ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে চার অস্ত্র ব্যবসায়ী ও তিন ডাকাত গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৫ নভেম্বর ২০১৬

রাজধানীতে চার অস্ত্র ব্যবসায়ী ও তিন ডাকাত গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর সবুজবাগ থেকে সাতটি গুলিভর্তি আগ্নেয়াস্ত্রসহ চার অস্ত্র ব্যবসায়ী এবং বাড্ডা থেকে ডাকাতির সময় দেশী অস্ত্রশস্ত্রসহ তিন ডাকাত পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। সবুজবাগ থেকে গ্রেফতারকৃতরা অস্ত্রগোলাবারুদগুলো রাজনৈতিক সন্ত্রাসী কর্মকা- চালানোর জন্য ঢাকায় এনেছিল কিনা সে বিষয়টি জানার চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃতদের দুই দিনের রিমান্ডে পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। রবিবার রাতে সবুজবাগ থানাধীন বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ ফেরদৌস ওরফে ফেদু (২৯), হুমায়ন কবীর ওরফে ঝনু (৪৩), মোঃ শহর আলী ওরফে লিটন ওরফে ভাঙ্গারী লিটন (২৭) ও মোঃ মানিক (২৮) নামে চার জনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৪টি সেভেন পয়েন্ট ৬৫ বোরের পিস্তল, ৩টি ওয়ান শূটার গান, ৮টি ম্যাগজিন ও ১৫ রাউন্ড তাজা বুলেট উদ্ধার হয়। ডিবি পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার স্নিগ্ধ আকতার জনকণ্ঠকে বলেন, উদ্ধারকৃত অস্ত্রগোলাবারুদের প্রকৃত মালিক আমিরুল। আমিরুল মূলত যশোর সীমান্তে অস্ত্র ব্যবসা করে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্রগোলাবারুদ, হত্যা, গুম, খুন, চাঁদাবাজিসহ বহু মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, যশোর জেলার বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অস্ত্রগোলাবারুদগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়। এরসঙ্গে ভারতের অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী চোরাচালান চক্রের সদস্যরাও জড়িত। এসব অস্ত্রগোলাবারুদ সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। অস্ত্রগুলো রাজধানীতে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়েছিল। এসব অস্ত্রের নানা ধরনের ক্রেতা রয়েছে। পেশাদার ছিনতাইকারী, খুনী, কন্ট্রাক্ট কিলিংয়ে জড়িত, ভাড়ায় চালানো ছাড়াও অনেক অসাধু রাজনৈতিক দলের নেতারাও এসব অস্ত্রগোলাবারুদ সংগ্রহ করে থাকে। এসব অস্ত্র কাদের কাছে বিক্রির কথা ছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃতরা অন্তত সাত বছর ধরে সীমান্ত দিয়ে অস্ত্রগোলাবারুদ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। এরমধ্যে ফেদু ঢাকায় রাতে প্রাইভেটকারযোগে ছিনতাইকারী চক্রের অন্যতম নেতা। চক্রটি রাতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় প্রাইভেটকার নিয়ে বসে থাকে। গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের মধ্যে সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে চক্রটি যাত্রীদের টার্গেট করে থাকে। বাহ্যিক দিক বিবেচনা করে যাত্রীর কাছে টাকা পয়সা বা ক্রেডিট কার্ড থাকতে পারে এমন যাত্রীদের টার্গেট করে। যাত্রীদের কৌশলে গাড়িতে তুলে অস্ত্রের মুখে যাত্রীর সঙ্গে থাকা টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। সেইসঙ্গে যাত্রীর কাছে থাকা ক্রেডিট কার্ডের গোপন পিন নম্বর মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে জেনে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নেয়। চক্রটি অনেক সময় ধনাঢ্য যাত্রীদের জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণও আদায় করে থাকে। ফেদু এ ধরনের বহু ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। তবে এখন পর্যন্ত ফেদুর হাতে কোন যাত্রী খুন হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেনি ফেদুসহ অন্যরা। এ ব্যাপারে ডিবির পূর্ব বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ নরুন্নবী জনকণ্ঠকে বলেন, গ্রেফতারকৃত ফেরদৌস, শহর আলী ও মানিক পেশাদার ছিনতাইকারী, অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। আর গ্রেফতারকৃত হুমায়ন কবীর আন্তঃজেলা অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের অপর সহযোগীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। চক্রটি দীর্ঘ দিন ধরেই অস্ত্রগোলাবারুদ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। উদ্ধারকৃত অস্ত্রগোলাবারুদগুলো রাজনৈতিক সন্ত্রাসীমূলক কোন কর্মকা- চালাতে ঢাকায় আনা হয়েছিল কিনা তা জানার চেষ্টা চলছে। এজন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। অপরদিকে রবিবার গভীর রাতে বাড্ডার আলিফনগর এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সাত ডাকাত বাড্ডা থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, আকতার, আতিকুল, আল আমিন, বাবু, সোহাগ, সিরাজ ও রুবেল। বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাসির হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ডাকাত। তাদের কাছ থেকে ২টি চাপাতি, একটি ছোরা, ২টি লোহার শাবল ও ২টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়।
×