ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হজ কোটা বাড়ানোর আশ্বাস সৌদি আরবের

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১৭ নভেম্বর ২০১৬

হজ কোটা বাড়ানোর আশ্বাস সৌদি আরবের

সংসদ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের হজ কোটা বাড়ানোর আশ^াস দিয়েছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। আগামী হজ মৌসুম থেকে বর্তমান কোটার চেয়ে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশী হাজী হজব্রত পালনের সুযোগ পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ-সৌদি আরব সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপ। এ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন জানান, সৌদি আরবে হজ মজলিসের কাছে হাজীদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধির অনুরোধ করলে বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন। বজলুল হক হারুনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সংসদীয় একটি প্রতিনিধি দল ৫-১৩ নবেম্বর সৌদি আরব সফরের সফলতা ও অগ্রগতি তুলে ধরতেই এ প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। তিনি জানান, বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন ঠেকাতে তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। ফলে এ নির্যাতনের হার একেবারেই নগণ্য পর্যায়ে নেমে এসেছে। সফরকালে সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে জানিয়ে বজলুল হক হারুন বলেন, সফরকালে সৌদি মজলিসে শূরার প্রধান (স্পীকার) ও ধর্মমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে হজ বিষয়ে তাদের আলোচনা হয়েছে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৮৫৭ জন হজব্রত পালন করেছেন। তবে কোটা না থাকায় আরও প্রায় ৪০ হাজার ব্যক্তি হজে যেতে পারেননি। বিষয়টি জানানোর পর মজলিসে শূরাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগামী বছর থেকে বাংলাদেশের হজ কোটা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে ধর্মীয় চেতনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য হাজীদের সংখ্যা বাড়ছে। তাই অন্যান্য দেশে কোটা কমানো হলেও বাংলাদেশের জন্য তা বাড়ানো প্রয়োজন বলে সৌদি কর্তৃপক্ষকে বোঝানো সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব কর্তৃপক্ষও সন্তুষ্ট। এসব কারণেই তারা বাংলাদেশ থেকে বেশিসংখ্যক মানুষকে হজ পালনের সুযোগ দিতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। ই-হজ ব্যবস্থাপনার ফলে সৌদি আরবে জনবল নিয়োগ ও হজযাত্রার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়েছে বলেও দাবি জানান তিনি। হজে গিয়ে এ দেশের হাজীদের ফেরত না আসা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ-সৌদি আরব সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের চেয়ারম্যান বজলুল হক হারুন বলেন, বিষয়টি নিয়ে সৌদি আরবে দুই দেশের হজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, এ বছর মাত্র ৪ জন বাংলাদেশী হাজীর খোঁজ মেলেনি। আরও ২৭-২৮ জন অসুস্থতার কারণে হাসপাতাল কিংবা আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে রয়ে গেছেন। এছাড়া একজন হাজীও হজ করতে গিয়ে থেকে যাননি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সৌদি আরবের শ্রম ও সমাজ উন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গে শ্রমবাজার ও বাংলাদেশ থেকে নিয়োগকৃত গৃহকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে সৌদি আরবে অবস্থানরত শ্রমিকরা ও গৃহকর্মীরা বেশ ভাল আছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে সৌদি কর্তৃপক্ষ তাদের সম্পর্কে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন। বজলুল হক হারুন জানান, বাংলাদেশী নারী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ বিষয়েও তারা সংশ্লিষ্টদের কাছে খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রতিনিধি দল জানতে পেরেছেন সৌদি আরবে ৭০ হাজার নারীশ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে মাত্র ৩১৫ জন শেল্টার হোমে রয়েছেন। সৌদি সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশী নারীশ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের হার যা দাঁড়িয়েছে, তা কোন শতাংশের মধ্যেই পড়ে না। প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ প্রতিনিধি দলের সদস্য এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন এমপি, নজরুল ইসলাম বাবু এমপি এবং বায়রার সভাপতি বেনজির আহমেদ। উল্লেখ্য, সৌদি আরবের মজলিশে শূরার প্রধানের (স্পীকার) আমন্ত্রণে ৬ সদস্যের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল সৌদি আরব সফর করেন। গত ৫-১৩ নবেম্বর পর্যন্ত সফরের সময় প্রতিনিধি দল সৌদি আরবের মজলিশে শূরার প্রধান, শ্রম ও সমাজ উন্নয়নমন্ত্রী, ধর্মমন্ত্রী এবং নবনিযুক্ত ওআইসি’র মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন।
×