানুষের কল্যাণের জন্যই বাজেট প্রণীত হয়। তাই কেউ বাজেট নিয়ে ধারণা দিলে- মানুষের কল্যাণের জন্যই তা গ্রহণ করা হবে। আগামী অর্থবছরে শিশু বাজেটের বিষয়ে তিনি বলেন, বাজেটের আকার প্রতিবছরে বাড়ে। শিশুদের জন্য প্রণীত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রথম বাজেট বেশি উন্নত ছিল না। দ্বিতীয় বাজেট বেশ উন্নত হয়েছে। তবে উন্নয়নের এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে শিশুদের সহায়তা প্রয়োজন। বাজেট সম্পর্কে ধারণা, আশা ও ইচ্ছার কথা জানাতে শিশু-কিশোরদের কাছে আহ্বান জানিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আগামী বাজেটের জন্য আমাকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। তোমাদের ধারণাকে কাজে লাগিয়ে শিশু বাজেটকে আরও সমৃদ্ধশালী করতে পারব। তিনি বলেন, প্রতিবছরে বাজেট ক্রমান্বয়ে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাজেটের কিছুটা ঘাটতি ছিল। কিন্তু বর্তমান অর্থবছরের বাজেটে কোন ধরনের ঘাটতি নেই। অনুষ্ঠানে ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এ্যাডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত ও সমতাভিত্তিক সম্পদ বরাদ্দ এবং তার কার্যকরী ব্যবহারে জাতীয় বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। শিশুরা উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। শিশুদের একটি সুন্দর জীবনের সূচনা দিতে তাদের পেছনে বিনিয়োগের চেয়ে ফলপ্রসূ ও কার্যকরী আর কোন বিনিয়োগ নেই। শিশুবিষয়ক উদ্যোগসমূহে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের অনুপাত বাড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে কারিগরি সহয়তা দিতে অর্থ বিভাগে একটি স্থায়ী ‘শিশুকেন্দ্রিক বাজেট ইউনিট’ প্রতিষ্ঠারও অনুরোধ জানান বেগবেদারম। শিশু বাজেট বিষয়ে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কিশোর-কিশোরীদের মাঝে সরকারী অর্থ ব্যয়ের প্রক্রিয়া এবং তাদের কল্যাণের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেই এই পুস্তিকা তৈরি করা হয়েছে। কিশোর-কিশোরীরা যাতে তাদের প্রয়োজনগুলো একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তুলে ধরার ক্ষেত্রে আরও অবদান রাখতে পারে সেজন্য তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আর এ লক্ষ্যে এই পুস্তিকার বিষয়বস্তু নিয়ে শ্রেণীকক্ষে আলোচনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় পুস্তিকাটি সব মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ বিভাগ। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি বলেন, শিশু বাজেটকে আরও সমৃদ্ধশালী করতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একটি করে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। শিশুদের নিয়ে আমাদের বড় ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে। জেলা-উপজেলার সব ইউনিয়নে একটি করে মোট ৪ হাজার ৪৮০টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব করা হবে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও জ্ঞানার্জন করতে পারবে তারা। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ বিভাগের সচিব মাহবুব আহমেদ, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক হাসান মনসুর, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এ্যাডওয়ার্ড বেগবেদার প্রমুখ।
×