ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নালিশ করাই বিএনপির প্রধান কর্মসূচী ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

নালিশ করাই বিএনপির প্রধান  কর্মসূচী ॥ কাদের

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া, ১৬ নবেম্বর ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ কখনও পথ হারাবে না। বিশ^ দরবারে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বর্তমান সরকারের আমলে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ঘরে ঘরে বিদ্যুত, চিকিৎসা সেবা, গ্রামে গ্রামে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। তাই দেশের উন্নয়ন ও জনকল্যাণে বার বার দরকার ‘শেখ হাসিনার সরকার’। আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্য তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বুধবার বিকেলে কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। বিএনপিকে একটি ‘নালিশী দল’ আখ্যায়িত করে মন্ত্রী বলেন, নালিশ করাই হচ্ছে বিএনপির প্রধান কর্মসূচী। ক্ষমতার জন্য বিএনপি বিদেশীদের দিকে তাকিয়ে আছে। সংখ্যালঘু ও সাঁওতালদের হামলা ঘটনাটির দায় সরকারের উপর চাপানোর অপচেষ্টা চালিয়েছে বিএনপি। সুতরাং বিএনপি সম্পর্কে যত কম কথা বলা যায় ততই মঙ্গল বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি তরুণ ও যুবকদের উদ্দেশে বলেন, সর্বনাশা ইয়াবাসহ মাদক যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাই সর্বদা মাদক ও দুর্নীতিকে না বলতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল প্রকল্প ও কর্ণফুলী টানেলসহ বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের মানুষ এখন অনেক শান্তিতে রয়েছে। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের দাম্ভিকতা পরিহার করে জনতার কাতারে শামিল হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের মধ্যে যেসব বসন্তের কোকিল রয়েছে তাদের সংশোধন হয়ে দলীয় কাজ করতে হবে। শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের দলে কোন ঠাঁই হবে না বলে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, মানুষের মনে কখনও কোন কষ্ট দিবেন না, তাহলে জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেবে। আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আসতে হবে। আর তাই ভেদাভেদ ভুলে আগামী নির্বাচনে বিজয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাক্তার দিপু মনি এমপি বলেন, দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি ভালবাসা থেকে শেখ হাসিনার সরকার দেশের ব্যাপক উন্নতি করেছে। বর্তমান সরকারের সময়ে গণতন্ত্র সুসংহত হয়েছে। এছাড়া বিশ^ দরবারে বাংলাদেশ অনন্য দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনে যাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিপুলভাবে বিজয় লাভ করতে পারে সেজন্য এখন থেকেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জনসভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি, বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, রেজাউল হক চৌধুরী এমপি, আব্দুর রউফ চৌধুরী এমপিসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ সদরউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে আব্দুর রহমান এমপি, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। নিজস্ব সংবাদদাতা ঝিনাইদহ থেকে জানান, যারা জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবে আগামী নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এক পথসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। সংবর্ধনা ॥ আওয়ামী লীগের নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় বুধবার কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ গণসংবর্ধনা ও সমাবেশের আয়োজন করে। সংবর্ধনায় যোগ দিতে মন্ত্রী কুষ্টিয়া যাওয়ার সময় বেলা পৌনে একটার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ ফুল দিয়ে মন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শাপলা ফোরাম, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ফুল দিয়ে তাঁকে বরণ করে নেন। এসময় হাজার হাজার শিক্ষার্থী রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে ফুলের পাপড়ি ছিঁড়ে স্বাগত জানান। যশোরে ওবায়দুল কাদের ॥ স্টাফ রিপোর্টার যশোর অফিস থেকে জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, যারা বিভেদ করবে, শৃঙ্খলা মানবে না, তাদের দলে থাকার অধিকার নেই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হোন। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। বুধবার সকাল ১০টায় যশোর সার্কিট হাউসে নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত ওবায়দুল কাদের বলেন, ফুল দিয়ে নেতাদের খুশি করার প্রয়োজন নেই। এখন প্রয়োজন জনগণকে খুশি করা। জনগণকে খুশি করুন। জনগণের ভালবাসা অর্জন করতে হবে। নেতার জন্য যে ফুল এনেছেন, তা শুকিয়ে যাবে। কিন্তু মানুষের ভালবাসার ফুল কোন দিন শুকিয়ে যাবে না। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, ডাঃ দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ প্রমুখ। এর আগে সকাল আটটা ১৫ মিনিটে যশোর বিমানবন্দরে পৌঁছলে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে তিনি যশোর সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছান। এরপর তিনি কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন।
×