ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জাকারিয়া স্বপন

অভ্যাস ৭॥ করাতটা ধার দাও

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

অভ্যাস ৭॥ করাতটা ধার দাও

॥ দ্বিতীয় পর্ব ॥ গত সপ্তাহে করাত ধার দেয়ার চারটি দিক নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। সেই চারটি দিক হলো- শরীরিক, আধ্যাত্মিক, মানসিক এবং সামাজিক বা আবেগ। ড. স্টিফেন কোভের লেখা ‘দি সেভেন হ্যাবিটস অব হাইলি ইফেক্টিভ পিপল’ বইটিতে যে সাতটি অভ্যাসের কথা বলা হয়েছে, তার সপ্তম অভ্যাসটি হলো ‘শার্পেন দি স’- বাংলায় আমি যাকে বলছি ‘করাতটা ধার দাও।’ আমরা প্রতিনিয়ত এমন সব কাজ নিয়ে ডুবে থাকি যে, কাজই আমাদের ঘিরে রাখে। কাজ থেকে বের হয়ে একটু নিজেকে রিফ্রেশ করে নিলে যে আরও ভালভাবে কাজটি করা যায়, তা আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না। আমরা ভাবি, ছুটি নেয়া বোধহয় একটি বিলাসিতা। কিন্তু আমরা বুঝতে পারি না, একজন খুবই পরিশ্রমী মানুষও ছুটি নিয়ে থাকেন এবং নিত্যদিন এমন সব বাড়তি কিছু করেন যার ফলে তার করাতটা ধারালো থাকে। এই নীতিটাকে বলা হচ্ছে ভারসাম্যভাবে নিজেকে নবায়ন করা। সপ্তম এই অভ্যাসটি মূলত অন্য ছয়টি অভ্যাসকে কাজ করতে সাহায্য করে। এই অভ্যাসটি না থাকলে একটা সময়ে গিয়ে আপনার বাকি অভ্যাসগুলো ভেঙ্গে পড়বে। আপনাকে শিখতে হবে, কিভাবে নিজেকে সব সময় তরতাজা এবং কর্মক্ষম রাখতে হয়, কিভাবে নিজেকে নতুন রাখতে হয় এবং এটাকে আপনার অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। শারীরিক দিক ছোটবেলা থেকেই আমরা জানি, শরীর হলো আমাদের সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ। স্কুল থেকেই আমরা বাচ্চাদের এটা শিখিয়ে দেই। নিজেরাও শিখেছি। কিন্তু এই যে শরীর নামের যন্ত্রটি আমরা পেয়ে গেছি, আসলেই কি এটার ঠিকমতো সার্ভিসিং আমরা করি? নাকি, বিপদে পড়লে তখন আমরা নড়েচড়ে বসি? শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য যাবতীয় পন্থা আমাদের শেখানো হয়। পুষ্টিযুক্ত খাবার খেতে হবে, খাবারের মাত্রা যেন ঠিক থাকে, ভাল বিশ্রাম নিতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ইত্যাদি। আমাদের যদি চারটি কোয়ার্ডেন্টের কথা মনে থাকে, তাহলে ব্যায়াম হলো দ্বিতীয় কোয়ার্ডেন্ট (জরুরী নয়, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ) এবং এটা আমরা বেশিরভাগ মানুষ নিয়ম মেনে করি না, কারণ এটা কোন জরুরী বিষয় নয়। আর যেহেতু এটা আমরা নিয়মিত করি না, তখন এটা আমাদের কোয়ার্ডেন্ট-১-এ নিয়ে যায় (জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ)। জীবন বাঁচানোর জন্য তখন আমরা অনেক কিছুই করে থাকি। তবে, ততদিনে বিষয়টি অনেক দেরি হয়ে যায়। ওটা তখন একটা বিশাল ক্রাইসিসে পতিত হয়। আমাদের অবহেলা আমাদের বিপদের দিকে ঠেলে দেয়। এটাই প্রকৃতির ধর্ম। আপনি এটা মানেন আর না-ই মানেন, বিষয়টি মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মতোই অবস্থান করে। বেশিরভাগ মানুষই মনে করেন যে, ব্যায়াম করার মতো প্রয়োজনীয় সময় আমাদের নেই। তবে এটা নিঃসন্দেহে ভুল ব্যাখ্যা। ব্যায়াম করতে কতক্ষণ সময় লাগে? আমরা বলছি, প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে ছয় ঘণ্টা। আরও কম করতে চাইলে, দিনে ত্রিশ মিনিট- এক দিন বাদে বাদে। আমাদের সপ্তাহের ১৬২-১৬৫ ঘণ্টা থেকে এটুকু বের করা কি খুব কঠিন? এর ফলাফল যে কতটা দীর্ঘমেয়াদী সেটা হয়ত আমরা বুঝতে পারি না বলেই এই অল্প সময়টুকুও আমরা দিতে চাই না। দেখা যাবে, এর চেয়ে অনেক বেশি সময় আমরা টিভি দেখে, কিংবা ফেসবুক করে কাটিয়ে দেই (যা জরুরীও নয়, গুরুত্বপূর্ণও নয়)। এই ছোট কাজটি করার জন্য আপনাকে বিশেষ কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করারও প্রয়োজন নেই। আপনি যদি জিমন্যাশিয়ামে যেতে পারেন, সেখানকার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে তো বাড়তি লাভ। কিন্তু আপনার করাত ধার দিয়ে রাখার জন্য সেগুলোর প্রয়োজন নেই। আপনি নিজের বাসাতেই এমন সব পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন, যা শরীরকে দীর্ঘ স্থায়িত্ব দেবে, নমনীয়তা বাড়াবে এবং শক্তি দেবে। শরীরে দীর্ঘ স্থায়িত্ব আসে এ্যারোবিক ব্যায়াম থেকে, কার্ডিওভাস্কুলারের কর্মদক্ষতা থেকেÑ আপনার হার্টের সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ করার ক্ষমতা থেকে। কিন্তু ঝামেলা হলো, আপনি সরাসরি হৃদযন্ত্রের কোন পেশীকে ব্যায়াম দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। এটাকে প্রভাবিত করা যায় শরীরের অন্যান্য পেশী দিয়ে, যেমন পায়ের পেশী। সে কারণে দ্রুত হাঁটলে, দৌড়ালে, সাইকেল চালালে, সাঁতার কাটলে, জগিং করলে হৃদযন্ত্র ভাল থাকে। আপনাকে সুস্থ ধরা হবে যদি আপনার হার্টবিট মিনিটে ১০০ বারে পৌঁছাতে পারেন এবং এভাবে ত্রিশ মিনিট চলতে পারেন। এটা হলো সর্বনিম্ন মাত্রা। নমনীয়তা (ফ্লেক্সিবিলিটি) আসে স্ট্রেচিং ধরনের ব্যায়াম থেকে। যে কোন ধরনের এ্যারোবিক ব্যায়ামের আগে এবং পরে স্ট্রেচিং করতে বলা হয়ে থাকে। এর ফলে আপনার শরীরের পেশীগুলোকে বড় ধরনের ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত করে। এর মাধ্যমে শরীরে লেকটিক এ্যাসিড নিঃসরণ হয়। ফলে শরীরে কোন ক্ষত তৈরি হয় না। আর শক্তি আসে পেশীর ব্যায়াম করলে। যে কোন ধরনের ওজন ওঠা-নামা করালে পেশী শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আপনি কতটা পেশী তৈরি করবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার কাজের ধরনের ওপর। আপনার শারীরিক শক্তির কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখলে, সেখানে পেশী জরুরী। আবার সারাদিন বসে থেকে ব্রেনের কাজ করলে, সেখানে ততটা পেশী লাগবে না। যারা ব্যায়াম করেন, তাদের একটি বিষয় জানা থাকাটা জরুরী। আপনার ব্যায়ামের আসল কাজটি হয় শেষ মুহূর্তে। আপনি যখন নিজের ওপর চাপ তৈরি করতে পারবেন, আগের সীমাকে ভাংতে পারবেন, তখনই আসলে আপনার শরীর নতুন টার্গেটের জন্য প্রস্তুত হয়। তাই ব্যায়ামের শেষের সময়টুকু খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনার করাত ধার দেয়ার প্রথম কাজটিই হলো শরীরকে ঠিক রাখা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা। এর ফলে আপনি দীর্ঘদিন কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই কাজ করতে পারবেন, জীবনকে উপভোগ করতে পারবেন এবং প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন। তবে নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস তৈরি করা একটি কঠিন কাজ, বিশেষ করে যারা মোটেও ব্যায়াম করেন না। তারা বিভিন্ন ধরনের অজুহাতে ব্যায়ামটাকে এড়িয়ে যান। আবার কেউ কেউ মাঠে নেমেই দ্রুত ফল পাওয়ার আশায় গতি বাড়িয়ে দেন। তাতে উল্টো ফল হতে পারে। আপনার শরীরে ব্যথা হতে পারে, ক্ষত তৈরি হতে পারে, এমনকি দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিও হতে পারে। সবচেয়ে ভাল হলো, ধীর গতিতে শুরু করা এবং আপনার প্রয়োজন এবং নিজের ভাললাগা থেকে একটা জায়গায় সেটাকে নিয়ে যাওয়া। তাহলেও ভাল ফল পাওয়া যাবে। আপনি যদি অনেক দিন ধরে ব্যায়াম না করে থাকেন, তাহলে আপনার শরীর আপনাকে বাধা দেবে। নতুন ব্যায়ামকে সে সহজভাবে নেবে না। সে পরিবর্তন চাইবে না। আপনি নিজেও প্রথম প্রথম এটাকে পছন্দ করবেন না। এমনকি আপনি পুরো বিষয়টিকে ঘৃণাও করতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি প্রো-এ্যাক্টিভ হয়ে ওঠেন এবং যে কোন পরিস্থিতিতেও হার না মানেন, তখনই ফল পেতে শুরু করবেন। ব্যায়াম করতে যাবেন, বৃষ্টি শুরু হলো। আপনি নিজেকে বললেন, ঠিক আছে, আমার শরীরের শক্তির সঙ্গে সঙ্গে মনের শক্তিকে আরেকটু বাড়াতে হবে। ব্যাস, তা হলেই জিতে গেলেন। এই অভ্যাসটুকু গড়তে পারলে, দেখতে পাবেন আপনার বিকেলগুলো আর ক্লান্ত মনে হচ্ছে না, সারাটা দিন বেশ সুন্দরভাবেই কাজগুলো করতে পারছেন। আধ্যাত্মিক দিক আধ্যাত্মিক বিষয়টি নিয়ে আমাদের অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে। কিন্তু আপনি যদি নিজের করাত ধার দিয়ে রাখতে চান, তাহলে আপনার জীবনে আধ্যাত্মিক দিকটাকে শান দিয়ে রাখতে হবে। এটা হলো আপনার দ্বিতীয় অভ্যাসটির সঙ্গে জড়িত (অভ্যাস ২ : শুরুটা করুন শেষটাকে মাথায় রেখে)। আধ্যাত্মিক দিকটা হলো একদম আপনার ভেতরের বস্তু, আপনার কেন্দ্রবিন্দুতে তার অবস্থান, আপনার ভ্যালু সিস্টেমের ওপর আপনার কমিটমেন্ট। এটা প্রত্যেকের জীবনের সবচেয়ে ব্যক্তিগত একটি বিষয় এবং সবাই যার যার জায়গা থেকে তার মতো করেই বিষয়টি পালন করে থাকে। এই জগতে অনেক মানুষ মেডিটেশন করেন। এতে করে তারা নিজেদের ভেতরটার সঙ্গে নিজেকে কানেক্ট করতে পারেন। নিজের সঙ্গে ওই যোগসূত্রটা খুবই প্রয়োজন। অনেকেই নামাজ পড়েন; নিজেকে স্রষ্টার মাধ্যমে কানেক্ট করতে পারেন। যারা পূজা করেন, ধ্যান করেন, নির্জন পরিবেশে চলে গিয়ে নিজেকে যুক্ত করেন- তারা তাদের ভ্যালু সিস্টেমকে প্রতিমুহূর্তে জাগিয়ে রাখেন। তাদের নিজেদের যে ভ্যালু রয়েছে, সেগুলোকে ঝালাই করে নেন। ব্যক্তিগত জীবনে আমি যখন কোন কিছু মনোযোগ দিয়ে পড়ি, লিখতে বসি, মেডিটেশন করি, গান শুনি- নিজেকে নিজের সঙ্গে কানেক্ট করতে পারি, যা আমাকে শক্তি দেয়, চারপাশের যাবতীয় বিভ্রম থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে, পরচর্চা করা কিংবা আমার সম্পর্কে কারও খারাপ মন্তব্য পাত্তা না দিতে শক্তি যোগায়। আমি নিজের কাছে আরও বেশি পরিষ্কার হয়ে ধরা দেই। নিজের কাছে নিজেকে অনেক বেশি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মনে হয় এবং বাইরের কোন কিছু তেমন একটা স্পর্শ করে না। আপনার জীবনে কি এমন কখনও হয়েছে যে, ফেসবুকে আপনার ওয়ালে কিংবা পোস্টে কেউ একজন একটা বাজে মন্তব্য করে চলে গেছে এবং ওটার একটা কঠিন জবাব দেয়ার জন্য সারাটা দিন ব্যয় করেছেন? সেই লোকটার কিছু হয়নি; কিন্তু আপনার একটা দিন চলে গেছে। মূলত সেই মানুষটা আপনাকে ড্রাইভ করল। আপনি যদি আধ্যাত্মিক দিকে খুব শক্তিশালী থাকতেন, তাহলে এমনটা হতো না। আপনি খুব সহজেই এটাকে হ্যান্ডেল করতে পারতেন। একটা বাজে লোকের মন্তব্যে আপনার দিনটা নষ্ট হতো না। আপনি আসলে ভেতরে এতই ঠুনকো যে, বাইরের কেউ আপনাকে খুব সামান্যতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। খুব ভাল সাহিত্য কিংবা সঙ্গীত কাউকে একই শক্তি দিতে পারে। যারা গানের ভেতর কিংবা একটি ভাল বইয়ের ভেতর নিজেকে ডুবিয়ে দিতে পারেন, তারা খুবই ক্ষমতাশালী মানুষ। তারা আশপাশের তেলাপোকার মতো মানুষকে আর গোনায় আনেন না। খুব সহজেই এগুলোকে এড়িয়ে চলা যায়, যেমনটা আপনি এড়িয়ে চলতে পারেন রাস্তার কুকুরটিকে। কেউ কেউ প্রকৃতির কাছাকাছি গিয়ে একইভাবে নিজেকে যুক্ত করতে পারেন। গভীর অরণ্য, সমুদ্র সৈকত, বালুচর, পাহাড়ের চূড়াÑ ইত্যাদি পরিবেশে অনেকেই নিজেকে নিজের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন। এই শহরের কোলাহল থেকে আপনি যদি বের হয়ে যেতে পারেন এবং কোন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কিংবা পরিবেশে চলে যেতে পারেন, তা আপনাকে নতুন জীবন দিতে পারে। আমরা প্রকৃতির সন্তান। আমাদের ওপর প্রকৃতির দারুণ প্রভাব। তাই বৃষ্টি, আর আকাশের মেঘ আমাদের কোথায় যেন নিয়ে যায়। প্রকৃতির সঙ্গে যারা কানেক্ট করতে পারেন, তারাও ওখান থেকে ফিরে এসে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে পারেন। কিছুদিন পরেই আমাদের চারপাশের বিষয়গুলো আপনাকে আবারও পুরনো জায়গায় নিয়ে যাবে। তখন আপনাকে আবারও ফ্রেশ হওয়ার জন্য প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে হবে। আপনার ভেতরের শান্তিকে ফিরিয়ে আনতে বার বার ফিরে যেতে হবে প্রকৃতির কাছে। পৃথিবীতে যে মানুষটির ভেতর কোন আধ্যাত্মিক বিষয় নেই, তার জীবনে গভীরতা নেই বললেই চলে। এই গ্রহের যাবতীয় সফল মানুষের ভেতর অধ্যাত্মবাদ ছিল এবং আছে। আমরা অনেক সময় মনে করি যে, এগুলো কবি-সাহিত্যিকদের বিষয়, শিল্পীদের বিষয়, বাউলদের বিষয়। কিন্তু তারা হয়ত জানেন না যে, প্রতিটি সংকল্পবদ্ধ মানুষই ভেতরে ভেতরে একটি কঠিন আধ্যাত্মিক জগতে বসবাস করেন। যে কারণে আমাদের জাগতিক অনেক তুচ্ছ বিষয় তাদের ছুঁয়ে যায় না। তারা তাদের ক্ষমতাকে পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেন। এই বিষয়ে অসংখ্য মানুষের বক্তব্য পাওয়া যাবে। তবে এখানে মার্টিন লুথারের একটি কোটেশন ব্যবহার করা যেতে পারে- ‘আজকে আমাকে কত কিছুই না করতে হবে, আমাকে আরও একটা ঘণ্টা হাঁটুকে দিতে হবে।’ ইবাদত করাকে তিনি অন্যদের মতো সাদামাটা হিসেবে নেননি। তাঁর কাছে এটা ছিল শক্তির উৎস, তাঁর শক্তিকে ছেড়ে দেয়া এবং কয়েকগুণ করে ফিরিয়ে নেয়া। আপনার মনের গভীরে শান্তি লাগবে। আর সেই শান্তি আনতে পারে ধ্যান। যারা ধ্যান করে, তারা সারাটা দিন, তার ভেতরই থাকে। সকালে যদি আপনি ধ্যান করেন, তাহলে পুরোটা দিন নিজেকে সেই ধ্যানের জায়গাটাতেই রেখে দিন। যে কাজেই ব্যস্ত থাকেন না কেন, আপনার ভেতরে রয়ে গেছে সেই ধ্যানের স্থানটিÑ চরম শান্তির এক ঠিকানা। নিজেকে ওখানেই ধরে রাখুন। মানুষের ভাল ভাবুন, অপরের জন্য ভাল কিছু করার চেষ্টা করুন। আপনার মতো সুখী আর কেউ হবে নাÑ অন্তরে, বাইরে। সেটাই দিয়ে যাবে আপনাকে অপার শক্তি, যা আপনি কখনই শেষ করতে পারবেন না। ধ্যান, ধ্যান এবং ধ্যান করুন। ১২ নবেম্বর ২০১৬ [email protected]
×