ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

১০.২১ শতাংশ কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিতে

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১৬ নভেম্বর ২০১৬

১০.২১ শতাংশ কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিতে

অর্থনৈতিক রিপোটার ॥ তালিকাভুক্ত কোম্পানির আর্থিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে শেয়ার দর। আর্থিক ভিত্তির ওপরই লভ্যাংশ ঘোষণায় প্রভাব পড়ে। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরের মন্দ ব্যবসার প্রভাবেই এবারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর নো ডিভিডেন্ড বা লভ্যাংশ না দেয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ফলে শেয়ারবাজারেও ওই কোম্পানিগুলোর দর কমেছে। লোকসান গুনতে হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের। গত অর্থবছরের জন্য নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৩০ কোম্পানি। মোট শতাংশ হিসেবে ১০.২১ ভাগ কোম্পানির জেড ক্যাটাগরিতে নেমেছে। কোম্পানিগুলো হলো- শাইনপুকুর সিরামিক, বেক্সিমকো সিনথেটিকস, ঝিল বাংলা সুগার, শ্যামপুর সুগার, বিডি ওয়েল্ডিং, সুহৃদ ইন্ড্রাস্টিজ, আজিজ পাইপস, আইএসএন, জুটস স্পিনার্স, মেট্রো স্পিনার্স, বিআইএফসি, দুলা মিয়া কটন, দেশবন্ধু পলিমার, মেঘনা পেট, অলটেক্স, রহিমা ফুড, সমাতা লেদার, ইমাম বাটন, কে এ্যান্ড কিউ, বিডি সার্ভিসেস, বিচ হ্যাচারি, বঙ্গজ, ঢাকা ডাইং, সাভার রিফ্যাক্টরিজ, খুলনা প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং, লিগ্যাসি ফুটওয়ার, ম্যাকসন্স স্পিনিং, সিনো বাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ ও তাল্লু স্পিনিং। ডিএসইর ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গেছে, জেড ক্যাটাগরিতে চলে যাওয়া এই কোম্পানিগুলো বেশিরভাগই আগের অর্থবছরে নো ডিভিডেন্ড দেয়ার কারণে জেড ক্যাটাগরিতেই ছিল। এই তালিকায় নতুন করে যোগ হয়েছে অলটেক্স, সিনো বাংলা, বঙ্গজের মতো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি। এই তিন কোম্পানিরই সমাপ্ত অর্থবছরে মুনাফা করেছে। কিন্তু কোম্পানি তিনটির পরিচালনা পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের জন্য কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। ফলে কোম্পানি তিনটির দরও হঠাৎ করেই তলানিতে চলে গেছে। বড় ধরনের লোকসানে পড়ে গেছে বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু লাভে থেকেও কোন লভ্যাংশ ঘোষণা না করায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে তদন্ত করারও নজির নেই। এই কারণে কোম্পানিগুলোরও কোন জবাবদিহিতা নেই। উল্টো এজিএমে ভাড়াটে লোক দিয়ে এজেন্ডা পাস করানোর অভিযোগও বেশ পুরনো। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ট্রেজারি বন্ড, ডিবেন্ডার, মিউচুয়াল ফান্ড ছাড়া প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন খাতের কোম্পানির সংখ্যা ২৯৪। এর মধ্যে ব্যাংক, বীমা, ব্যাংক বহির্র্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো ছাড়া বাকি সব কোম্পানিরই হিসাব বছর জুন মাসে শেষ হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নতুন আইন অনুসারে এই কোম্পানিগুলোই আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। শতকরা হিসেবে মোট ১০.২১ শতাংশ কোম্পানি জেড ক্যাটাগরিতে নেমে গেছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, কোম্পানিগুলো ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে শেয়ার বাজার থেকে টাকা তুলেছে। তালিকাভুক্তির পর থেকেই মুনাফা কমতে শুরু হয়েছে। প্রথম দুই তিন বছর লভ্যাংশ প্রদান করলেও আস্তে আস্তে লভ্যাংশ দেয়া কমিয়ে দিতে দিতে নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। তাই আইপিও অনুমোদন করার সময় সংশ্লিষ্টদের আরও যত্মবান হওয়া উচিত। বিশেষ করে কোম্পানি সম্পর্কে তথ্য-যাচাই বাছাই করা ছাড়া আইপিও অনুমোদন দেয়া উচিত নয়। উল্লেখ্য, গত কিছুদিন আগেও সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অব বাংলাদেশের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেনও আইপিও অনুমোদনে এই দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন।
×