ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশসহ আহত অর্ধশতাধিক, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ভাংচুর লুটপাট

নরসিংদীর গ্রামে দু’দলে সংঘর্ষ ॥ নিহত ৪

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৫ নভেম্বর ২০১৬

নরসিংদীর গ্রামে দু’দলে সংঘর্ষ ॥ নিহত ৪

নিজস্ব সংবাদদাতা, নরসিংদী, ১৪ নবেম্বর ॥ দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত হয়েছে। এ সময় চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত, ৬টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ১০ বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট হয়েছে। রায়পুরা উপজেলার দুর্গমচর এলাকা নীলক্ষা ইউনিয়নের আমিরাবাদ ও সোনাকান্দি গ্রামে সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, নীলক্ষা ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের সমর্থকরা সোমবার দুপুরে প্রতিপক্ষ ওই ইউনিয়নের পরাজিত ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হক সরকারের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এ সময় হক সরকার সমর্থক নূরে আলম (২০), ফারুক (২৫), ইব্রাহিম (২০) ও আলমগীর (২২) গুলিবিদ্ধ এবং প্রতিপক্ষ তাজুল ইসলাম সমর্থক জামাল মিয়া (২৩) টেঁটাবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরই জের হিসেবে সোমবার দুপুরে দু’পক্ষ টেঁটা লাঠি বল্লম দাসহ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিবদমান দু’গ্রুপের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া ও পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই আবদুল হক সরকারের সমর্থক আমিরাবাদ গ্রামের আলতাব আলীর পুত্র মানিক মিয়া (৪০), সোনাকান্দি গ্রামের আরব আলীর পুত্র খোকন (৩৫) একই গ্রামের মঙ্গল মিয়ার পুত্র মামুন (২৩) নিহত হয় এবং ঢাকা নেয়ার পথে আমিরাবাদ গ্রামের আবদুর ছালামের পুত্র শাজাহান (৪০) মারা যায়। এ ঘটনায় রায়পুরা থানার ওসি আজহারুল ইসলাম, পুলিশ কনস্টেবল জিল্লুরসহ ৪ পুলিশ সদস্য ও অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী গুরুতর আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ফরিদ মিয়া (৩৫), রাকিব (১৬) সিপন (১৮) টেঁটাবিদ্ধ শামিম (২০) টেঁটাবিদ্ধ রোজি বেগমকে (২৮) নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা পুলিশী গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছে। সোমবার বিকেলে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে স্বজনদের শোকের মাতম। শত শত মানুষ লাশ দেখতে নীলক্ষা ইউনিয়নের আমিরাবাদ ও সোনাকান্দি গ্রামে ভিড় জমাচ্ছে। নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে ওই গ্রাম দুটির বাতাস ভারী হয়ে পড়েছে। পুলিশের ভয়ে অনেকেই গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী জানায় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবারও যে কোন সময় আরও বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে। নরসিংদী পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৩০ গ্রামবাসীকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
×