ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৫ নভেম্বর ২০১৬

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বিশ্বব্যাংক

কাওসার রহমান, মারাকেশ, মরক্কো থেকে ॥ আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের উচ্চপর্যায়ের অধিবেশন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল এ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন। সম্মেলনে যোগ দিতে সোমবার বিকেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মারাকেশে এসে পৌঁছেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলও বেশ উজ্জীবিত। আশা করা হচ্ছে ধরিত্রী কন্যা শেখ হাসিনার উপস্থিতি জলবায়ু সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর কণ্ঠকে আরও সোচ্চার করবে। এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণাা দিয়েছে। সোমবার জলবায়ু সম্মেলনে ন্যাচারাল ডিজাস্টার এ্যান্ড গ্লোবাল পোভারটি রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা প্রদান এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পদ রক্ষায় বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে। এ ব্যাপারে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে। এ ব্যাপারে দৈনিক জনকণ্ঠের এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্বব্যাংকে লিড ইকোনমিস্ট স্টিফেন হেলগেট বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ শীর্ষ ১৭টি দেশের অন্যতম বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশের এই ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা সহায়তা দেব। কিভাবে এই ঝুঁকিপূর্ণ মানুষগুলোর জান ও সম্পদ রক্ষা করা যায় সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর জন রুমি বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ব্যাপারে আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে দুই বিলিয়ন ডলার প্রদান করা হবে। এই অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন কার্যক্রমে ব্যয় হবে। উল্লেখ্য, সোমবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বৈশ্বিক দারিদ্র্যতা বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উচ্চমাত্রার প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতিবছর ৫২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হচ্ছে। এর ফলে প্রতিবছর দুই কোটি ৬০ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যের সম্মুখীন হচ্ছে। প্রতিবেদনে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ১৭টি দেশের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকায়ও বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে মারাকেশ জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল বেশ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বিকেলে তিন দিনের সফরে মরক্কোর পর্যটন নগরী মারাকেশে এসে পৌঁছেছেন। তাকে রাজকীয় মরক্কো সরকার বিশেষ সম্মানের সঙ্গে বরণ করে নিয়েছে। মারাকেশে পৌঁছেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু সম্মেলনের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের ভূমিকা প্রসঙ্গে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। আজ সকালে সম্মেলনের হাইলেভেল সেগমেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি যোগদান ছাড়াও প্লেনারি অধিবেশনে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে ভাষণ দেবেন। পাশাপাশি তিনি কয়েকটি দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। বুধবার তিনি বাংলাদেশের উদ্দেশে মারাকেশ ত্যাগ করবেন। জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সমন্বয়কারী পরিবেশ ও বন সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আসায় আমরা বেশ উজ্জীবিত। আমাদের কার্যক্রম গতি সৃষ্টি হয়েছে।’ তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পক্ষে যে কয়টি সরকারপ্রধান সোচ্চার তার মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন। এবারের সম্মেলনেও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পক্ষে ধরিত্রী কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোচ্চার হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।’
×