ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শীতে বাতের ব্যথায় চিকিৎসা ও করণীয়

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৫ নভেম্বর ২০১৬

শীতে বাতের ব্যথায় চিকিৎসা ও করণীয়

ষড়ঋতু বাংলাদেশে এখন মূলত গরম ও শীত এই দুই ঋতুরই প্রাধান্য বেশি। গরমকালে বাতের ব্যথা থাকলেও মানুষকে যতটা না কাবু করে তার চেয়ে শীত ঋতুতেই রোগীর ব্যথা বেদনা বেড়ে যায়। শীতপ্রধান দেশগুলোতেও এই জাতীয় সমস্যাই মূলত বেশি। আমাদের দেশে শীত পড়তে শুরু করেছে এবং এর তীব্রতাও আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে। আর শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাত ব্যথার কষ্টও বাড়তে থাকবে। তাই শীতে কিভাবে ব্যথা বেদনা থেকে সুস্থ থাকা যায়, তা নিয়ে আজ লিখেছি। স্বাস্থ্য সচেতনতা, চিকিৎসা সুবিধা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি পরিবর্তনের ফলে দিনে দিনে মানুষের বয়স বৃদ্ধি পাচ্ছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শারীরিক, মানসিক শক্তি ও দেহ কোষের কর্মক্ষমতা বা সামর্থ্য ধীরে ধীরে কমতে থাকে। টিস্যুর এই সামর্থ্য ক্রমাবনতির হার বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনুপাতে হয়। একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধ যেমন কর্মক্ষম থাকতে পারেন, তেমনি আবার ৫০/৬০ বছর বয়সের ব্যক্তিরা ভুগতে পারেন বিভিন্ন ধরনের বার্ধক্যজনিত সমস্যা ও জয়েন্ট বা মাংসপেশীর ব্যথায় যাকে আমরা সহজ ভাষায় বাত বলে জানি। সাধারণত মহিলাদের ৪০ বছর পর, পুরুষরা ৫০ বছর পর বয়সজনিত জয়েন্টের সমস্যায় ভুগে থাকেন। আমাদের দেশের ৫০ উর্ধ জনসংখ্যার শতকরা ৬৫ ভাগ লোক ব্যথাজনিত সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে যেসব জয়েন্ট শরীরের ওজন বহন করে এবং অতিরিক্ত ব্যবহৃত হয় যেমন : ঘাড়, কোমর, স্কন্ধ বা সোল্ডার জয়েন্ট এবং হাঁটু ব্যথার রোগী সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। বাতের ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে। তার মধ্যে ৯০ ভাগ হচ্ছে ‘মেকানিক্যাল সমস্যা’। মেকানিক্যাল সমস্যা বলতে মেরুদ-ের মাংসপেশী, লিগামেন্ট মচকানো বা আংশিক ছিঁড়ে যাওয়া, দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক সমস্যা, কশেরুকার অবস্থানের পরিবর্তনকে বুঝায়। অন্যান্য কারণের মধ্যে বয়সজনিত হাড় ও জোড়ার ক্ষয় বা বৃদ্ধি, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা গেঁটেবাত, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস, এনকাইলজিং স্পন্ডাইলোসিস, বার্সাইটিস, টেন্ডিনাইটিস, স্নায়ুবিক রোগ, টিউমার, ক্যান্সার, মাংসপেশীর রোগ, শরীরে ইউরিক এ্যাসিড বেড়ে গেলে, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, শরীরের অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি। শীতে এই সকল সমস্যার ব্যথা আরও বেড়ে যায় এবং রোগী অসুস্থ ও কর্মহীন হয়ে পড়ে। মানুষের রোগের ভেতর ব্যথা বা যন্ত্রণা একটি অস্বস্তি ও কষ্টকর সমস্যা। আল্লাহতাআলা শরীরে বিভিন্ন ধরনের জয়েন্ট বা সন্ধি আমাদের স্বাভাবিক চলাচল এবং কর্ম সম্পাদন করে জীবন নির্বাহের জন্য দিয়েছেন। সাধারণত দুই বা দুইয়ের অধিক হাড় বা তরুণাস্থি শরীরের কোন এক জায়গায় সংযোগস্থাপনকারী টিস্যুর মাধ্যমে যুক্ত হয়ে একটি অস্থি সন্ধি বা জয়েন্ট তৈরি করে। আর এই সংযোগ স্থাপনকারী টিস্যুগুলো হচ্ছে মাংসপেশী, টেন্ডন, লিগামেন্ট, ক্যাপসুল, ডিস্ক, সাইলোভিয়াল পর্দা বা মেমব্রেন ইত্যাদি। এগুলো জয়েন্টকে শক্তি ও দৃঢ়তা প্রদান করে, জয়েন্টের তল বা সারফেসসমূহকে মসৃণ বা পিচ্ছিল রাখে। এছাড়া মেরুদ-ের দুটি হাড়ের মাঝে অবস্থিত ডিস্ক সক এবজরবার হিসেবে কাজ করে হাড়কে ক্ষয়ে যাওয়া রোধ করে। এই সব অস্থি বা জয়েন্টে প্রধানত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষয়, প্রদাহজনিত এবং অভ্যন্তরীণ পরিবর্তনের কারণে ব্যথা বেদনা সৃষ্টি করে মানুষের চলাচল কাজকর্মে বিঘœ ঘটায়। ঘাড়ে ব্যথা, চিকিৎসা ও পরামর্শ ঘাড়ের ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। মূলত ঘাড়ের মেরুদ-ে যে হাড় ও জয়েন্ট আছে তা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারের ফলে তাতে ক্ষয়জনিত পরিবর্তন ঘটে তার লিগামেন্টগুলো মোটা ও শক্ত হয়ে যায় এবং দুইটি হাড়ের মাঝে যে ডিস্ক থাকে তার উচ্চতা কমে এবং সরু হওয়া শুরু হয়। আবার অনেক সময় হাড়ের মাঝে দূরত্ব কমে গিয়ে পাশে অবস্থিত স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে ব্যথার জন্ম দিতে পারে। অনেক সময় স্নায়ু রজ্জু সরু হয়ে যেতে পারে। ফলে ঘাড় ব্যথা ও নড়াচড়া করতে অসুবিধাসহ মাথাব্যথা কিংবা ব্যথা হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে। দীর্ঘদিন এই ব্যথা অব্যাহত থাকলে ঘাড়ের মেরুদ-ের বিকৃতি বা স্পাইরাল ডিফারমিটি দেখা দিতে পারে। এই সমস্যাগুলোকে প্রকারভেদে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয় যেমনÑ সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস, সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসথোসিস, সারভাইক্যাল রিব, স্টিফ নেক, সারভাইক্যাল ইনজুরি ইত্যাদি। লক্ষ্মণ : সাধারণত এই সমস্ত রোগী ঘাড়ের ব্যথাসহ ঘাড় নড়াচড়া করা এবং হাতে ঝিন ঝিন অনুভব করার অসুবিধার কথা বর্ণনা করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে হাতে শক্তি কমে যাওয়াসহ হাতের আঙ্গুলের বোধশক্তির তারতম্যের কথা বলতে পারে। ব্যথা ঘাড় হতে মাথার দিকে উঠতে পারে। চিকিৎসা : এই রোগের চিকিৎসার উদ্দেশ্য হলো ব্যথা কমানোর পাশাপাশি ঘাড়ের স্বাভাবিক নড়াচড়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে আনা, ঘাড়ের মাংসপেশীর শক্তি বৃদ্ধি করা, ঘাড় বা স্পাইনের সঠিক পজিশন বা অবস্থা সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া এবং যে সকল কারণে পুনরায় ঘাড় ব্যথা হতে পারে তা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করে সেভাবে চলার চেষ্টা করা। ব্যথা কমানোর জন্য সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধের পাশাপাশি থেরাপি চিকিৎসা এইসব রোগে অত্যন্ত কার্যকরী। বিশেষ করে পদ্ধতিগত ব্যায়াম যেমনÑ হাত দিয়ে মাথার বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে ঘাড়ের মাংসপেশী শক্ত করে, দুই কাধ একত্রে উপরে উঠানো, হাল্কা বালিশ ব্যবহার করা ইত্যাদি। থেরাপিতে বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে হিট চিকিৎসা, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, মেনিপুলেশন এবং প্রয়োজন হলে ট্রাকশন এ রোগের উপকারে আসে। ঘাড়কে অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া থেকে বিরত এবং সাপোর্ট দেয়ার জন্য অনেক ক্ষেত্রে সারভাইক্যাল কলার ব্যবহার, মাথার নিচে হাল্কা নরম বালিশ ব্যবহার করা ইত্যাদি। কোমর ব্যথার চিকিৎসা ও পরামর্শ বার্ধক্যজনিত বয়সে কোমর ব্যথার প্রধান কারণ হচ্ছে কোমরের হাড় ও ইন্টারভার্টিক্যাল ডিস্কের ক্ষয় এবং কোমরের মাংসপেশীর দুর্বলতা। কোমর ব্যথার রোগগুলোকে আমরা লো ব্যাক পেইন/লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস/ প্রোলাপস্্ ডিস্ক ইত্যাদি রোগ বলে থাকি। এই রোগের কারণ, প্রক্রিয়া ও চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় ঘাড় ব্যথা বা সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস এর অনুরূপ। তবে রোগীর শরীরের অবস্থান/পোশ্চার সঠিকভাবে রক্ষার গুরুত্ব দিলে অনেক ক্ষেত্রে কোমরের ব্যথা এড়ানো সম্ভব। শক্ত বিছানায় শোয়া, কাত হয়ে বিছানায় শুতে যাওয়া, ওঠা, ভারি জিনিস বহন বা তোলা পরিহার করা, নিয়মিত কোমরের ব্যায়াম করা এবং অসমতল জায়গায় চলাচল না করা ইত্যাদি। কোমরের ব্যায়ামের ভেতরে উল্লেখযোগ্য চিত হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাজ করে পিঠ দিয়ে বিছানায় চাপ দেয়া, একই অবস্থায় শুয়ে হাঁটু একত্রে এপাশ ওপাশ চাপ দেয়া, একই অবস্থায় শুয়ে এক পা এক পা করে হাঁটু ভাজ করে পেটের সঙ্গে চাপ দেয়া ইত্যাদি। কোমরের ব্যথার রোগীরা ব্যথানাশক ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ মোতাবেক শর্টওয়েভ, আলট্রাসাউন্ট, আই, একটি কোমরের ব্যায়াম ও হাইড্রোথেরাপি অর্থাৎ পানিতে সাঁতার কাটলে উপকার পেতে পারেন। স্কন্ধ অস্থি সন্ধি বা সোল্ডার জয়েন্টে ব্যথা, চিকিৎসা ও পরামর্শ স্কন্ধ অস্থি সন্ধি একটি জয়েন্ট। বয়স ও ব্যবহারজনিত কারণে এই সকল জয়েন্টের আশপাশের মাংসপেশী, টেন্ডন, লিগামেন্ট, ক্যাপসুল ও বার্সাতে প্রদাহ হতে পারে এবং রোগী জয়েন্ট নড়াচড়া করতে ব্যথা অনুভব করে, ঘাড়ের ব্যথা ও বুকের সার্জারির কারণেও এ জোড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা : এই রোগের চিকিৎসায় ব্যথা নিবারক ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে কার্যকরী ও প্রধান চিকিৎসা ব্যবস্থা হচ্ছে ফিজিওথেরাপি। ফিজিওথেরাপিতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিক্যাল যন্ত্রপাতি যেমন : শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, আইএফটি ব্যবহার করে ব্যথা কমানো যায়। ইলেক্ট্রোথেরাপির সঙ্গে সঙ্গে জয়েন্টের সচলতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম যেমন : পেন্ডুলার এক্সারসাইজ, মেইনপুলেশন, কৌশলগত ব্যায়াম করা উচিত। এ ছাড়া ফ্রোজেন সোল্ডার রোগীদের নিয়মিত সাঁতার কাটা ও ব্যবহারিক ব্যায়াম যেমন দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে হাত আস্তে আস্তে উপরে উঠানো, উপরে ঝুলানো পুলির মাধ্যমে দড়ির সাহায্যে হাত উপরে নিচে করা, তোয়ালে দিয়ে পিঠ মোছা ইত্যাদি। যে জোড়ার ব্যথা সে দিকে কাত হয়ে না শোয়া এবং জোড়ায় গরম শেক দেয়া ইত্যাদি উপদেশ মেনে চলতে হয়। অনেক সময় সোল্ডার জয়েন্টে ইনজেকশন প্রয়োগ করলেও ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। হাঁটুর ব্যথা, চিকিৎসা ও পরামর্শ হাঁটু মানুষের একটি বড় জয়েন্ট। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়সজনিত ক্ষয়ের জন্য হাঁটুর ভেতরের লিগামেন্ট, মিনিসকাস এবং হাড়ের প্রদাহজনিত পরিবর্তনের ফলে হাঁটুতে ব্যথার সৃষ্টি হয়ে চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি করে। এই রোগকে সাধারণ অস্টিও আর্থ্রাইটিস বলে বেশি পরিচিত। সাধারণত আঘাত, শারীরিক ওজন বৃদ্ধি, হরমোনজনিত সমস্যা এই রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। চিকিৎসা : ব্যথা নিবারক ওষুধ দীর্ঘদিন গ্রহণ করতে হয় বলে তাতে নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই এই রোগের উৎকৃষ্ট চিকিৎসা ব্যবস্থা হচ্ছে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পদ্ধতি। থেরাপিতে শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, কিংবা আইচ থেরাপি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। নিয়মিত সঠিকভাবে হাঁটুর চারপাশের মাংসপেশী শক্তি বর্ধন জাতীয় ব্যায়াম দেয়া হয়ে থাকে যাতে জয়েন্টের রেঞ্জ এবং মাংসপেশীর শক্তি বৃদ্ধি পায়। তবে কোন ক্রমেই এমন কোন কাজ বা ব্যয়াম করা ঠিক হবে না যাতে ব্যথা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া রোগীকে কিছু পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে যেমন : হাঁটু অতিরিক্ত ভাজ না করা, শরীরের ওজন স্বাভাবিক রাখা কিংবা অতিরিক্ত ওজন কমানো, হাঁটু কোন অবস্থায় পুরোপুরি ভাজ করা ঠিক হবে না। সেই ক্ষেত্রে তারা নামাজ পড়ার সময় চেয়ার এবং বাথরুম ব্যবহার করার সময় কমোড ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। তাই শীতে বাতের ব্যথা নিয়ে কষ্ট না পেয়ে যতদ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নিতে হবে এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যারা বাতের ব্যথায় ভুগছেন তারা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা ও পরামর্শে ভাল থাকতে পারেন। থেরাপি চিকিৎসা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন অত্যন্ত আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। চিকিৎসক আপনার রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিলে আপনি অবশ্যই বাতের কষ্ট থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন। পাশাপাশি নিম্নলিখিত পরামর্শ মাফিক চললেও বাতের ব্যথা থেকে অনেকাংশে লাঘব থাকা যায় : ১. ব্যথা বেশি হলে ৭ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিবেন। ২. নিয়মিত থেরাপি চিকিৎসা নিবেন। ৩. ব্যথার জায়গায় গরম/ঠা-া শেক দিবেন ১০-১৫ মিনিট। ৪. বিছানায় শোয়া ও ওঠার সময় যে কোন একদিকে কাত হয়ে হাতের ওপর ভর দিয়ে শোবেন ও উঠবেন। ৫. মেরুদ- ও ঘাড় নিচু করে কোন কাজ করবেন না। ৬. নিচু জিনিস যেমনÑ পিঁড়ি, মোড়া বা ফ্লোরে না বসে চেয়ারে পিঠ সাপোর্ট দিয়ে মেরুদ- সোজা করে বসবেন। ৭. ফোম ও জাজিমে না শুয়ে উঁচু শক্ত সমান বিছানায় শোবেন। ৮. মাথায় বা হাতে ভারি ওজন/বোঝা বহন নিষেধ। ৯. দাঁড়িয়ে বা চেয়ারে বসে রান্না করবেন। ১০. ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের নির্দেশমতো দেখানো ব্যায়াম নিয়মিত করবেন, ব্যথা বেড়ে গেলে ব্যায়াম বন্ধ রাখবেন। ১১. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, পেট ভরে খাওয়া নিষেধ, অল্প অল্প করে বার বার খাবেন। ১২. সিঁড়িতে ওঠার সময় ধীরে ধীরে হাতল ধরে উঠবেন। ১৩. ঝরণায় বা চেয়ারে বসে গোসল করবেন। ১৪. কোন প্রকার মালিশ করা নিষেধ। ১৫. দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না, ১ ঘণ্টা পর পর অবস্থান বদলাবেন। ১৬. শোবার সময় একটি পাতলা নরম বালিশ ব্যবহার করবেন। ১৭. বাইরে চলাফেরা করার সময় কোমরের বেল্ট ব্যবহার করবেন, শোবার সময় ও ব্যায়াম করার সময় অবশ্যই বেল্ট খুলে রাখবেন। ১৮. হাই হিলযুক্ত জুতা ব্যবহার করবেন না, নরম জুতা ব্যবহার করবেন। ১৯. ব্যথা তীব্র হলে উঁচু কমোডে বসে টয়লেট করবেন। ২০. চলাফেরায় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন ও রাস্তা এড়িয়ে চলবেন ও সামনের বা মাঝামাঝি আসনে বসবেন। ব্যথা কমে গেলে নিয়মিত সমতল জায়গায় কমপক্ষে ১ ঘণ্টা হাঁটুন। প্রফেসর মোঃ সফিউল্যাহ প্রধান পেইন ও ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিপিআরসি ২৯ প্রবাল হাউজিং, রিং রোড, আদাবর, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭১৬৩০৬৯১৩
×