ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফিরিয়ে দিন ॥ ট্রাম্পকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আহ্বান

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফিরিয়ে দিন ॥ ট্রাম্পকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আহ্বান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনীদের বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সেদেশের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে থাকে, তাহলে সে দেশে অবস্থানরত বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফেরত দিন।’ বুধবার বিকেলে সেগুনবাগিচায় বিএমএ ভবন মিলনায়তনে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে এই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত মুন্না, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েসনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, স্বাচিপের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ কনক কান্তি বড়–য়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ উত্তম বড়–য়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম এ আজিজ। ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থেকে শিক্ষা নিন’ আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে দেয়া বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমিও আপনাদের বলি আপনারাও সে দেশের নির্বাচন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। কারণ সেদেশে ক্ষমতাসীন দলের অধীনে ট্রাম্প নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন। আপনারাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। যুক্তরাষ্ট্রে যদি ক্ষমতাসীন দলের অধীনে নির্বাচন হয়, তাহলে বাংলাদেশে কেন হবে না? তাই বিএনপি নেতাদের বলি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন থেকে আপনারা শিক্ষা নিয়ে ২০১৯ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। জনগণ যাদের সমর্থন দেবে তারাই বিজয়ী হবে। আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে আবারও ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। তাই আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে। দেশের মানুষ চায় না যারা একাত্তরের ঘাতক-খুনী ও রাজাকারদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা আবার তারা ক্ষমতায় আসুক। দেশের মানুষ চায় রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে জনগণ তো দূরের কথা, নিজের নেতাকর্মীরাও নেই। উনি সমাবেশ করবেন কাদের নিয়ে? বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তিন বছরেরও বেশি সময় দেশে কারফিউ গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়া এখন গণতন্ত্রের ছবক দেন। অথচ তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ওই হামলায় ব্যবহƒত তাজা গ্রেনেডে সেদিন বেগম আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সেই নারকীয় হামলার বিচার তো দূরের কথা, সুষ্ঠু তদন্ত পর্যন্ত করা হয়নি। বরং জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চক্রান্ত করা হয়। চীনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাংলাদেশ ॥ বাংলাদেশকে চীনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে অভিহিত করে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে সে দেশের সরকারের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংকিয়াং। বুধবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে সাক্ষাত করতে এসে রাষ্ট্রদূত এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের জনগণ যেন সহজে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা পায় সে লক্ষ্যেও চীন সহযোগিতার হাত বাড়াতে প্রস্তুত। বিশেষ করে দক্ষ চিকিৎসক, নার্স ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট তৈরিতে প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিতে চীন রাজি আছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় বলেন, চীন বাংলাদেশের এক বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী। চীনের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ কাজ করছে। গত অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে চীনের সহায়তা আরও বাড়ানোর জন্য মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অর্জন আজ সারা বিশ্বে প্রশংসিত। তিনি চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, কয়েকটি সরকারী হাসপাতাল সংস্কার, একটি ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণসহ ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিট সম্প্রসারণে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন।
×