ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বুশরা হত্যা মামলা

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাদের ও তার স্ত্রী যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত রুনাসহ সবাই খালাস

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৬ নভেম্বর ২০১৬

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাদের ও তার স্ত্রী যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত রুনাসহ সবাই খালাস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ ১৬ বছর আগে মালিবাগের চৌধুরীপাড়ায় চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্রী রুশদানিয়া বুশরা হত্যা মামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত এমএ কাদের ও তার স্ত্রী যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত রুনা আক্তারসহ চারজনের সবাইকে খালাস দিয়েছে আপীল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপীল বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেয়। নিম্ন আদালতে মৃত্যুদ- পাওয়া ও পরে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া দুজনের খালাস আদেশ বহাল রয়েছে। তারা হলেন- এমএ কাদেরের দুই শ্যালক শেখ শওকত আহমেদ ও শেখ কবির আহমেদ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান। আসামিপক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান জানান, রায়ের কপি পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে রিভিউয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ২০০০ সালের ১ জুলাই কলেজছাত্রী বুশরাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। বুশরার বাবা সহকারী পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম সে সময় অবসরকালীন ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। বুশরার মা লায়লা ইসলাম হত্যাকা-ের পরদিন রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ধর্ষণের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয় বুশরাকে। ২০০০ সালের ৫ অক্টোবর একটি সম্পূরক অভিযোগ দাখিল করেন বুশরার মা। সেখানে বুশরার খালুর সৎভাই কাদের, তার স্ত্রী রুনা ও কাদেরের শ্যালক মোঃ শওকত আহমেদ ও কবির আহমেদকে আসামি করা হয়। প্রথমে পুলিশ ও পরে সিআইডি এ মামলার তদন্ত করে ২০০০ সালের ১৯ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। সেখানে কাদেরের শ্যালিকা কানিজ ফাতেমা হেনা ও কাজের মেয়ে সুফিয়াকেও আসামি করা হয়। ২০০৩ সালের ৩০ জুন বুশরা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালত রায় দেয়। রায়ে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও রুনা আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপীল করেন। ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ও বিচারপতি ফজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ কাদেরের মৃত্যুদ- ও রুনা আক্তারের যাবজ্জীবন কারাদ- বহাল রেখে বাকিদের খালাস দেয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেছিল দুই পক্ষই। মঙ্গলবার আপীল বিভাগের রায়ে দুই আসামির আপীল মঞ্জুর হয়, ফলে খালাস পান তারা। অন্যদিকে হাইকোর্টে দুই আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপীল সর্বোচ্চ আদালত খারিজ করে দেয়ায় আগের রায়ই বহাল থাকে। রায়ের পর মোহাম্মদ দিলীরুজ্জামান বলেন, চাক্ষুষ সাক্ষী না থাকায় ন্যায়বিচার পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত দুজনের আপীল মঞ্জুর করেছে। আর আমাদের আপীল খারিজ করেছে। খন্দকার মাহবুব বলেন, নিম্ন আদালত সন্দেহের বশবর্তী হয়ে রায় দিয়েছিল। বুশরাকে অজানা ব্যক্তিরা ধর্ষণ করে হত্যা করেছে।
×