ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভিসি, প্রো-ভিসি, কোষাধ্যক্ষ নেই

অধিকাংশ প্রাইভেট ভার্সিটিতে অন্তহীন অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৬ নভেম্বর ২০১৬

অধিকাংশ প্রাইভেট ভার্সিটিতে অন্তহীন অনিয়ম

বিভাষ বাড়ৈ ॥ বেশিরভাগ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়েই নিয়মিত সিন্ডিকেট ও একাডেমিক সভা করা হয় না। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ নেই বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিবছর আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা হিসাব দাখিলের বিধান থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) তা জমা দেয় না অধিকাংশই। যা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যেখানে আয় বাড়লেও বাড়েনি মান। মাত্র ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় লাভ করতে পেরেছে স্থায়ী সনদ। উপাচার্য নেই ২০টিতে, ৬৫টিতে উপ-উপাচার্য ও ৪৫টিতে নেই কোষাধ্যক্ষ। দেশের উচ্চশিক্ষা তদারকী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ (৩২তম) বার্ষিক প্রতিবেদনে দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সমস্যা নিয়ে এসব তথ্যই উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আয় বাড়লেও মান বাড়ছে না বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২৪ বছরে নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছে মাত্র ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা ছাড়াই চলছে ২৮ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে প্রতিবেদনে অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক আয়ের বিপরীতে মানহীন শিক্ষার চিত্র যেমন উঠে এসেছে তেমনি উঠে এসেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার নানা সংকটের চিত্র। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান এবং পরীক্ষা ও খাতা মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার সঙ্গে সঙ্গে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে। তাগাদা দেয়া হয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সংস্কার আনারও সুপারিশ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে ইউজিসি। বার্ষিক প্রতিবেদনে অনেক বিষয়ে আগের কয়েক বছরের প্রতিবেদনের মিল পাওয়া গেলেও উঠে এসেছে বেশ কিছু নতুন বিষয়ও। এই মুহূর্তে দেশে ৯৫টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে। গত বছরের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন হওয়ায় এখানে উঠে এসেছে ৮৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা। আর ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রায় আড়াই হাজার কলেজে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীরা অধ্যয়ন করছেন। বর্তমানে দেশে উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী অন্তত ৩২ লাখ। প্রতিবেদনে বিশেষভাবে নজর দেয়া হয়েছে দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের দিকে। ইউজিসি বলছে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে কমিশনের একজন সদস্য অথবা কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে ২০ বছরের শিক্ষকতাসহ গবেষণা বা প্রশাসনিক কাজে অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন একজন ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষক মনোনয়ন দেয়া যেতে পারে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর পদে স্থায়ী শিক্ষকদের সংখ্যা আশানুরূপ নয়। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে মেধাবীদের দেশত্যাগ নিরুৎসাহিত করতে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত সিএ ফার্ম থেকে সরকার মনোনীত একটি ফার্ম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিরীক্ষা করাতে হবে। কিন্তু সিএ ফার্ম মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যায়ের প্রস্তাবিত তিনটি ফার্মের মধ্যে সরকার একটি প্রতিষ্ঠানকে মনোনয়ন দেয়। এ ক্ষেত্রে আর্থিক বিষয়ে প্রকৃত তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব না নিয়ে শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বারা নিরপেক্ষ কোন ফার্ম নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিরীক্ষা করানো যেতে পারে। ইউজিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা হিসাব দাখিলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনীহার কথা। অথচ প্রতি শিক্ষাবর্ষের আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে সরকারের। জানা গেছে, সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারী অর্থে পরিচালিত হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা সরকারী উদ্যোগে করা হয়। আর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কোন নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের (সিএ ফার্ম) মাধ্যমে নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন ইউজিসিতে জমা দেয়ার কথা। প্রতিবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। ইউজিসির প্রতিবেদন বলছে, নিরীক্ষা প্রতিবেদন হালনাগাদ রয়েছে মাত্র আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের। কার্যক্রম পরিচালনাকারী বাকি অর্ধশতাধিক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নিরীক্ষা প্রতিবেদন হালনাগাদ করে ইউজিসিতে জমা দেয়নি। প্রথম সারির অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে এর মধ্যে। এর বাইরেও বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম রয়েছে দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়। ইউজিসির পক্ষ থেকে নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়মিত সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও অর্থ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় না। ২০১৪ সালে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কোন সভাই অনুষ্ঠিত হয়নি, এক বছরে একবারের জন্যও সিন্ডিকেট সভা করেনি ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়, একাডেমিক কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়নি ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং অর্থ কমিটির সভা করেনি ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া নম্বরপত্র, সনদ ও প্রশংসাপত্র প্রদানে উচ্চহারে ফি গ্রহণ, টিউশন ও ভর্তি ফি বৃদ্ধিসহ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম উঠে এসেছে ইউজিসির ওই প্রতিবেদনে। আইন অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে পুরোপুরি নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ১৩টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসে আংশিক শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে ১৬টি, ফাউন্ডেশনের জমিতে ক্যাম্পাস করেছে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়। ৩৭টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করছে। কম জমিতে ক্যাম্পাস নির্মাণাধীন রয়েছে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে সকল যোগ্যতা পূরণ করে মাত্র ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী সনদ পেয়েছে। এগুলো হচ্ছে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। গত বছর দেশের ৮৫টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট আয় ছিল প্রায় দুই হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। গড়ে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় আয় করেছে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের তুলনায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যায়গুলোতে মোট আয় বেড়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। প্রতি বছরই বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও আয় বাড়লেও মান সেভাবে বাড়ছে না। মঞ্জুরি কমিশন বলছে, কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মান সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত হলেও অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানই আশানুরূপ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২০১৫ সালের সমস্ত তথ্য নিয়ে তৈরি করা এই প্রতিবেদনে বেশকিছু সুপারিশও করেছে ইউজিসি। সেখানে বলা হয়েছে, অধিকাংশ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর পদে স্থায়ী শিক্ষক আশানুরূপ নয়। পূর্ণকালীন ১০ হাজার ১৮৮ জন শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ৭০৮ জন অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ৫৬৪ জন, সহকারী অধ্যাপক দুই হাজার ১৭৮ জন। তবে লেকচারার ছয় হাজার ৫১২ জন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক বিভাগই রয়েছে যেখানে অধ্যাপক তো দূরের কথা সহযোগী অধ্যাপকও নেই। ফলে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার মান আশানুরূপভাবে বাড়ছে না। ১৯৯২ সাল থেকে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছে। তবে ২৪ বছরে পুরোপুরিভাবে মাত্র ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। গবেষণাকেই বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ। কিন্তু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা নিয়েই প্রচ- অনীহা রয়েছে। গত বছর ৮৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণা খাতে ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় কোন বরাদ্দ রাখেনি। গবেষণা খাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মোট ব্যয় ছিল ৮১ কোটি টাকা। ৫৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটির গবেষণায় গড় ব্যয় ছিল প্রায় দেড় কোটি টাকা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজ নিজ বার্ষিক বাজেটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ গবেষণার কাজে ব্যয় করার কথা। কমিশন আশা করে যে, উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের পাশাপাশি জাতীয় উন্নয়নের কথা বিবেচনায় রেখে পরবর্তী শিক্ষাবছর থেকে এ সকল বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিতভাবে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও ব্যয় করবে। গত বছর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ৬১ হাজার ৪৮২ জন শিক্ষার্থী ডিগ্রী লাভ করেছেন। সবচেয়ে বেশি দুই হাজার ৯৪৪ জন শিক্ষার্থী ডিগ্রী পেয়েছে অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এ্যান্ড টেকনোলজি থেকে। এরপর সর্বোচ্চ ডিগ্রী বিতরণ করেছে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, আন্তর্জাতিক ইসলামী ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম ও ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি এ্যান্ড সাইন্স। গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায় দুই হাজার ৭৯১ কোটি টাকা আয় করলেও ব্যয়ও করেছে প্রায় দুই হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। আয়-ব্যয় সমান দেখিয়েছে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়। আয়-ব্যয় কিভাবে সমানে সমান হয় তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। আয়-ব্যয় সমান হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এ্যান্ড টেকনোলজি, ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি, ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি, নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী সাইন্স এ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি, শেখ ফজিলাতুন্নেসা ইউনিভার্সিটি ও পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি। প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীদের জঙ্গী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এজন্য ইউজিসি বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, জঙ্গী তৎপরতা উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গীবাদের চারা গজিয়েছে তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা কার্যক্রমেও কিছু পরিবর্তন আনার চিন্তা চলছে। বাংলা, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস ও ন্যায়শাস্ত্র এই তিনটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। এছাড়া প্রথম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সপ্তাহে তিনঘণ্টা পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। তবে এটা হবে বাধ্যতামূলক ও নন ক্রেডিট কোর্স। জঙ্গী তৎপরতা প্রতিরোধ কমিটি সরকার বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে ফান্ড চাইতে পারে। মানবিক, সাংস্কৃতিক ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রতের জন্য বাংলা, ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, খেলাধুলা ইত্যাদি এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রম প্রবর্তন করতে হবে। ছাত্র শিক্ষক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাউন্সিলিং ও মনো চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। এদিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের পেছনে রাজনীতি, শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকা-কে দায়ী করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যোগ্যতা তুলনামূলক বেশি থাকায় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের চাহিদা বেশি। এ প্রেক্ষাপটে কিছু শিক্ষক একাধিক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে খ-কালীন শিক্ষকতা করে থাকেন। এতে নিজ প্রতিষ্ঠানে যথাযথ সময় দেয়া হয় না। এর ফলে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দিন দিন বাড়ছে সেশনজট। পরীক্ষা পদ্ধতি যুগোপযোগী করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে ইউজিসির পক্ষ থেকে। আরও বলা হয়েছে, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম বাঁধিয়ে অশান্ত হয়ে উঠে ক্যাম্পাস; বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিশ্বিবিদ্যালয়। রাজনৈতিক বলির সেশনজটের শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। অনেক ক্ষেত্রে চার বছরের সম্মান কোর্স শেষ করতে সময় লেগে যায় সাড়ে ছয় বছরেরও বেশি। অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাজনীতি চলে এসব শিক্ষাঙ্গনে। অভিযোগ রয়েছে প্রশাসন ও বিভাগের অবহেলার কারণেই সেশন জট বৃদ্ধি পাচ্ছে।
×