ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

কবিতার পঙ্কিক্তিতে নরেন বিশ্বাসের জন্মদিন উদ্যাপন

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

কবিতার পঙ্কিক্তিতে নরেন বিশ্বাসের জন্মদিন উদ্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্প-সাহিত্য ও বাচিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আবৃত্তিশিল্পী নরেন বিশ্বাস। বুধবার ছিল এই বাচিক শিল্পীর জন্মদিন। এ উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে এদিন সন্ধ্যায় কবিতার পঙ্ক্তিতে নরেন বিশ্বাস জয়ন্তী উদ্যাপন করে কণ্ঠশীলন। অনুষ্ঠানে তাঁর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন অভিনেতা ও নাট্য নির্দেশক ম. হামিদ। তিনি বলেন, বাংলা ভাষার প্রমিত উচ্চারিত রূপের জন্য নরেন বিশ্বাসের আত্মত্যাগ, নিরলস কর্ম পরিচালনা, সবকিছুর মূলে ছিল ভাষা নিয়ে তাঁর নিবিড় গবেষণা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, প্রতি শুক্রবারের কণ্ঠশীলনের ক্লাস, বিভিন্ন আবৃত্তি ও নাটকের দলের ক্লাসে তার কোন বিরতি ছিল না। এক সময় তিনি চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেন। প্রায় অন্ধ চোখে অন্যের হাত ধরে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলে যেতেন-উচ্চারণের ক্লাস নিতে। কাঠ-কাঠ ক্লাসটিকে মধুর করে শিক্ষার্থীর হৃদয় পর্যন্ত নেয়ার কাজটি হয়ত অনেকে করতে পারতেন না, সেটি পারতেন কেবল নরেন বিশ্বাস। তাঁর ক্লাসে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা এবং আনন্দ দুটোই গ্রহণ করতেন। সব প্রশ্ন উল্টোবাণে নিস্তব্ধ নিথর হয়ে পড়ে যখন নরেন বিশ্বাস তাঁর ঐশ্বর্যময় স্বরের দ্বার খুলতে আরম্ভ করতেন এক এক করে। এই বিস্ময়কর সৃষ্টির ফল এই সমাজ এখন বহন করছে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাষ্ট্রিক সুরুচি প্রকাশের মাধ্যম এই ভাষাটির প্রকাশ আজ আন্তরিক হয়েছে এবং প্রেমময়Ñ যাঁদের কারণে, তাঁদেরই অন্যতম প্রধান অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস। অনুষ্ঠানের শুরুতে নরেন বিশ্বাসের স্বকণ্ঠে তাঁর প্রিয় পঙ্ক্তিমালা থেকে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদ বধ’ কাব্যের নির্বাচিত অংশের রেকর্ড শোনানো হয়। পরে নরেন বিশ্বাসের জীবনী পাঠ করেন শিরিন ইসলাম। এরপর নরেন বিশ্বাসকে নিবেদন করে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট নীলোৎপল সাধ্য। আরও আলোচনা করেন কণ্ঠশীলন সভাপতি, প্রশিক্ষক, নির্দেশক, আবৃত্তিশিল্পী গোলাম সারোয়ার। বক্তারা বলেন, বাংলা উচ্চারণ গবেষণায় নরেন বিশ্বাসের অবদান অবিস্মরণীয়। ছাত্র জীবন থেকেই তাঁর নাট্যচর্চা শুরু। স্কুল ও কলেজে আবৃত্তি ও বাগ্মিতায় নানা পুরস্কারও লাভ করেছেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকালে পাকবাহিনীর হাত এড়িয়ে ভারতের কলকাতায় এসে পৌঁছেন। এ সময় বাংলা বেতারের জন্য ‘নাটক’, ‘কথিকা’, ‘জীবন্তিকা’, ‘নক্সা’ প্রভৃতি রচনা ও তাতে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে এসে গোর্কির ‘মাদার’ অবলম্বেনে ‘মা’ নাটক রচনা ও মঞ্চায়ন করেন। চারুকলার জয়নুল গ্যালারিতে চলছে ‘ছক্কা’ শীর্ষক যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ॥ গ্যালারিতে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে কাঠের তৈরি হাতি, গাভীসহ বিভিন্ন মূর্তির অবয়ব। গ্যালারির দেয়ালে শোভা পাচ্ছে কাঠ খোদাইকৃত নারী, পারিবারিক দৃশ্য, মৎসজীবী নারী, প্রণয়মুহূর্ত, জল রং দিয়ে আঁকা হয়েছে বিভিন্ন গাছ, ফুলসহ নানান চিত্রকর্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারি-১-এ এসব চিত্রকর্ম নিয়ে চলছে ‘ছক্কা’ শীর্ষক যৌথ চিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি চলবে ১৯ নবেম্বর পর্যন্ত এবং প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে।
×